শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

শেরপুরে এবার মোবাইল চুরির অপবাদে আওয়ামী লীগ নেতা কর্তৃক কিশোরকে উলঙ্গ করে গাছে বেঁধে নির্যাতন

পুলিশ সুপারের নির্দেশে গ্রেফতার ২

শেরপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৬:০৭ পিএম

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে এবার মোবাইল চুরির অপবাদে মনিরুল ইসলাম ওরফে পুতুরা (১৪) নামে এক ছিন্নমূল কিশোরকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে উলঙ্গ করে গাছে বেঁধে মধ্যযুগীয় নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়েছে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আলী হোসেন ও তার লোকজন। ওই ঘটনায় ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে ইসহাক (৩০) ও রবিউল (২০) নামে ২ যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে ৭ দিনের পুলিশ রিমাণ্ডের আবেদনসহ গ্রেফতারকৃত ২ যুবককে আদালতে সোপর্দ করা হলে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহসিনা হোসেন তুশি আগামী রবিবার রিমাণ্ড শুনানীর তারিখ ধার্য করে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ওই নির্যাতনের ঘটনায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নালিতাবাড়ী উপজেলার পশ্চিম রাজনগর বন্ধুপাড়া গ্রামের নির্যাতনের শিকার কিশোর মনিরুল ইসলাম ওরফে পুতুরার পিতা ও মাতার মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ায় তার মা ঢাকায় একটি গার্মেন্টেসে কাজ করেন। খোঁজ রাখেন না পিতা। ফলে ওই কিশোর একই এলাকায় তার নানা হতদরিদ্র মকবুল হোসেনের আশ্রয়ে বড় হচ্ছিল। ২২ সেপ্টেম্বর রবিবার স্থানীয় আব্দুস সালাম হাজীর বাড়ি থেকে একটি মোবাইল সেট চুরি হয়। ওই ঘটনায় আব্দুস সালামের ভাই ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা আলী হোসেন, তার ছেলে ইছাহাক, ভাতিজা রবিসহ অন্যান্য লোকজন মনিরুল ইসলাম ওরফে পুতুরাকে সন্দেহ করে এবং মনিরুলকে রাস্তা থেকে ধরে পড়নের লুঙ্গি খুলে কাঁধে ঝুলিয়ে টেনে-হিঁচড়ে সালামের বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে তাকে ওই বাড়ির নারিকেল গাছে পেছনে হাতমোড়া দিয়ে রশিতে বেঁধে শারীরিক নির্যাতন চালায়। একপর্যায়ে কিশোর মনিরুল অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে খবর পেয়ে অনেক সুপারিশ করে তাকে নানার বাড়ির লোকজন ছাড়িয়ে নিয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এরপর পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিশোরকে দেখতে যান এবং তার চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন। এসময় পুলিশ সুপারের নির্দেশে নির্যাতনের শিকার কিশোরের নানা মকবুল হোসেনকে বাদী করে নালিতাবাড়ী থানায় আলী হোসেন, ইসহাক ও রবিউলের নামসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা গ্রহণ করে পুলিশ। পরে রাতে অভিযান চালিয়ে ইসহাক ও রবিউলকে গ্রেফতার করা হয়। এদিকে নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে ৩ দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে এখন ২৫ সেপ্টেম্বর নিজ বাড়ীতে এসে নিজবাড়ীরর বেডে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে ওই কিশোর।

এ ব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বশির আহমেদ বাদল জানান, মোবাইল চুরির সন্দেহে গাছে বেঁধে কিশোরকে নির্যাতনের ঘটনায় থানায় নিয়মিত মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ২ যুবককে গ্রেফতার করে রিমাণ্ডের আবেদনসহ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ভিডিও ক্লিপ দেখে অন্য আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন