কাঠ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের অভিযান জোরদার করা হয়েছে। চলতি বছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ৫ মাসে মূল্যবান সেগুন কাঠসহ বিবিধ প্রজাতির প্রায় সাড়ে ৫ হাজার ঘনফুট গোল ও চিড়াই কাঠ, ২ হাজার ঘনফুট জ্বালানী কাঠ, ১১০টি বল্লী এবং ২৫টি যানবাহন আটক করা হয়েছে। আটককৃত কাঠের মূল্য প্রায় ৩৫ লাখ টাকা। বন মামলায় কাঠ পাচারকারী চক্রের ৯৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও জরিমানা করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের শহর রেঞ্জ, করেরহাট রেঞ্জ, মীরসরাই রেঞ্জ, নারায়নহাট রেঞ্জ, হাটহাজারী রেঞ্জ, ইছামতি রেঞ্জ, কুমিরা রেঞ্জ, বারৈয়াঢালা রেঞ্জ, হাজারীখিল রেঞ্জ, হাসনাবাদ রেঞ্জসহ বিভিন্ন রেঞ্জে বিশেষ করে মহাসড়ক পথে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। জুলাই থেকে নভেম্বর ৫ মাসে বন বিভাগ বিভিন্ন অপরাধে ১০৫টি বন মামলা দায়ের করেছে।
সম্প্রতি র্যাব-৭ সিপিসি-৩ চান্দগাঁও চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের শহর রেঞ্জের টহলদল যৌথভাবে টহলকালে ত্রিপলঢাকা কাঠভর্তি ট্রাককে (ফেনী ট-১১-০১৫০) থামানোর সংকেত দিলে ট্রাকটি দ্রুত পালাতে থাকে। চট্টগ্রাম শহরের চান্দগাঁও থানার কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় যৌথ টহলদল ট্রাকটির গতিরোধ করে। বনজদ্রব্যের কোন বৈধ দলিল দেখাতে না পারায় ট্রাকভর্তি কাঠ ও ২ পাচারকারীকে আটক করা হয়। আটক ট্রাকটি তল্লাশি করে ৪১৭ টুকরা গোল সেগুন, গামার ও কড়ই ৩৯৯.৭২ ঘনফুট কাঠ জব্দ করা হয়। পাচারকারী চক্র ট্রাকটিতে (ভোলা-ট-১১-০০৫০) একটি নম্বর প্লেটও লাগিয়ে রাখে।
আটক কাঠ পাচারকারী ভোলা জেলার লালমোহন থানার লছারিয়া গ্রামের মৃত মৌলভী সুলতানের পুত্র মোঃ ছালাউদ্দিন (৩৫) ও ভোলা জেলার চরফ্যাশন থানার কাঞ্চনপুর গ্রামের আব্দুল মোতালেবের পুত্র মোঃ ওহিদকে (৩৯) গ্রেফতার করা হয়। চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের শহর রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জ কর্মকর্তা ফরেস্টার এ বি এম ছাইদুর রহমান বাদী হয়ে এ ব্যাপারে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বন আদালতে বন মামলা করেন।
অপর অভিযানে বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল এলাকায় ৩৩১ ঘনফুট সেগুন কাঠ জব্দ করে গ্রেফতার করা হয় ২ জনকে। ইতোমধ্যে বন আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২২টি মামলার ৯৫ জন বন অপরাধীকে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদ- ও জরিমানা করেন।
অধিকাংশ আসামীকে ৬ মাসের সশ্রম কারাদ- ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের কারাদ- দেয়া হয়।
চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. বখতিয়ার নূর সিদ্দিকী ইনকিলাবকে জানান, বন দখল ও মূল্যবান কাঠ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করা হয়েছে। কারও চাপের কাছে নতি স্বীকার করা হবে না, অভিযান অব্যাহত থাকবে। অভিযানের ফলে পাচারকারী চক্রের তৎপরতা কমেছে বলেও জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন