‘দুর্নীতি একটি গভর্নেন্স ইস্যু। আমরা সমন্বিতভাবে সরকারি পরিষেবা ব্যবস্থাপনায় উন্নয়নে চেষ্টা করছি। এ ক্ষেত্রে কমিশন বহুমাত্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।’-দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এসব কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিগত তিন বছরে কমিশনের ১৬৪ জন কর্মকর্তাকে অনুসন্ধান, তদন্ত ও প্রসিকিউশনের ওপর প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে। আপনাদের এ সহযোগিতা বাংলাদেশের দুর্নীতি দমনে কমিশনের সক্ষমতা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট ও স্টেট ডিপার্টমেন্টের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআইয়ের সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের জন্য অভিপ্রায় ব্যক্ত করে পত্র দিয়েছে। আমরা আশা করি, এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হলে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র আরও প্রসারিত হবে।
তিনি বলেন, এফবিআইয়ের দক্ষ ও চৌকস কর্মকর্তারা বাংলাদেশে এসে দুদকের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে দুদক হয়তো প্রশিক্ষকদের লোকাল হসপিটালিটির ব্যবস্থা করতে পারে। তদন্ত ও প্রসিকিউশনে অভিজ্ঞ রিসোর্স পার্সনদের মাধ্যমে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে চায় কমিশন।
দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, টেকসই উন্নয়নের প্রতিটি লক্ষ্য তরুণ প্রজন্মকে ঘিরে। এর ১৬ নং গোলের মাধ্যমে দুদকের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। দুর্নীতি মুক্ত, আইনের শাসন, মানসম্মত শিক্ষা সবই তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে অপরিহার্য। মানিলন্ডারিং, সন্ত্রাসে অর্থায়ন, অপরাধীদের গতিবিধি, দুর্নীতির ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিরোধ করার জন্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চায় কমিশন। এ ক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে উন্নতমানের ফরেনসিক ল্যাব স্থাপনে আপনারা সহযোগিতা করতে পারেন।
প্রতিনিধি দলটি দুদক চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চান, দুদকের ৩০ শতাংশ মামলায় খালাস পাওয়ার কারণ কী দুর্বল তদন্ত না কি দুর্বল প্রসিকিউশন অথবা অন্য কিছু? জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আপনার ধারণা হয়তো সবগুলোই সত্য। তবে বর্তমানে কমিশন তদন্ত এবং প্রসিকিউশন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ব্যাপক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিয়েছে। কমিশনের মামলায় সাজার হার এক সময় মাত্র ২২ শতাংশে নেমে এসেছিল, যা বর্তমানে প্রায় ৭০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কমিশন প্রায় ২ শতাধিক মানিলন্ডারিং মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলার ১৬টি বিচারিক আদালতে রায় হয়েছে। প্রতিটি মামলায় আসামিদের সাজা হয়েছে।
প্রতিনিধি দলের অপর এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কমিশন শুধু চুনোপুঁটিদের ধরছে না, রাঘব বোয়ালদের ধরছে। অনেক উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আরও অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। অপরাধীদের আইনের মুখোমুখি হতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন