বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাহিত্য

এ সপ্তাহের কবিতা

প্রকাশের সময় : ১ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আমি কয়েক ঘণ্টা ঘুম কিনতে চাই
দেলোয়ার হোসাইন

সময়ের সাথে বড্ড বেমানান আমার বেড়ে ওঠা
রাতকে ভোর করেই নিস্তার খুঁজি ঘুমের বিছানায়,
শুধু ক্ষত বাড়ে নিন্দিত এই শূন্য রাফখাতায়...

ঝিঁঝিঁ পোকার বাজার থেকে আমি কয়েক ঘণ্টা
ঘুম কিনতে চাই, বুক পকেটে লুকিয়ে রাখতে
চাই জোসনার রাজধানী। মৃত্তিকার গন্ধ গায়ে
মেখে আমি একটু ঘুমোতে চাই মায়ের আচল
গায়ে জড়িয়ে...

প্রার্থনার জায়নামাজে অসহায় আমার দুই চোখ
দুই হাতে দৈন্যতার দলিল নিয়ে কেবল ছটফট
করি। শুধু ফেরা হয় না কাক্সিক্ষত প্রাণের উৎসবে...



বহুদূর...
ইদ্রিস আলী মেহেদী

হারিয়ে যাবো...  হতে পারে পরপারে...
প্রবাসী পৃথিবী থেকে দূরে... বহুদূরে...
হারিয়ে যাবো... অচেনা ঠিকানায়...
যাবে না খোঁজা চোখের জানালায়...

এই যে আমাদের গ্রহ -
অশান্তির অনলে পুড়ছে অহরহ
এসব ছেড়ে যাবো অমলিন কোন গ্রহে -
ছোঁবে না পৃথিবীর জীর্ণ কোনো দ্রোহে
অবিচার সয়ে সয়ে হয়ে গেছি ম্রিয়মাণ
ক্ষণিক শান্তি চাই... চাই পরিত্রাণ -
আমাকে যেতেই হবে বহুদূর...
যেখানে নেই ঝুটের খনি - আছে শুধু
অমর শান্তির সুর...

আলোর মিছিলে গোলাপের সুবাস
এস এম শহীদুল আলম

সবুজ জমিনে জ্যোৎ¯œা ধারায় বর্ণিল উৎসব
হৃদয় নদীতে মিল-মহব্বত সুমধুর ছন্দে
আনন্দের রকমারি স্রোত।

আত্মশুদ্ধির ঢেউয়ে উৎসর্গের মহান শিক্ষার পাঠশালায়
বিধাতার সান্নিধ্য পাবার প্রবল চেষ্টার একান্ত প্রত্যয়।

মানবতার দুয়ারে ভালোবাসার স্বর্গীয় হাওয়া
আলোর মিছিলে গোলাপের সুবাস
অটুট থাক অনন্তকাল...

সত্তার সত্তা
জাফর পাঠান

মসজিদ-মন্দির-গীর্জা-প্যাগোডায়
পাবে না যে খুঁজে তাকে,
খোঁজার মত খোঁজো যদি হাঁকডাকে
পাবে নিজেরই বাঁকে,
স্ব-সত্তার ফাঁকে ফাঁকে।

পাবে সাত আসমানে পাবে জমিনে
তেমনি পাবে আগুনে,
অর্ণব-নদে খেলে যায় আনমনে
খেলে সে ভরা ফাগুনে,
চিত্তানন্দে নন্দ্য গুণে।

নিউট্রন-প্রোটন ও ঈশ্বর কণা
সহস্র-কোটি অগনা,
অণু-পরমাণু বিন্দুতে খোঁজো যদি
সেখানেও আনাগোনা,
ঘুরে ফিরে একজনা।

কখনো সে আঁশে কখনো মিশে বাঁশে
রহস্যের হাসা হাসে,
বৃষ্টি হয়ে অঝরে কাঁদে কখনো সে
মানুষকে ভালোবেসে,
নির্দিষ্ট এক বিশ্বাসে।

তোমার নৈশব্দ
খোদেজা মাহবুব আরা

তোমার নৈশব্দ আমাকে করেছে
উদাস স্বপ্নহীন
অলিখিত দুঃখচাপে বিভ্রান্ত
পাথুরে পথের গুপ্ত গুহা
কোন মায়া ভ্রমে হৃদয় রেখেছি
আকাক্সক্ষার গহীন সরোবরে
বুঝিনি যন্ত্রণার তরঙ্গে
প্রতিদিন টুকরো টুকরো হবে স্বপ্নের সাঁকো
ভুলে গেছি পুষ্পিত দিনযাপনের
আকাক্সিক্ষত শুভ্র প্রহরবেলা
আমাকে রেখেছো মুঠোভর্তি বালিসাম
ছড়িয়ে যাচ্ছে আপন ঐশ্বর্যে।
কাতর আমি মূল্যহীন ছড়িয়ে ছিটিয়ে
থাকি জলহীন মরুভূমিতে
আকাক্সক্ষার শিখরে মিলিয়ে যেতে থাকি
অচেনা অজানা কোন পথ ধরে।

আগ্রাসন
পৃথ্বীশ চক্রবর্ত্তী
প্রথমেই করেছিলে গ্রাস চাষের জমিন
এরপর এক এক করে নিয়ে গেছো
শরতের চরে জেগে ওঠা কাশবন
তীরের ধারের সারিবাঁধা গাছপালা
আমার ছেলেবেলার সেই খেলার মাঠটি
গ্রামের শ্মশান ঘাটটিও তোমার রাক্ষুসী
করাল থাবায় শেষ হয়ে যাচ্ছে
মনে হচ্ছে, একদিন সারা গ্রামটিই খেয়ে নেবে
গোগ্রাস করবেÑ পিতৃপুরুষের ভিটে-বাড়ি-ঘর
আমাদের তুমি গ্রামছাড়া করেই ছাড়বে
কেউ না বুঝুক, আমি বুঝেছি ঠিকই
সাম্রাজ্যবাদী তোমার মনোভাবখানা

বন্ধ কর নদী ! মনের আগ্রাসী সাধ
নতুবা তোমার তীরে দেব বেড়িবাঁধ।

এই পাড়াতেও সূর্য ওঠে
মিতুল সাইফ

পাখির পালক পড়ে থাকে
পাখি যায় দূর পরবাসে।
আমাদের ডালে ডালে ফুটে থাকে
চিরকালের অন্ধকার।

যেখানে তোমার ঠোঁট রেখেছিলে
সেখানে এখন
দশ জীবনের ক্ষত।

পাখি, তোমায় দেখতে এলাম
পঁচিশ বছর পর
পাখি, তোমার কোথায় মুক্ত ডানা?
তুমি যে কেবল উড়তে চেয়েছিলে!

বুঝলে না তো
সোনার বরন পাখি,
এই পাড়াতেও সূর্য ওঠে
মেঘের মাখামাখি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন