শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

আরেকটি রেল ট্রাজেডি ঘটে যেত বগুড়ায় !

বগুড়া ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০১৯, ৬:০১ পিএম

বগুড়া রেল ষ্টেশনে অল্পের জন্য বড় একটা রেল দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল দোলন চাঁপা আন্তঃনগর ট্রেন ! 

তবে সৃষ্ট ঘটনায় দু’জন আহত হলেও রেল লাইনের ওপর গড়ে ওঠা হঠাৎ মার্কেটে কেনাবেচায় ব্যস্ত কয়েক’শ মানুষ বেঁচে গিয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বগুড়ার রেলের স্টেশন মাষ্টার আবুল কাশেম জানান, দুপুর ১১টায় দোলন চাঁপা আন্তঃনগর ট্রেনটি বেনারপাড়া থেকে সান্তাহার যাওয়ার পথে বগুড়ায় আসছিল। অপরদিকে আরেকটি আন্তঃনগর ট্রেন লালমনি এক্সপ্রেক্স ঢাকা থেকে বগুড়া স্টেশনের দিকে আসতে থাকে। সিগন্যাল এবং পয়েন্ট ঠিক করে দোলনচাঁপা ট্রেনটির জন্য দুইনম্বর লুপ লাইনে এবং লালমনি এক্সপ্রেক্সকে এক নম্বর লাইনে আসার নির্দেশনা ঠিক করা হয়। দোলনচাঁপা ট্রেনটি হুইসেল দিতে দিতে দুইনম্বর লুপ লাইন দিয়ে স্টেশনে আসতে থাকে। কিন্তু অবৈধ হটাৎ মার্কেটের দোকানদারদের ধারনা ওই ট্রেনটি একনম্বর লাইন দিয়ে আসবে। তাই তারা রেল লাইনের ওপর স্থাপিত অস্থায়ী দোকান পাট সরিয়ে নেয়নি। কিন্তু যখন ট্রেনটি দুইনম্বর লুপ লাইন দিয়ে হুইসেল দিতে দিতে আসতে থাকে তখন দোকানদার এবং ক্রেতারা চিৎকার করে এদিক ওদিক দৌড়ে পালাতে থাকে।

বিপদ আঁচ করতে পেরে ট্রেন চালক দ্রুততার সাথে ট্রেনটি ব্রেক করায় অনেক দোকানের মালামাল নষ্ট হলেও কোন প্রাণ হানি ঘটেনি। সময়মত ট্রেনটি থামাতে ব্যর্থ হলে অপ্রস্তত বহু সংখ্যক মানুষ হতাহত হয়ে রেল ট্রাজেডির নতুন তৈরী হত ।

ষ্টেশন মাষ্টার আরও জানান,গত ১৯ নভেম্বর লালমনি হাট থেকে বিভাগীয় ভু-সম্পদ কর্মকর্তাসহ উর্দ্ধত্তন কর্মকর্তারা স্টেশনের পাশের্^ একটি মার্কেটের প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়ার সময় হটাৎ মার্কেট দুইদিন বন্ধ থাকে। পরে ২২ নভেম্বর প্রভাবশালী একটি মহলের ইন্ধনে আবারও হঠাৎ মার্কেটের দোকানদাররা তাদের দোকান বসায়। এ বিষয়ে উর্দ্ধত্তন কর্মকর্তাদের কাছে রেল স্টেশন সীমানার মধ্যে এবং লাইনের উপর অবৈধ দোকান উচ্ছেদের জন্য ২৩ নভেম্বর চিঠিও দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, রেল লাইন থেকে দুই পাশের ১০ ফুট করে জায়গা ১৪৪ ধারা সবসময়ের জন্য জারী থাকলেও এসব কেউ মানছেনা। বগুড়া জিআরপি ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত ইন্সেপেক্টর কায়কোবাদ জানান, ঘটনাটি জানার পরে সেখানে আমরা দ্রæত যাই। কিন্তু কোন আহত কিংবা নিহত ব্যক্তির খোঁজ পাইনি। তবে আশেপাশের লোকজন জানিয়েছে চারপাঁচজন ক্রেতা আহত হয়েছেন।

বগুড়া ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন মাষ্টার বজলুর রশিদ জানান, দুইজন আহত হয়েছে। এরা হলেন, গাবতলী উপজেলার রুমি খাতুন (৩০) এবং দুপচাঁচিয়া উপজেলার মানিক (৫৫)। তাদের শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
রেল লাইনের পাশের স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, অবৈধ হটাৎ মার্কেটে গত ৫/৬ বছরে প্রায় ৭ / ৮জন ট্রেনে কেটে মারা গেছে। নিহতদের মধ্যে মার্কেটে আসা ক্রেতা এবং দোকানদার রয়েছে।

বুধবার যদি ট্রেনের চালক দ্রুত ব্রেক করে ট্রেনটি না থামাতো , তাহলে কয়েক’শ লোকের প্রাণহানি ঘটনা ঘটতো। গরীব ও নি¤œবিত্ত শ্রেনীর মানুষের এই পছন্দের অবৈধ মার্কেট থেকে রেল ষ্টেশন পার্শ্ববর্তি এলাকার একটি সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ গোষ্ঠির বিপুল অর্থের যোগান আসে বলে কখনই এই মার্কেটটি স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন