সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চরম বদলার হুঁশিয়ারি ইরানের, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০২০, ৪:২৪ পিএম

আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর সেই হুঁশিয়ারি সত্যি করে শুক্রবার মার্কিন বিমান হামলায় নিহত হলেন ইরানের এলিট কুদস বাহিনীর প্রধান কাশেম সোলেমানি এবং ইরানের সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল আব্দুলরহিম মৌসাভি। এই দুই সামরিক কর্মকর্তাসহ বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে এদিনের মার্কিন বিমান বাহিনীর হামলায় মোট আট জন নিহত হয়েছে। ইরাকি কর্মকর্তারা ও সরকারি সংবাদ সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হামলায় ইরাকি মিলিশিয়া কমান্ডার আবু মাহুদি আল-মুহান্দিসও নিহত হয়েছেন।

হামলার পরই টুইট করে মার্কিন জাতীয় পতাকার ছবি পোস্ট করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হামলার দায় স্বীকার করেছে পেন্টাগনও। এবার পালটা হুংকার তেহরানের। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির হুমকি, এই ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদে’র ‘ফল ভুগতে’ হবে আমেরিকাকে। রুহানির আরও হুমকি, শুধু ইরান নয়, ওয়াশিংটনকে জব্দ করবে ‘অঞ্চলের স্বাধীন দেশগুলোও।’

সেনাপ্রধানের হত্যার খবরের পরই সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে তেহরান। তিনি বর্তমানে ইরানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। ইরানের দাবি, আইএস-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন সোলেমানি। এদিকে, সোলেমানির মৃত্যুর পর রাস্তায় বেরিয়ে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উচ্ছ্বাসের ভিডিও শেয়ার করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রসচিব মাইক পম্পেও।

শুক্রবার ভোররাতেই আচমকা ইরাকের বাগদাদ বিমানবন্দর লক্ষ্য করে অন্তত চারটি রকেট হামলা চালানো হয়। মার্কিন বাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে বিমানবন্দরে দুটি গাড়ি লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয় বলে জানা গেছে ইরাকের সংবাদমাধ্যম সূত্রে। এই হামলাতেই ইরানের সেনাপ্রধান কাসেম সোলেমানি, আধাসেনার পদস্থ অফিসার আবু মাহুদি আল-মুহান্দিস এবং বিমানবন্দরের অফিসার মহম্মদ রেদারের মৃত্যু হয়।

পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই মার্কিন কর্মকর্তা এক বেসরকারি সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরিকল্পনা মাফিকই এই হামলা চালিয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোরে এই ঘটনা ঘটে। পরে পেন্টাগনের তরফে সরকারি বিবৃতি দিয়ে এই হামলার কথা স্বীকারও করা হয়।

ইরাকের আধাসামরিক বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, ইরান থেকে কিছু শীর্ষস্থানীয় সামরিক কর্মকর্তার ইরাকে আসার কথা ছিল। সেই কারণে বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা মহম্মদ রেদা। তিনি যখন ইরান এলিট গার্ড ফোর্সের প্রধান সুলেমানি ও মুহানদিসকে নিয়ে বিমানবন্দরে থেকে বের হচ্ছিলেন তখন কার্গো হলের কাছে আমেরিকার বিমানবাহীনি তিনটি রকেট হামলা চালায়। এর ফলে ঘটনাস্থলে থাকা সবার মৃত্যু হয় বলে খবর। কয়েকটি দেহ এমনভাবে পুড়ে গিয়েছে যে শনাক্ত করা যাচ্ছে না। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই মার্কিন হামলায় তেহরান সমর্থিত ইরাকের আধাসামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত হিজবুল্লা গোষ্ঠীর ৩০ জনের মৃত্যুর পর, বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসে হামলা চালানো হয়। ভাঙচুরের পাশাপাশি আগুন লাগানো হয়। মার্কিন পররাষ্ট্র সচিবের অভিযোগ ছিল, জঙ্গিদের দিয়ে হামলার পিছনে রয়েছে ইরানই। ‘বড়সড় মূল্য দিতে হবে’ হুমকি দিয়ে পশ্চিম এশিয়ায় শত শত সেনা পাঠানোর কথা বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। আজ ইরানি সেনাপ্রধানের হত্যার পর পেন্টাগনের অভিযোগ, মার্কিন নাগরিক ও সম্পত্তির উপর হামলায় জড়িত ছিলেন সোলেমানি।

এদিকে, ইরাক-ইরানে উপস্থিত মার্কিন নাগরিকদের দ্রুত আকাশপথে দেশ ছাড়তে বলে বিবৃতি দিয়েছে বাগদাদে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস। আমেরিকা-ইরান উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে বছরের শুরুতেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা শুরু হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এই আশঙ্কা প্রকাশ করে বহু পোস্ট দেখা গেছে। সূত্র: আল-জাজিরা, রয়টার্স।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Shahid ullah ৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১:৩১ পিএম says : 0
Ami onk kusi kno Iran aktah sntrch dahs
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন