৯০ দশকের জনপ্রিয় নায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ। ২৩ বছর হলো তিনি মারা গেছেন। তবে দীর্ঘ এ সময় নায়েকের মৃত্যু আত্মহত্যা না অন্য কোন কারণে হয়েছে তা অজানাই রয়ে গেছে। আদালতের আদেশে এখন মামলাটির তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
সংস্থাটির পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, ‘মামলাটি অনেকদিনের হওয়ায় সাক্ষী মারা গেছেন। অনেকের সন্ধান মিলছে না। আবার আলামতও নেই। এ কারণে তদন্তও বেশি দূর এগুতে পারেনি। বলাও যাচ্ছে না কবে শেষ করবো। কেননা তদন্তে এসব উপাদান লাগে। যেগুলো মামলার ডকেটেও নেই।’
ঢাকাই সিনেমার নায়কদের নিয়ে কথা বলতে গেলেই একজন নায়কের ছবি চোখের সামনে ভেসে উঠবেই। সেই মানুষটি আর কেউ নন, তিনি হলেন সালমান শাহ। নব্বই দশকের সবচেয়ে সুন্দর ও মেধাবী সেই চলচ্চিত্রশিল্পীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৯৬ সালের এইদিনে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি। তাকে হারানো ২৩ বছর হয়ে গেল। চলচ্চিত্রের মানুষেরা বলেন, ‘আজও কেউ পূরণ করতে পারেননি সালমান শাহের শূন্যস্থান।’
এখনও চলচ্চিত্রের আলোচনা হলেই উদাহরণ স্বরূপ সামনে আসে তার নামটি। এই সময়ের নায়কদের কাছে তাদের প্রিয় নায়কের নাম জানতে চাওয়া হলে অকপটেই তারা বলেন প্রিয় সালমান শাহের নাম।
নাম নিয়েই যখন কথা, জেনে নেয়া যাক তার মূল নাম ছিল শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। চলচ্চিত্রে এসে নাম নেন ‘সালমান শাহ’। ১৯৭০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবার নাম কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মা নীলা চৌধুরী। তিনি ছিলেন পরিবারের বড় ছেলে।
সালমান শাহ ১৯৯২ সালের ১২ আগস্ট বিয়ে করেন। তার স্ত্রীর নাম সামিরা। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর চিরবিদায় নেন তিনি। হারিয়েও যেন হারাননি তিনি। কোটি ভক্তের হৃদয়ে সোনালী অক্ষরে লেখা আছে তার নাম।
যেদিন সালমান শাহের মৃত্যু হয় সেই দিন তার মৃত্যুতে সারাদেশে শোক নেমে এসেছিল। শোক সইতে না পেরে অনেক ভক্ত আত্মাহুতির পথও বেছে নিয়েছিলেন। এরপর অনেক উত্থান-পতনের মধ্যদিয়ে গেছে বাংলা চলচ্চিত্রশিল্প।
তার সঙ্গে সবচেয়ে বেশি ছবি করা নায়িকা শাবনূর আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘সালমান বেঁচে থাকলে আমরা দুজনে উত্তম-সুচিত্রার মতো হতে পারতাম।’
মাত্র চার বছরের চলচ্চিত্র জীবনে সালমান শাহ খুব বেশি ছবিতে অভিনয় না করলেও যতটা করেছেন, মন দিয়ে করেছেন। দর্শকদের জন্য করেছেন। তাই তো দর্শকরা আজও তাকে ভুলতে পারেননি। আজও সালমান যেখানে চিরনিদ্রায় শায়িত সেখানে তার ভক্তরা নীরবে চোখের জল ফেলেন। আজও টেলিভিশনের পর্দায় তার অভিনীত ছবি প্রদর্শন হলে হুমড়ি খেয়ে পড়েন দর্শকরা।
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি স্মরণ করেছে তাকে। শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান জানান, ‘সালমান শাহের মৃত্যুবার্ষিকী ৬ সেপ্টেম্বর। এই মাসে আমাদের আরও ছেড়ে গেছেন আনোয়ার হোসেন, আব্দুল মতিনসহ আরও কয়েকজন চলচ্চিত্রের মানুষ। তাদের সবাইকে স্মরণ করে ৭ সেপ্টেম্বর এফিডিসিতে কোরআন খতম করানো হবে সকালে ও বিকেলে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে।’
শিল্পী সমিতির আয়োজন ছাড়াও টেলিভিশন চ্যানেলগুলোও নানা অনুষ্ঠান প্রচার করছে সালমান শাহের মৃত্যু দিবসে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন