সউদী আরবের পর এবার বাহরাইন সফরে যাচ্ছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বাহরাইনের জাতীয় দিবসে বিশেষ অতিথি হিসাবে যোগ দেয়ার জন্য বাদশাহ হামাদ বিন আইসা আল খলিফা আমন্ত্রণে আজ সোমবার বাহরাইনে যাবেন তিনি। গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মিডিয়া শাখা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। তার সাথে মন্ত্রিসভার সদস্য ও উর্ধ্বতন সরকারী কর্মকর্তাসহ উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল থাকবেন।
দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী ইমরানের খানের জন্য এটি হবে প্রথম বাহরাইনে সফর। সফরকালে, তিনি বাদশাহর সাথে বৈঠক করবেন এবং ক্রাউন প্রিন্স সালমান বিন হামাদ আল-খলিফার সাথে প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনা করবেন।
এদিকে, শনিবার একদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সউদী আরবে যান ইমরান খান। সেখানে তিনি সউদী ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। গত আট মাসে এটি ইমরান খানের চতুর্থ সউদী সফর। পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি সউদী আরব সফর শেষে দেশে ফেরার পরপরই তিনি সফরে গেলেন। জানা গেছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সউদী আরব পৌঁছে মদিনায় মহানবী হজরত মোহাম্মদ (স.)-এর রওজা মুবারক জিয়ারত করেছেন।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিয়মিত সফরের অংশ হিসেবেই ইমরান খান সউদীতে গেছেন। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা নিয়ে তিনি সউদী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
এদিকে, আরব সূত্রের বরাত দিয়ে পাকিস্তানি পত্রিকা ডন জানিয়েছে, ইমরান খান আগামী ১৮ থেকে ২০ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিতে রাজি হওয়ায় সউদী আরব অসন্তুষ্ট হয়েছে। আর বিষয়টি অবহিত হওয়ার পরই সউদী সফরের সিদ্ধান্ত নেন ইমরান।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মাদের আহŸানে কুয়ালালামপুর সামিট নামের যে আন্তর্জাতিক সম্মেলন হতে যাচ্ছে তাতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান ও কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আলে সানি অংশ নেবেন। এছাড়া ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি ও ইন্দোনেশিয়ার জুকো উইদোদো অংশ নিতে পারেন বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, সউদী সরকার কুয়ালালামপুর সামিট-কে ভালোভাবে দেখছে না। সউদী আরব মনে করছে, এই সামিট মুসলিম বিশ্বে রিয়াদের প্রভাব আরও হ্রাস করবে। অন্যদিকে, মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা ও শান্তির জন্য ক‚টনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধিকেই সমাধানের পথ হিসেবে দেখছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান। পাশাপাশি কাশ্মীর সংকট নিরসনে ওআইসিসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে সম্পৃক্ত করতে চান তিনি।
বৈঠকে অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীর সংকট নিরসনে পাকিস্তানকে সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য সউদী আরবের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান পাক প্রধানমন্ত্রী। তিনি মোহাম্মাদ বিন সালমানকে জম্মু-কাশ্মীরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন এবং ভ‚স্বর্গ খ্যাত মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাটিতে ভারতের হিন্দুত্ববাদী সরকারের সহিংস পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন। আঞ্চলিক সমস্যা ও বিতর্কিত বিষয় সমাধানের জন্য রাজনৈতিক ও ক‚টনৈতিক পদ্ধতি অবলম্বন করতে পাকিস্তান প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন ইমরান খান। সূত্র : গালফ নিউজ, ডন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন