অযোধ্যা নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে এবার রিভিউ পিটিশন বা রায় পর্যালোচনার আবেদন জমা করল জামিয়াত-উলেমা-ই-হিন্দ। গত ৯ নভেম্বর অযোধ্যা মামলায় ঐতিহাসিক রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ওই রায়ে বাবরি মসজিদের ২.৭৭ একর জমি রামমন্দির নির্মাণের জন্যে দেয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি মসজিদ নির্মাণের জন্যে ৫ একর জমি বরাদ্দ দিতে বলে শীর্ষ আদালত।
যেহেতু শীর্ষ আদালত রায় দিয়েছে যে, এই বিতর্কিত জমি পুরোটাই রাম লাল্লার (শিশু ভগবান রাম), এরই বিরুদ্ধে বিশিষ্ট মুসলিম সংস্থার প্রধান মওলানা আরশাদ মাদানি দাবি করেন যে, এই রায় দেশের বেশিরভাগ মুসলিম জনসংখ্যার বিরুদ্ধে গেছে। তিনি সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘আদালত আমাদের এই অধিকার দিয়েছে এবং সেই জন্য়েই আমরা এই পর্যালোচনার আবেদন দায়ের করেছি।’ তিনি জানান, মামলার মূল বক্তব্য ছিল যে বাবরি মসজিদ একটি মন্দির ধ্বংস করে নির্মাণ করা হয়েছিল। আদালত বলেছে যে, কোনও মন্দির ধ্বংস করেই যে ওই মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল তার কোনও প্রমাণ মেলেনি। আর সেই জন্যেই মুসলমানদের দাবিই প্রমাণিত হয়, কিন্তু চূড়ান্ত রায় সেই দাবির বিপরীতে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং সেই জন্যই আমরা এই পর্যালোচনার আবেদন করছি।
রোববার অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড (এআইএমপিএলবি) এই কথাই জানায়। যদিও এআইএমপিএলবি এই পুনর্বিবেচনার মামলা দায়েরকারীদের মধ্যে অন্যতম ছিল না, তবে বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক মওলানা ওয়াল রহমানি সংবাদসংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘৯৯ শতাংশ মুসলমান এই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পক্ষে।’ তিনি বলেন, ‘অযোধ্যা নিয়ে সুপ্রিম রায়ের পরে আমাদের বিশ্বাস দুর্বল হয়ে পড়েছে। দেশের ৯৯ শতাংশ মুসলমান পুনর্বিবেচনার আবেদনের পক্ষেই আছেন।’
ভারতের কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী মুক্তার আব্বাস নকভি অযোধ্যা রায়ের পর্যালোচনা চেয়ে এআইএমপিএলবি ও জমিয়ত উভয়েরই সমালোচনা করেছেন। তিনি দাবি করেন যে আসলে তারা দেশের মধ্যে ‘বিভাজন ও দ্বন্দ্বের পরিবেশ’ তৈরি করার চেষ্টা করছেন।
সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে মসজিদ নির্মাণের জন্য পাঁচ একর জমি দিতে হবে মুসলিমদের। সেই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতেই অযোধ্যা মামলার মুসলিম পক্ষের প্রধান আইনজীবী ইকবাল আনসারি এবং আরও কয়েকজন স্থানীয় মুসলিম নেতা দাবি করেন যে, অযোধ্যায় অধিগ্রহণ করা ৬৭ একর জমির মধ্যেই মসজিদ নির্মাণের জন্যে জমি বরাদ্দ করতে হবে। ১৯৯১ সালে অযোধ্যার রাম মন্দির-বাবরি মসজিদ সংলগ্ন বিতর্কিত স্থানটি সহ গোটা জমি অধিগ্রহণ করে কেন্দ্রীয় সরকার। সূত্র: এনডিটিভি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন