ভিটামিন ও মিনারেলের অভাবের কারণে আমাদের মুখ ও জিহ্বায় নানাবিধ সমস্যা দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে মুখে কোন আলসার বা রোগ দেখা দিলেই যে ভিটামিন প্রয়োগ করতে হবে তা কিন্তু ঠিক নয়। সবার আগে মুখের রোগটি কি তা নির্ণয় করতে হবে এবং কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা প্রদান করতে হবে। ভিটামিনের অভাবের কারণে যদি মুখে ঘা দেখা দেয় তাহলে জানতে হবে কোন ভিটামিনের ঘাটতি রয়েছে। আমাদের দেশে প্রায়ই মুখস্ত কিছু ভিটামিন সবাই সেবন করেন যা ঠিক নয়।
ভিটামিন ‘বি’ এর অভাবজণিত মুখের সমস্যা ঃ ভিটামিন বি১২ এর অভাবে মুখও জিহ্বায় যেসব সমস্যা হয় সেগুলো হলো ঃ- (ক) জিহ্বায় প্রদাহ বা গ্লসাইটিস। (খ) অ্যংগুলার স্টোমাটাইটিস বা ঠোঁটের কোনায় ঘা। (গ) বার বার মুখের আলসার। (ঘ) ওরাল ক্যান্ডিডোসিস। (ঙ) জিহ্বায় ক্ষত। (চ) মুখের মিউকাস মেমব্রেন ফ্যাকাসে হয়ে যায়।
ভিটামিন ‘বি২’ এর অভাবজণিত মুখের সমস্যা ঃ (ক) মুখের কোনায় ঘা বা অ্যাংগুলার চিলাইটিস।
(খ) মুখ ও জিহ্বার আবরণের প্রদাহ। (গ) মুখের আলসার। (ঘ) ফাটলযুক্ত লাল ঠোঁট। (ঙ) এট্রফিক ফিলিফরম প্যাপিলা।
ভিটামিন ‘বি৩’ বা নিয়াসিন এর অভাবজণিত সমস্যা ঃ পেলেগ্রা ছাড়া-(ক) লাল ও ব্যথাযুক্ত মুখের মিউকোসা। (খ) বেশী লালা নিঃসরণ। (গ) ইন্টারডেন্টাল প্যাপিলার ব্যাথা এবং আলসার। (ঘ) অ্যাংগুলার চিলাইটিস বা ঠোঁটের কোনায় ঘা।
ভিটামিন ‘বি৬’ বা পাইরিডক্সিন এর অভাবজণিত মুখের সমস্যা ঃ (ক) চিলাইটিস বা ঠোঁটের প্রদাহ। (খ) জিহ্বার প্রদাহ হতে পারে।
ভিটামিন ‘বি৯’ বা ফলিক এসিড এর অভাবজণিত মুখের সমস্যা ঃ (ক) মুখের আলসার। (খ) জিহ্বায় ফোলাভাব।
ভিটামিন ‘ডি’ এর অভাবজণিত মুখের সমস্যা ঃ ভিটামিন ‘ডি’ ক্যালসিয়ামের সাথে কাজ করে থাকে হাড়ের মান ও শক্তি বজায় রাখার জন্য। ভিটামিন ‘ডি’ এর অভাবে মুখের চোয়ালের ফ্রাকচারের ঝুকি বেড়ে যায়। এছাড়া পেরিওডন্টাল রোগ হতে পারে। ছোট বেলায় ভিটামিন ‘ডি’ এর অভাব হলে তা দাঁতের গঠনে বিঘœ ঘটাতে পারে। দাঁত দেরীতে উঠে। দাঁতের এনামেলে ত্রুটি দেখা দেয়। এনামেলে ক্ষয় দেখা যায়।
ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবজণিত মুখের সমস্যা ঃ ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবে মুখের কোনায় আলসার শুকাতে দেরী হয়।
ভিটামিন ‘সি’ এর অভাবজণিত মুখের সমস্যা ঃ (ক) মাড়ি ফুলে যেতে পারে। (খ) মাড়ির রং পরিবর্তিত হয়। (গ) দাঁত ধীরে ধীরে নড়ে যেতে পারে। (ঘ) যতœ না নিলে পেরিওডন্টাইটিস হয়ে দাঁত পড়ে যেতে পারে।
ভিটামিন ‘কে’ এর অভাবজণিত মুখের সমস্যা ঃ ভিটামিন ‘কে’ রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে থাকে। (ক) মাড়ি থেকে রক্তপাত হতে পারে বিশেষ করে দাঁত ব্রাশ করার সময়। (খ) দাঁত তোলার পর রক্ত জমাট বাঁধে না বা সমস্যা হয় অর্থাৎ দীর্ঘ সময় লাগতে পারে।
মিনারেলস এর অভাবজণিত মুখের সমস্যা ঃ জিংকের অভাবের কারণে- (ক) জিংকের অভাবের কারণে বার্নিং মাউথ সিনড্রোম হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে জিংকের অভাবজণিত রোগীদের জিংক প্রয়োগের পর বার্নিং মাউথের প্রকোপ কমে গেছে। (খ) মুখের স্বাদের তারতম্য হতে পারে। (গ) মুখের স্বাদ নষ্ট হতে পারে।
আয়রণের অভাবজণিত মুখের সমস্যা ঃ (ক) মুখ ও জিহ্বার জ্বালাপোড়া। (খ) মুখের ছত্রাক সংক্রমন। (গ) জিহ্বা লাল এবং ফুলে যেতে পারে। (ঘ) মুখের অভ্যন্তরে ঘা এবং টিস্যু ফ্যাকাসে বর্ণ ধারণ করতে পারে। (ঙ) মুখর স্বাদ নষ্ট হতে পারে।
মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ
মোবাইলঃ ০১৮১৭৫২১৮৯৭
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন