পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গ্রামীণ জনপদে তৈরি হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন এক উপশহর। উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের লোন্দা গ্রামে বিরামহীনভাবে চলছে এ প্রকল্পের কাজ। ইতোমধ্যে ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
পটুয়াখালী ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্থ ২৮১টি পরিবার এ উপশহরে পাচ্ছে মাথা গোজার ঠাঁই। ২০২০ সালের জুনে ক্ষতিগ্রস্থদের আধুনিক এ উপশহরে পুনর্বাসন নিশ্চিত করেই শুরু হবে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কাজ, এমনটাই জানিয়েছেন নির্মাণ প্রতিষ্ঠান আরপিসিএল।
জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলের জেলা পটুয়াখালী ও বরগুনাকে ঘিরে ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ অঞ্চল নির্মাণের ধারাবাহিকতায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নির্মিত হচ্ছে ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। দেশিয় আরপিসিএল ও চীনের নরিনকো কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে নির্মিত এ বিদ্যুৎ প্লান্টের জন্য উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের লোন্দা গ্রামে অধিগ্রহণ করা হয়েছে ৯১৫ একর জমি। এতে সরাসরি ক্ষতির মুখে পড়ে ২৮১টি পরিবার। বসতভিটা হারানো এসব পরিবারের পুনর্বাসনে ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৯ একর জমির ওপড় আবাসন প্রকল্পের কাজ শুরু করে সরকারের বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আরপিসিএল (রুরাল পাওয়ার কম্পানি লিমিটেড)।
প্রতিষ্ঠান সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে এ পুনর্বাসন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এ টাইপ ও বি টাইপের ২৮১টি ঘরের প্রতিটিতে থাকছে বেড রুম, ডাইনিং, রান্নাঘর ও বাথরুম। এর মধ্যে ২৬১টি গৃহ হচ্ছে ১ হাজার স্কয়ার ফিটের এবং ২০টি ১২শ’ স্কয়ার ফিট আয়তনের। প্রতি ১০টি পরিবারের জন্য থাকছে একটি আঙিনা। রয়েছে বড় আকারের পুকুর। এ পুকুরেই থাকবে দু’টি ওয়াটার বাইক। নিরাপদ পানির ব্যবস্থাসহ ১১ হাজার স্কয়ার ফিটের মসজিদ, কমিউনিটি ক্লিনিক কাম সাইক্লোন সেন্টার, কারিগরি প্রশিক্ষণ বিদ্যালয়, কাঁচা বাজার, মিনি স্টেডিয়াম, কবরস্থান, শপিং সেন্টার, নির্দিষ্ট কবরস্থান, সৌন্দর্য বর্ধনকারী ফোয়ারা এবং সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সুবিধাসহ পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা। থাকছে গাড়ি পার্কিংসহ সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার নিশ্চিয়তায় ৪টি ওয়াচ টাওয়ার।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মূল বিদ্যুৎ প্লান্টের কাজ শুরু হওয়ার আগেই ক্ষতিগ্রস্থ এসব পরিবারের পুনর্বাসনে সকল নাগরিক সুবিধা সম্বলিত দৃষ্টিনন্দন আবাসন নিশ্চিত করায় খুশি জমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যরা। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্য দুলাল গাজী বলেন, এখন গ্রামের মধ্যেই হচ্ছে শহর। একই এলাকার গৃহিনী রিনা বেগম জানান, ভূমি অধিগ্রহণে স্বামী, শশুরের বসত ভিটা হারিয়ে কষ্ট, হতাশায় ভুগছিলাম। টিনের ঘর ছেড়ে এখন পাকা ঘর পাচ্ছি।
আরপিসিএল’র সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, নির্মাণাধীন এ পুনর্বাসন প্রকল্পটির এখন পর্যন্ত নামকরণ করা হয়নি। ইতোমধ্যে প্রকল্পের ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ২০২০ সালের জুনে শতভাগ কাজ শেষ হলে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের হাতে ঘরের চাবি তুলে দিবেন প্রধানমন্ত্রী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন