বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

নুসরাত হত্যায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের বাড়ির চিত্র

ছাগলনাইয়া (ফেনী) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০১৯, ৮:৪২ পিএম

নুসরাত হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের বাড়িতে কান্নার রোল এখনও থামেনি। আত্মীয় স্বজনরা সান্তনা দিতে তাদের বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন। আসামিদের একাধিক স্বজনের দাবি এই রায়ে তারা ন্যায় বিচার পাননি। ফাঁসির আদেশের পরও তারা দাবি করেন নুসরাত আত্মহত্যা করেছে। অন্যায়ভাবে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়েছে। কেউ কেউ মহান আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েছেন। একাধিক আসামির স্বজনরা জানিয়েছেন আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে আপিলের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। তারা আশা করেন উচ্চ আদালতে তারা ন্যায় বিচার পাবেন।শুক্রবার সকালে মামলার প্রধান আসামি সাবেক অধ্যক্ষ ফাঁসির দ-প্রাপ্ত এসএম সিরাজ উদ দৌলার আহম্মদপুর বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রীকে পাওয়া যায়নি। আত্মীয় স্বজনরা বিলাপ করছেন। তার সঙ্গে তার আপন ভাগ্নিও ফাঁসির দ-প্রাপ্ত হয়েছেন।বাড়ির লোকজন দাবি করেন, সিরাজ উদ দৌলা ছোট বেলা থেকে মেধাবী ছিল। তার নৈতিক চরিত্র নষ্ট হওয়ার কারণে আজকে পুরো পরিবার ধ্বংস হয়ে গেল।ফাঁসির দ-প্রাপ্ত নুর উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নূর উদ্দিনের দিনমজুর পিতা অচেতন অবস্থায় শুয়ে আছেন। তার মা বিলাপ করে করে কাঁদছেন আর আত্মীয় স্বজনরা সান্ত¡না দিচ্ছেন। তিনি নিজে ক্ষুদ্র কুটির শিল্পী। ওড়া, কোরা, খাঁচি ও খাঁচা তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে বড় আশা নিয়ে সন্তানদের পড়ালেখা করাচ্ছেন। আল্লাহ তার সব স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছেন। ফাঁসির দ-াদেশের পরও তিনি তার ছেলেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।দ-প্রাপ্ত শাহাদাত হোসেন শামীমের বাড়িতে গিয়েও একই দৃশ্য দেখা গেছে। তার মাকে আত্মীয় স্বজনরা সান্ত¡না দিচ্ছে। তার মাও বিলাপ করে কাঁদছে।পৌর কাউন্সিল মাকসুদ আলমের বাড়ি সোনাগাজী বাজারে অবস্থিত। স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে থাকেন ফেনী শহরের ভাড়া বাসায়। বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ভাই-বোনেরা হাউমাউ করে কাঁদছে। স্বজনরা সান্ত¡না দিচ্ছে।তার ভাই মাইন উদ্দিন রুবেল জানান, আমার ভাই ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসির দ-াদেশ পেলেন। আমরা হাইকোর্টে আপিল করব।সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়েরের বাড়িতেও দেখা গেছে স্বজনদের ভিড় ও মায়ের কান্নার রোল।তার পিতা জানান, আমার ছেলে নির্দোষ ছিল। আমি হাইকোর্টে আপিল করব। অনেক স্বপ্ন নিয়ে ছেলেকে বড় করেছিলাম।জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেনের বাড়িতেও স্বজনদের কান্নার রোল দেখা গেছে। তার মাকে স্বজনরা সান্ত¡না দিচ্ছেন।পিতা রহমত উল্লাহ জানান, এখন আর কি করব? যা হওয়ার হয়ে গেছে। আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে আপিল করব।হাফেজ আব্দুল কাদেরের বাড়িতে বসত ঘরের চার পাশে পাকা দেয়াল। ঘরে বসে মা কাঁদছেন। স্বজনরা তাকে সান্ত¡না দিচ্ছেন। বড় আশা করে সন্তানকে হাফেজ বানিয়েছিলেন। ছেলের এই করুণ পরিণতির কথা শুনে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন মা।প্রভাষক আবছার উদ্দিনের ভাড়া বাসায় গিয়ে দেখা গেছে আরেক হৃদয় বিদারক দৃশ্য। ২৫ বছর বয়সী স্ত্রী দুই সন্তান নিয়ে বুক চাপড়িয়ে বিলাপ করছে। আত্মীয় স্বজনরা তাকে সান্ত¡না দেয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি জানান নুসরাত তার প্রিয় ছাত্রী ছিলেন। তার কাছে প্রাইভেট পড়তেন। তাকে অন্যায়ভাবে মামলায় জড়িয়ে ফাঁসির দ- দেয়া হয়েছে।উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে চম্পা ওরফে শম্পার বাড়িতেও দেখা গেছে হৃদয় বিদারক দৃশ্য। দরিদ্র রিক্সা চালক পিতা আর তার মা গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদছেন। সে সিরাজ উদ দৌলার আপন ভাগ্নি। আপিল আর জরিমানার টাকা জোগাড়েরও সামর্থ্য নেই তাদের। কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না।আব্দুর রহিম শরীফের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে হৃদয় বিদারক দৃশ্য। বাবা-মা কাঁদছেন। স্বজনরা সান্ত¡না দিচ্ছেন। হাইকোর্টে আপিল করবেন। হাইকোর্টে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশা করেছেন তারা মামা আইয়ূব খান।ইফতেখার উদ্দিন রানার বাড়িতে মা-বাবা কাঁদছেন। বাড়ির লোকজনদের চোখে মুখে হতাশার চাপ। তার পিতা জানান হাইকোর্টে আপীল করবেন।ইমরান হোসেন ওরফে মামুনের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে মা ও বাবা গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদছেন। মামারা ও স্বজনরা সান্ত¡না দিচ্ছেন।মহিউদ্দিন শাকিলের বাড়িতে গিয়েও দেখা গেছে হৃদয় বিদারক দৃশ্য। মা ও বোনেরা গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদছে। স্বজনরা সান্ত¡না দিচ্ছেন। পিতা সৌদি আরব প্রবাসী।মোহাম্মদ শামীমের মা-বাবা বিলাপ করে কাঁদছে। ফাঁসির দ-াদেশের পরও তাদের দাবি শামীম নির্দোষ ছিল। হাইকোর্টে আপিল করে ন্যায় বিচার পাবেন।উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ফাঁসির দ-প্রাপ্ত রুহুল আমিনের বাড়িতে গিয়েও দেখা গেছে অন্যরকম দৃশ্য। তার স্ত্রী, সন্তান, পিতা-মাতা ও ভাই বোনেরা থাকেন আমেরিকায়। বাড়িতে স্বজনরা বিলাপ করে কাঁদছে।এক ভাই আমেরিকা প্রবাসী আবুল কাসেম ছুটিতে দেশে আছেন গত কয়েক মাস। স্বজনরা তাকে সান্ত¡না দিচ্ছেন। তিনি দাবি করেন বিচারক কোন আইনে সবাইকে ফাঁসির আদেশ দিলেন আমার বোধগম্য নয়। কারণ সবাইতো সমান অপরাধী নয়। আমার ভাই নির্দোষ ছিলেন। তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই মামলায় জড়ানো হয়েছিল এবং অন্যায়ভাবে সাজা দেয়া হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
kkk ২৬ অক্টোবর, ২০১৯, ৯:৫৭ এএম says : 0
Good Justice
Total Reply(0)
parvez ২৯ অক্টোবর, ২০১৯, ১১:৫০ এএম says : 0
who did the crime if everyone is innocent ?
Total Reply(1)
mohammad Sirajullah ১ নভেম্বর, ২০১৯, ৩:৫৮ এএম says : 4
Crime was committed by ZEEN. According to every ones statement, Victims parents should be hanged for bringing her to this world and now giving trouble to these innocent heros. All the defendants should be exonerated by awarding Swadhinota Puroskar and Nobel Prizes. Their next 7 generations should be given some Government Awards. We should have a statue of the Principal Sirajud Doula in front of Dhaka Shahid Minar, Then the relatives of these murderers will be happy.
নূরুল্লাহ ৩০ অক্টোবর, ২০১৯, ৩:৩৩ পিএম says : 0
একটি মেয়েকে পুড়িয়ে হত্যার অপরাধকে ছোট করে দেখা ঠিক নয়। বিচারের আদর্শ কায়েম হোক।
Total Reply(0)
Abdul Matin ৩০ অক্টোবর, ২০১৯, ৩:৪৭ পিএম says : 0
রিপোর্ট পরে মনে হচ্ছে সবাই নির্দোষ, প্রশ্ন হলো তাহলে দোষী কে ?? উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে চম্পা ওরফে শম্পা, চিন্তা করা যায় কত্ত বড় নাম ?
Total Reply(0)
Anwar Hossain ৩১ অক্টোবর, ২০১৯, ১০:২১ পিএম says : 0
It was great announcement by the Juge
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন