বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গোলটেবিল আলোচনায় ব্যাংকিং খাতে ক্রাউড ফান্ডিংয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, বিশ্বস্ততা ক্রাউড ফান্ডিংয়ের মূল ভিত্তি। কিন্তু এক দিনে এ বিশ্বস্ততা তৈরি করা সম্ভব নয়। কোন কারণে বিশ্বস্ততা নষ্ট হলে অপব্যবহারের সুযোগ তৈরি হতে পারে। বাংলাদেশে ক্রাউড ফান্ডিং ব্যবস্থায় সফলতা পেতে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
গতকাল রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘ক্রাউড ফান্ডিং অ্যান্ড ইটস ইমপ্লিকেশনস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলা হয়েছে। সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএম’র মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মহা. নাজিমুদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএম’র প্রফেসর এবং পরিচালক (গবেষণা, উন্নয়ন ও পরামর্শ) ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী। তিনি তার বক্তব্যে ব্যাংকিং খাতে ক্রাউড ফান্ডিংয়ের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করেন।
ক্রাউড ফান্ডিং হলো বিকল্প অর্থায়ন ব্যবস্থা। ইন্টারনেটের মাধ্যমে এক বড় জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে অর্থসংগ্রহ করে ফান্ড গঠন করা হয়। ছোট ও বড় প্রকল্পের জন্য বিপুল সংখ্যক মানুষের কাছ থেকে অর্থ নেওয়া এ পদ্ধতিতে। এসব ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম -ফেসবুক, টুইটার, লিঙ্কডিন এবং ব্লগ কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএম-এর সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। চার সদস্যের একটি গবেষণা দল এ গবেষণা সম্পন্ন করেন।
বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন বিআইবিএম’র নির্বাহী কমিটির সভাপতি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান। উপস্থিত ছিলেন বিআইবিএম’র ড. মোজাফফর আহমদ চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক প্রফেসর ড. বরকত-এ-খোদা; বিআইবিএম’র সুপারনিউমারারি প্রফেসর এবং পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধূরী; বাংলাদেশ ব্যাংক-এর প্রাক্তন নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএম’র সাবেক সুপারনিউমারারি প্রফেসর ইয়াছিন আলি।
এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, প্রকল্পের শুরুতে অর্থায়ন ঘাটতি মেটাতে ক্রাউড ফান্ডিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এ ধরণের অর্থায়নে কিছু ঝুঁকি এবং সমস্যা রয়েছে। এমনকি ক্রাউড ফান্ডিং পোর্টালে হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি রয়েছে। তিনি বলেন, ক্রাউড ফান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে মূল বিষয় বিশ্বস্ততা। যা খুব সহজে অর্জন করা সহজ নয়। এখনও এ বিষয়ে কোন রেগুলেশন তৈরি করা হয়নি। তবে এখনই উপযুক্ত সময় ক্রাউড ফান্ডিং বিষয়ে নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো।
মহা. নাজিমুদ্দিন বলেন, ভবিষ্যতে ক্রাউডফান্ডিং ব্যাংক ফান্ডের একটি উৎস হিসাবে পরিগণিত হতে পারে। উন্নত দেশগুলো অনেক দক্ষতার সাথে এই উৎসটি ব্যবহার করে বহু প্রতিষ্ঠান বা স্থাপনা সফলতার সাথে তৈরি করেছেন। এমনকি বাংলাদেশেও কিছু স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান ক্রাউডফান্ডিং এর মাধ্যমে প্রত্যায়ন করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ক্রাউড ফান্ডিংয়ের মতো নতুন অর্থায়ন ব্যবস্থা যাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে সেদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন