শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বিশ্ব গণমাধ্যমে বাবরি মসজিদ মামলার রায়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর, ২০১৯, ১১:২৪ এএম

বাবরি মসজিদ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়কে হিন্দুদের পক্ষ সমর্থন ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বড় হিসেবে উল্লেখ করেছে বিশ্ব গণমাধ্যম। বিশ্বের অধিকাংশ গণমাধ্যমই গুরুত্ব দিয়ে খবরটি ছেপেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউজ ইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট, ব্রিটেনের গার্ডিয়ান, রয়টার্স, ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি ও কাতারের আল-জাজিরার মতো অধিকাংশ গণমাধ্যম রায়টি নিয়ে একই সুরে কথা বলেছে।

এ রায়ে ভারতে হিন্দু-মুসলমান সংঘাত আরও বলবে বরে অধিকাংশ গণমাধ্যম বলছে। কয়েক দশকের আইনি লড়াইয়ের পর শনিবার ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে প্রায় পাঁচশ বছর আগে স্থাপিত বাবরি মসজিদের জমি মন্দির নির্মাণে হিন্দুদের দিতে বলা হয়েছে। আর মুসলমানদের জন্য আলাদা পাঁচ একরের জমি বরাদ্দ দিতে ভারতীয় সরকারকে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট।

বিশ্বের অধিকাংশ সংবাদপত্র এ রায়ের খবর প্রথম পাতায়ই দিয়েছে। তারা বলছে, মোদীর এ জয় তার হাতকে আরও শক্তিশালী করবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দ্য নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে, উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় কয়েক শতাব্দীর বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট হিন্দুদের পক্ষে রায় দিয়েছে।

আর্টিকেলটির লেখক এ রায়কে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্য বড় ধরনের জয় উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, মোদি ও তার অনুসারীরা ভারতকে নতুন করে ধর্মনিরপেক্ষ ভিত্তি থেকে সরিয়ে হিন্দুত্বের পথে এগিয়ে নেয়ার যে চেষ্টা করছেন, তার পক্ষে এটি বড় জয়।

ওয়াশিংটন পোস্ট লিখেছে, মুসলমানদের অভিযোগ থাকার পরেও জমিটি হিন্দুদের পুরস্কার দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্য এটি অনেক বড় জয়।

হিন্দু জাতীয়বাদীরা এবং ক্ষমতাশীল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দীর্ঘদিন ধরেই অযোধ্যায় রামের মন্দির তৈরির চেষ্টা করে আসছে উল্লেখ করেছে ওয়াশিংটন পোস্ট।

তাদের প্রতিবেদনে ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র ‍হিসাবে উল্লেখ করেছে এবং এটি ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক দেশ নয় বলে মন্তব্য করেছে।

ব্রিটেনের বিখ্যাত দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকাও লিখেছে, অযোধ্যার বিতর্কিত জমি নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রধানমন্ত্রী মোদির জন্য বিশাল জয়।

মোদি ভারতের নির্বাচনে জয়লাভের মাত্র ছয়মাস পরই সুপ্রিম কোর্টের এ রায় তাকে আরেকটি বড় জয় এনে দিয়েছে উল্লেখ করেছে পত্রিকাটি।

গার্ডিয়ান লিখেছে, মোদি ও তার বিজেপি সরকারের হিন্দু জাতীয়তাবাদী কর্মসূচির মূল মনোযোগের বিষয়টিই ছিল অযোধ্যায় রাম মন্দির ফের নির্মাণ করা।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদালতে রায় হওয়ার সময়কার পরিস্থিতি বর্ণনায় তাদের সংবাদদাতারা বলেছেন, রায় ঘোষণার সময় তারা আদালতকক্ষের বাইরে জয় শ্রীরাম ধ্বনি শুনতে পেয়েছেন।

হিন্দুরা এ রায়কে খুবই ভারসাম্যপূর্ণ বলেছে এবং মুসলিমরা সন্তুষ্ট হয়নি বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

রায় নিয়ে হিন্দু-মুসলিম এ বিভক্তির ইঙ্গিত দিয়ে আগামী দিনগুলোতে ভারত যেন সম্প্রীতির পথেই থাকে এমন আশা প্রকাশ করেছে বিবিসি।

সিএনএন তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায়ে হিন্দুদেরকেই বিতর্কিত জায়গায় মন্দির নির্মাণ করতে দেয়া হয়েছে।

‘যে জায়গা হিন্দু-মুসলিম উভয়ই দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে এসেছে এবং ১৯৯২ সালে যেখানে থাকা মসজিদ উগ্র হিন্দুরা গুঁড়িয়ে দিয়েছে- সেখানেই আদালত রামমন্দির নির্মাণ করতে দিল।’

মুসলিমদেরকে এর বদলে অন্য জায়গায় বিকল্প ৫ একর জমি দিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

পাকিস্তানের দৈনিকগুলোতে অযোধ্যার বিতর্কিত জমির রায় নিয়ে প্রতিবেদনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জয় এর চেয়েও বেশি গুরুত্ব পেয়েছে হিন্দু-মুসলিম সম্পর্ক।

পাকিস্তানের দ্য ডন পত্রিকা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছে, সুপ্রিম কোর্টের রায় হিন্দু-মুসলিম সম্পর্কে গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে। পাকিস্তানের ইংরেজি ভাষার পত্রিকা দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন অযোধ্যার রায় হিন্দুদের পক্ষে গেছে বলে মন্তব্য করেছে।

এ রায়কে হিন্দুত্ববাদী প্রধানমন্ত্রী মোদীর জয় বলেই উল্লেখ করেছে পত্রিকাটি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
লোকমান ১১ নভেম্বর, ২০১৯, ১১:৩২ এএম says : 0
এটা সম্পূর্ণ পক্ষপাত মুলক রায়
Total Reply(0)
Sirajul Islam ১১ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:২৫ পিএম says : 0
Bangladeshi news papers gulo ki korese?
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন