বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

সন্তানরা মাঠে নামলে কারো পিঠের চামড়া থাকবে না

সকলকেই আইন মানতে হবে : ডিএমপি কমিশনার

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০১৯, ৫:৪৮ এএম

সড়কে শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে না পারলে আমাদের যাওয়ার কোনো পথ থাকবে না। এটিই শেষ সুযোগ। এবার আমাদের সন্তানেরা মাঠে নামলে কারো পিঠের চামড়া থাকবে না। সেটা আমি পুলিশ কমিশনার-ই হই, আর আপনি পরিবহন মালিক সমিতির বড় নেতাই হোন। কাজেই সবাইকে শৃংখলা মানতে হবে। যার যার জায়গা থেকে এগিয়ে আসতে হবে। নতুন সড়ক পরিবহন আইন ফলপ্রসূ করার আহ্বান জানিয়ে গতকাল দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স অডিটরিয়ামে ট্রাফিক সচেতনতা পক্ষ উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইনটা করা হয়েছে, সড়কে শৃংখলা ফিরিয়ে আনার জন্য। সরকার ও ট্রাফিক পুলিশের কিন্তু জরিমানা আদায়ের উদ্দেশ্য না। আমরা এখন ঢাকা মহানগরীতে প্রতি মাসে ৬-৭ কোটি টাকা জরিমানা করি। সরকারের কাছে এই টাকা একেবারেই নস্যি, সরকারের এই টাকার প্রয়োজন নাই। আমি কমিশনার হিসেবে যোগদানের পর ট্রাফিকে যারা আছেন তাদের বলে দিয়েছি, মামলার কোনো টার্গেট নাই। সড়কে শৃংখলা থাকলে মামলা করার প্রয়োজন নাই। মূল বিষয় হলো সবাই যদি আইনটা মেনে চলে, তাহলে মামলায় যাওয়ার প্রয়োজন নাই। মালিক, শ্রমিক ও পথচারী সকলকেই আইন মানতে হবে।

ট্রাফিক পক্ষের বিষয়ে তিনি বলেন, এ ১৫ দিন আমরা শৃংখলা নিয়ে কথা বলবো। পেশাজীবী, চাকরিজীবী, শিক্ষক সমাজ, শিক্ষার্থী, চালক, হেলপার, মালিক সবার সঙ্গে কথা বলব। এটিই আমাদের শেষ সুযোগ। আমরা চাই আমাদের সন্তানদের যেন মাঠে নামতে না হয়। এবার তারা মাঠে নামলে আমাদের পিঠের চামড়া রাখবে না। তখন আমাদের আর কিছুই করার থাকবে না।

গাড়ি রেকারিং প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেখানে গাড়ি অচল, গাড়ি রেখে চালক বা মালিক কোথাও চলে গেছেন, দীর্ঘ সময় খোঁজ করেও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে আমি রেকারিং করার কথা বলেছি। এর বাইরে যে গাড়ির কোনো কাগজই নাই, সেসব গাড়ি রেকারিংয়ের প্রয়োজন পড়ে। বর্তমান নতুন আইনে একটি জরিমানা দিলে পরিবহন মালিক বা শ্রমিকের সারা মাসের উপার্জন চলে যাবে। সুতরাং আমরা মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিয়ে বলেছি, অব্যাহতভাবে যারা আইন অমান্য করবে, আমরা শুধু তার বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করবো। সেটাও সামান্য, কি অমান্য করেছেন এবং কেন করেছেন বুঝিয়ে দেবো। কিন্তু এটা একবার-দুইবার বলবো, তৃতীয়বার বলবো না। তখন আপনাকে জরিমানা করবো। আপনি অব্যাহতভাবে আইন অমান্য করবেন আর আমরা আপনাকে ছাড় দিয়ে যাবো, তাহলে তো আর আইনটি কখনই প্রয়োগ সম্ভব না।

তিনি আরো বলেন, নতুন এই আইনের পর আমরা মালিক-শ্রমিক-পুলিশ যদি সড়কে শৃংখলা আনতে না পারি, তাহলে আমাদের সন্তানরা সম্মিলিতভাবে আমাদের রাস্তা থেকে তুলে দেবে। রাস্তায় আপনিও নামতে পারবেন না, আমিও ডিউটি করতে পারবো না। সহ্যের একটা সীমা থাকে। ধরুন, আপনার একটা ভুল বা আমার একটি ত্রুটির কারণে এমন একটি মানুষ মারা গেলো, যার বাসায় দুটি বাচ্চা রয়েছে এবং তাদের মুখে ভাত দেওয়ার মতো কর্মক্ষম আর কেউ নেই। সেই মানুষটির কথা কি আমরা কেউ চিন্তা করি? অব্যাহতভাবে আমার সন্তান রক্তাক্ত হবে আর আমরা আনফিট গাড়ি নিয়ে, অদক্ষ ড্রাইভার দিয়ে বছরের পর বছর গাড়ি চালিয়ে যাবো। এটি মানুষ বেশিদিন সহ্য করবে না। পরিবহন শ্রমিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আসুন আমাদের সহযোগিতা নিন, আমরা প্রস্তুত আছি। মালিক যদি বেশি কাজ করতে বাধ্য করে কিংবা মালিক যদি আনফিট গাড়ি চালাতে বাধ্য করে, তাহলে আমরা মালিকপক্ষের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধানে বাধ্য করবো। সবকিছু আলোচনা করে সামাধন করতে পারবো। কিন্তু একটি সন্তানের চোখের পানি কখনই আলোচনা করে সমাধান করতে পারবো না। সমস্ত বিষয় নিয়ে আপনাদের সঙ্গে কাজ করবো।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, সড়কে শৃংখলা ফেরাতে আমাদের সবাইকে এই আইন বাস্তবায়নে আসতেই হবে। আপনার সন্তানের জন্য, সবার নিরাপত্তার জন্য আইন মেনে চলুন। পুলিশের সহযোগিতা নিন, আসুন সবাই মিলে নিরাপদ সড়ক গড়ে তুলি। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
আব্দুল মতিন ২২ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:৫১ এএম says : 0
আরব দেশ গুলোতে আমরা দেখি,গাডীর চাল,বাকল উঠা গাডি রাস্তায় দেখা মাত্র পুলিশ প্রটেস্ট করে,কোথায় এক্সিডেন্ট করেছে? পুলিশে যানায়নি কেন? এবং মামলা!আর আমাদের দেশের পুলিশের ঘুষ নিয়ে অন্যায় কারীকে ছেডে দেওয়া বন্দ করতে হবে না হয় এই আইন কেয়ামত পর্যন্ত বাস্তবায়ন সম্ভব না!
Total Reply(0)
Kamal Pasha ২২ নভেম্বর, ২০১৯, ১:৫৮ এএম says : 0
kobe je era bujbe
Total Reply(0)
Habib Ahsan ২২ নভেম্বর, ২০১৯, ১:৫৮ এএম says : 0
apnara hard line e gele ora soja hoye jabe
Total Reply(0)
জামিল ২২ নভেম্বর, ২০১৯, ২:৫৪ এএম says : 0
মালিক, শ্রমিক ও পথচারী সকলকেই আইন মানতে হবে।
Total Reply(0)
সোয়েব আহমেদ ২২ নভেম্বর, ২০১৯, ২:৫৪ এএম says : 0
সড়কে শৃংখলা ফেরাতে আমাদের সবাইকে এই আইন বাস্তবায়নে আসতেই হবে।
Total Reply(0)
কামাল ২২ নভেম্বর, ২০১৯, ২:৫৬ এএম says : 0
আগে পুলিশকে সৎ হতে হবে না হলে কোন আইনেই কাজ হবে না।
Total Reply(0)
ম নাছিরউদ্দীন শাহ ২২ নভেম্বর, ২০১৯, ১০:২৪ এএম says : 0
মাননীয় স্ররাষ্ট্র মন্ত্রী মাননীয় আইজিপি মাননীয় কমিশনার মহুোদয় সড়ক পথের ভয়ংকর বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে হাজার হাজার মানুষের জীবন নেওয়া গাড়ি চালকের এত সাহস কোথায়? কোন ঘোষণা ছাড়া সারাদেশ অবরুদ্ধ করে দাবি জানাবেন? সড়ক পরিবহনের নেতা একেক জন রাষ্ট্র কে চ্যালেঞ্জ করে। বেকায়দায় পেলে দাবি আদায় করে। এবারও তাই হলো। অদ্য শত বসরের আইন না মানার নীতির প্রতি অসহায় রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রশাসন। ডিএমপি কমিশনার মহোদয় যথাযথ কথাই বলে ছেন। কারো পিটের ছামড়া থাকবে না। তার জন্য তো আল্লাহ না করুক আর কয়েকজন ছাত্র ছাত্রীর তরতাজা লাশ রাজপথে পড়তে হবে। এগুলো কি সমাধান নিশ্চয় না। আইনের শাসন শৃংখলা আইনের প্রতি সম্মান। দেশে শান্তি শৃংখলা প্রতিষ্ঠা একমাত্র উপায় সমাধান আইনের কঠোর কটিন প্রয়োগ। প্রথমে পরিবহন সংগঠন স্হগিত করতে হবে। পরিবহনের মাফিয়া গড়ফাদার দূর্ন্নীতি বাজনেতাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। তারজন্য প্রয়োজন হবে জাতীয় রাজনৈতিক নেতাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ছাত্র সমাজ যুব সমাজের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। কারণ এটি জাতীয় সমস্যা সরকারের একা নয়? আটার কোটি মানুষের। কারণ পরিবহনের ধর্মঘট অবরোধ দাবি আদায় কৌশল রাজনৈতিক নেতৃত্বে আর্থিক ভাবে ও রাজনৈতিক ভাবে সমাধানে কৌশলগত ভাবে বসতে বাধ্য হয়ে যান। পরিবহণ সেক্টরে জাতীয় নেতৃত্ব আইন শৃংখলা বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকারী প্রতিষ্ঠান গভীরে গিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। কারণ এটি জাতীয় সমস্যা। একা পুলিশের পক্ষে সম্ভব নয়?
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন