রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাস্থ্য

সারভাইক্যাল ক্যান্সার

ডাঃ মোঃ ফজলুল কবির পাভেল | প্রকাশের সময় : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

সারভাইক্যাল ক্যান্সার আমাদের দেশে খুব পরিচিত রোগ । তবে বিভিন্ন পদক্ষেপ, টিকা এবং সচেতনতার ফলে বর্তমানে এর প্রকোপ অনেক কমে এসেছে। মেয়েদের জরায়ুর নিচের অংশকে বলা হয় সারভিক্স বা জরায়ু মুখ। আর এই সারভিক্সে যদি ক্যান্সার হয় তবে তাকে বলা হয় সারভাইক্যাল ক্যান্সার বা জরায়ু মুখের ক্যান্সার। সারা বিশ্বের নারীদের মধ্যেই এই ক্যান্সার দেখা যায়। বাংলাদেশে মেয়েদের স্তন ক্যান্সারের পরেই এই ক্যান্সার বেশি হতে দেখা যায় । তবে আশার কথা হলো ভ্যাক্সিনের মাধ্যমে এই জটিল রোগ অনেকটা প্রতিরোধ করা সম্ভব। আর প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব। তাই এই রোগ সম্পর্কে সবার ধারণা থাকা জরুরী। 

এই ক্যান্সারের বিভিন্ন কারণ বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন। এসব কারণের মধ্যে আছে ঃ
১। হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (ঐচঠ)
২। হার্পিস সিমপ্ল্যাক্স ভাইরাস (ঐঝঠ-২)
৩। কম বয়সে যৌন জীবন শুরু করলে
৪। একাধিক যৌন সঙ্গী থাকলে
৫। অপরিচ্ছন্ন থাকলে
৬। কম বয়সে বাচ্চা হলে
৭। অধিক সন্তান নিলে
৮। ধূমপান করলে
৯। দীর্ঘদিন পিল খেলে
১০। বিভিন্ন যৌন রোগ থেকেও এই ক্যান্সার হতে পারে।
তবে সব কারণ কিন্তু বিজ্ঞানীরা এখনও বের করতে পারেননি ।
সারভাইক্যাল ক্যান্সারে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা যায় । এর মধ্যে আছেঃ
১। সাদা স্রাব। সাধারনত: দুর্গন্ধযুক্ত হয়।
২। অনিয়মিত রক্তস্রাব
৩। সহবাসের পর রক্তস্রাব
৪। সহবাসে ব্যাথা
৫। তলপেটে ব্যাথা
৬। অনেক সময় ক্যান্সার দূরে ছড়িয়ে পড়ে । তখন বিভিন্ন উপসর্গ থাকে।
সারভাইক্যাল ক্যান্সারে অনেক সময় কোন উপসর্গ নাও থাকতে পারে।
প্রাথমিক অবস্থায় এই ক্যান্সার ধরা পরলে শতভাগ ভাল করা সম্ভব। তবে আমাদের দেশে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একেবারে শেষ পর্যায়ে ধরা পড়ে । তখন আর তেমন কিছু করার থাকেনা। প্রাথমিক অবস্থা নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন স্ক্রিনিং পদ্ধতি আছে। তারমধ্যে প্যাপস স্মেয়ার এবং ভায়া অন্যতম। উপরোক্ত লক্ষণ দেখা দিলে সাথে সাথেই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া উচিত। দেরীতে ডায়াগনোসিস হলে অপারেশন, রেডিওথেরাপি এবং কেমোথেরাপি দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। কখনো আবার বিভিন্ন পদ্ধতি একসাথে দিয়ে চিকিৎসা করা হয়।
ক্যান্সারের চিকিৎসা জটিল ও ব্যায়বহুল। তাই প্রতিরোধের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। নিয়মিত চেকআপের মধ্যে থাকতে হবে। প্রতিরোধক হিসাবে টীকা দেয়া যায়, যা দিনদিন জনপ্রিয় হচ্ছে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। ধর্মীয় অনুশাসন কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। গাইনির বিভিন্ন দক্ষ ডাক্তার আমাদের দেশেই আছে। কোনরকম লক্ষণ দেখা দিলে সাথে সাথেই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। কোন অবহেলাই এক্ষেত্রে কাম্য নয়।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন