শীতের আকাশে সূর্যের লুকোচুরি। বইছে হিমেল হাওয়া। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কুয়াকাটার সৈকতে ছুটে এসেছে হাজারো পর্যটক। তীব্র শীতে সৈকতের বালিয়ারীতে প্রিয়জনদের সাথে অবিরাম ছুটাছুটি আর সমুদ্রের গর্জন যেন পর্যটকদের মুগ্ধ করে তুলেছে। নানা বয়সী পর্যটকের আগমনে রাখাইন মার্কেট, ঝিনুকের দোকান, খাবারঘর, চটপটির দোকানসহ পর্যটন নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো মুখরিত হয়ে উঠেছে। দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসা ভ্রমণপিপাসু পর্যটকের উন্মাদনায় সৈকত জুড়ে আনন্দময় পরিবেশ বিরাজ করছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঐতিহ্যবাহী কুয়া, শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, আড়াই শতবর্ষী নৌকা, ইলিশ পার্ক, কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যান, ঝাউ বন, লেম্বুর চর, চর গঙ্গামতি, লাল কাঁকড়ার দ্বীপ, ফাতরার বন, এশিয়ার সর্ববৃহৎ সীমা বৌদ্ধ বিহার ও রাখাইন পল্লীসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানেও বাড়ছে পর্যটকদের সংখ্যা। এদিকে ইংরেজি নতুন বছরকে বরণ করতে হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস নতুন সাজে সাজানো হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শীতের শুরুতে পরিবার-পরিজন কিংবা পছন্দের মানুষটিকে নিয়ে কুয়াকাটার নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে এসেছেন পর্যটকরা। গত দুই দিন ধরে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ছে। তাদের হাতে থাকা স্মার্ট ফোনের সেলফি ও ভিডিও ক্লিপস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে দিচ্ছেন। পর্যটক স্পটগুলো হয়ে উঠেছে উৎসব মুখর। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও কাজ করছে। পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কেনা বেচার ধুম পড়েছে।
তবে অধিকাংশ হোটেল, মোটেলের রুম বুকিং রয়েছে বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান।
সৈকতে কথা হয় শিক্ষার্থী ইমতিয়া রানার সাথে। তিনি বলেন, পরীক্ষা শেষ হয়েছে। বন্ধুদের সাথে কুয়াকাটায় এসেছি। সমুদ্র দেখা ও তার উথাল পাতাল ঢেউয়ের গর্জনসহ দর্শনীয় স্থানগুলো অসাধারণ লেগেছে।
কুয়াকাটা ইলিশ পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, পর্যটকদের ব্যাপক ভিড় রয়েছে। আমরাও চেষ্টা করছি পর্যটকদের বিনোদন দিতে।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল মালিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিলন ভূইয়া বলেন, গত দু’দিন পর্যটকের সংখ্যা কম ছিল। থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে গতকাল সকাল থেকে পর্যটকদের চাপ লক্ষ্য করা গেছে। আমাদের হোটেল মোটেলগুলোতে বুকিং চলছে।
মহিপুর থানার ওসি সোহেল আহম্মেদ বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কুয়াকাটায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ, জেলা পুলিশ ও মহিপুর থানা পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে মোতায়েন রয়েছে।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের সিনিয়র এএসপি মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, সৈকতে পর্যটকদের চলাফেরা নির্বিঘœ করতে এবং যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমান জানান, কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং উশৃঙ্খল লোকজন যেন কোন ধরনের বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন