বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) ব্যাংকের অকুপেশনাল স্ট্রেস এবং জব পাফরমেন্স শীর্ষক সেমিনারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উচ্চ লক্ষ্যমাত্রা চাকরীর ক্ষেত্রে পেশাগত চাপের অন্যতম প্রধান কারণ। এ লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রয়েছে- আমানত সংগ্রহ, ঋণ বিতরণ এবং অর্থ আদায়। ব্যাংককর্মীদের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ যৌক্তিক লক্ষ্যমাত্রা দিতে হবে। শীর্ষ ব্যবস্থাপনাকে ব্যবসা টেকসই করতে যৌক্তিক লক্ষ্যমাত্রা দিতে হবে।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘অকুপেশনাল স্ট্রেস অ্যান্ড জব পারফরমেন্স অব ইমপ্লয়ীজ ইন ব্যাংকস: বাংলাদেশ পারসপেকটিভ’ শীর্ষক সেমিনারে উপস্থাপিত গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এস এম. মনিরুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএম-এর পরিচালক (গবেষণা, উন্নয়ন এবং কন্সালটেন্সী) ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী। তিনি সেমিনারের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
উপস্থিত ছিলেন বিআইবিএমের ড. মোজাফফর আহমদ চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ- খোদা; পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি প্রফেসর হেলাল আহমদ চৌধুরী; বিআইবিএমের সাবেক সুপারনিউমারারি প্রফেসর মো. ইয়াছিন আলি; সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফ; রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ এবং ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. মাহবুব-উল-আলম। সেমিনারে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংককর্মীদের চাকরীক্ষেত্রে চাপ কমানোর বিষয়ে সব সময় ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। এরই মধ্যে মাতৃত্বকালীন ছয় মাসের ছুটি নিশ্চিতকরণ, ডে-কেয়ার সুবিধা প্রদানের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে। এটি চাকরীক্ষেত্রে চাপ কমানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে।
ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, কিছু কর্মীর ওপর শীর্ষ ব্যবস্থাপনার নির্ভরশীলতা অনেক সময় চাপ সৃষ্টি হয়। এটিকে পরিকল্পনার মাধ্যমে সঠিক ব্যবস্থাপনা করে কমিয়ে আনতে হবে।
ড. বরকত-এ-খোদা তার বক্তব্যে ব্যাংকিং খাতে কর্মীদের ওপর চাপ কমাতে সঠিক মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার ওপর জোরারোপ করেন।
হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংককর্মীদের ওপর অযৌক্তিক লক্ষ্যমাত্রা দেয়া যাবে না। দক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিতে হবে। একই সঙ্গে প্রমোশন এবং প্রণোদনার বিষয়ে সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকলে মানবিক ব্যাংকিং খাত গড়ে তোলা সম্ভব।
ইয়াছিন আলি বলেন, ব্যাংক কর্মীদের সন্তুষ্ট রাখতে পারলে পারফরমেন্স ভালো হবে।
আনোয়ারুল আজিম আরিফ বলেন, ব্যাংকিং খাতে তীব্র প্রতিযোগিতা এবং ঠিকে থাকার লড়াই থেকে ব্যাংক কর্মীদের ওপর এমন চাপ সৃষ্টি হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য কারও ওপর অযৌক্তিক চাপ দেওয়া যাবে না। এতে খুব বেশি লাভ হয় না।
মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনায় ভালো পরিকল্পনা থাকলে চাপ কমানো সম্ভব। সবাইকে আমানত সংগ্রহের লক্ষ্য বেঁধে দেওয়া হয়। এটি কোনভাবেই সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। এ ধরণের কাজে আলাদা টিম রাখতে হবে।
মো. মাহবুব-উল-আলম বলেন, ব্যাংকিং খাতে সঠিক মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব হলে কর্মীদের ওপর কোন ধরণের চাপ তৈরি হবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন