নেপালিদের পালাতে সহযোগিতার অভিযোগে দুই সদস্য বরখাস্ত
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেছেন, নেপালিদের পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগে ভিডিও ফুটেজে দেখা পুলিশের দুই সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা অনুসন্ধানে তদন্তের জন্য ঊর্ধ্বতনদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। একইভাবে পুলিশ সদস্যদের কারো বিরুদ্ধে ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকার প্রমাণ মিললে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির সদর দফতরে নিজ কার্যালয়ে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) কার্যনির্বাহী কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কমিশনার এসব কথা বলেন।
এদিকে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা নকলমুক্ত রাখা নিয়ে এক সভায় কেন্দ্র ইনচার্জরা শুধু অ্যানালগ মোবাইল ফোন রাখতে পারবেন বলে তিনি জানান।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, নেপালিদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করার যে ভিডিও ফুটেজ দেখা গেছে সেখানে পুলিশের দুই সদস্যের আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে। যদিও তারা নানাবিধ কথা বলে বিষয়টি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তারা দায়িত্ব পালনের জন্যই সেখানে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন। তবুও বিষয়টি তদন্তের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ডিএমপি কমিশনার বরখাস্তদের নাম না বললেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বরখাস্তকৃত ওই দুই সদস্য হচ্ছেনÑ ডিএমপিতে কর্মরত এএসআই মিঠু ও রমনা থানার কনস্টেবল দীপঙ্কর চাকমা। মতবিনিময় সভার শুরুতে নতুন ডিএমপি কমিশনারকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান ক্র্যাবের কার্যনির্বাহী কমিটির নেতৃবৃন্দ। এরপর পরিচয় পর্ব শেষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ক্র্যাবের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি আবুল খায়ের এবং ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মনিরুল ইসলাম কথা বলেন। এ সময় ক্র্যাবের সহসভাপতি মিজান মালিক, সাধারণ সম্পাদক দীপু সারোয়ার, যুগ্ম সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক দুলাল হোসেন, দফতর সম্পাদক শহিদুল ইসলাম রাজীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
হোলি আর্টিজানের প্রসঙ্গ টেনে কমিশনার বলেন, হোলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলার পর আমাদের দেশের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো প্রায়ই মুখ থুবড়ে পড়ছিল। সন্ত্রাসীদের লক্ষ্যই ছিল দেশের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করা। কিন্তু আমরা সন্ত্রাসীদের শনাক্ত করে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে পেরেছি। পাশাপাশি দেশে একটি আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে পেরেছে পুলিশ। এখন নির্বিঘেœ বিদেশীরা দেশে আসছে। দেশের পুলিশ সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করতে না পারলে দেশ ৫০ বছর পিছিয়ে যেত।
পুলিশের ওপরে হামলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পরপর পুলিশের ওপর পাঁচটি হামলা হয়েছে। এ হামলার বিষয়ে আমরা একেবারেই অন্ধকারে ছিলাম। আমাদের চৌকস পুলিশ অফিসাররা এ সন্ত্রাসীদের পুরো গ্যাংকে শানাক্ত করতে পেরেছে। ইতোমধ্যে দু’জন গ্রেফতার হয়েছে। বাকি দু-একজনকেও দ্রæত গ্রেফতার করা যাবে।
মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু হবে
আগামী ১১ অক্টোবর শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সারাদেশে একযোগে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে। পরীক্ষা নকলমুক্ত রাখতে কেন্দ্রে সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার বলেন, মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় কোনো সমস্যা হবে না। সিনিয়র অফিসাররা মাঠ তত্ত¡াবধান করবেন। ভর্তি পরীক্ষা স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু করতে সভায় বেশ কিছু ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পুলিশ ও মোবাইল কোর্টের ব্যবস্থা অন্যতম।
তিনি বলেন, কেন্দ্র ইনচার্জ ব্যতীত কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবে না। ইনচার্জ শুধু অ্যানালগ ফোন রাখতে পারবেন। তল্লাশি কাজে পুলিশের পাশাপাশি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা থাকবে। সভায় স্বাস্থ্য অধিদফতরসহ বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ ও ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রের প্রতিনিধি, ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন