শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

স্বাস্থ্য

ক্যান্সার প্রতিরোধে ঘরে করণীয়

ডাঃ মাহমুদুল হাসান সরদার | প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০২ এএম

ইংরেজিতে একটি কথা আছে চৎবাবহঃরড়হ রং নবঃঃবৎ ঃযধহ ঈঁৎব. অর্থাৎ রোগ আরোগ্যের চেয়ে প্রতিরোধ করা উত্তম। আর রোগ প্রতিরোধে সাধারণ জ্ঞান থাকা উত্তম। সেই আদি থেকেই রোগ বিজ্ঞানী ও গবেষকরা দীর্ঘ গবেষণা করে দেখেছেন যে, ক্যান্সার, রক্ত ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগ নিয়মিত ফলমূল, শাকসবজি ও তরিতরকারি গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব। পরিবারের গৃহিণী মা, যারা সংসারের ঘরোয়া কাজকর্ম যেমন- রান্নাবান্না, খাওয়া-দাওয়ার দায়িত্বে থাকেন তাদের একটু সচেতনতা ও জ্ঞান থাকলে এবং খাবার-দাবার পরিবেশন ও রান্নায় একটু সচেতন হলে গৃহিণীর মাধ্যমে ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই একজন গৃহিণী পারেন ক্যান্সার প্রতিরোধে যথাযথ ভূমিকা রাখতে।
চর্বিযুক্ত চতুষ্পদ জন্তুর মাংস, ভাজা-পোড়া, পুরনো বা বাসি খাবার ভক্ষণ, নেশাজাতীয় পানীয় পান বা ধূমপান উল্লিখিত রোগ সৃষ্টির অন্যতম কারণ। অনেক পরিবারের গৃহিণীর যথাযথ ভূমিকা ও দায়িত্বের কারণে তাদের পরিবার ক্যান্সারের আশঙ্কা থেকে মুক্ত থাকে। পরিবারের একজন আদর্শ গৃহিণী হিসেবে বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য যা ক্যান্সার প্রতিরোধ সহায়ক সে সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন।
কাঁচা রসুন ও পেঁয়াজ : বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কারসিনোজেন গুলোকে রসুন, পেঁয়াজের রাসায়নিক পদার্থ সহজেই ধ্বংস করে দেয়। রসুন দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বহু গুণে বাড়ায় এবং ক্যান্সারসহ নানা রোগের বিস্তার প্রতিরোধ করে। লোমা লিন্ডার ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের গবেষণা রিপোর্টে জানা গেছে, রসুনের উপাদানগুলো ক্যান্সার কোষের জন্য ভয়ানক বিষাক্ত। এটা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে এবং টিউমার সেলকে ধ্বংস করে দেয়। হার্ভার্ডের বিজ্ঞানীরা কিছু ক্যান্সার প্রতিরোধ করেছেন খাদ্যের সঙ্গে কাঁচা পেঁয়াজ যোগ করে।
রঙ চা : বাটগার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা থেকে জানা যায়, যে কোনো ধরনের রঙ চা, সবুজ চা বা কালো চায়ে ক্যান্সার বিধ্বংসী রাসায়নিক পদার্থ ক্যাটোচিনস উপাদান আছে, যা আশ্চর্যজনকভাবে ক্যান্সারকে প্রতিরোধ করে। অতএব যারা চা পছন্দ করেন তাদের উচিত দুধ চা বেশি পান না করে বেশি করে রঙ চা পান করা। রঙ চা লেবুর রস, তেজপাতা, আদা, চিনি ইত্যাদির সমন্ব্বয়ে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ কাপ পান করে ক্যান্সার প্রতিরোধ করুন।
দুধ : দুধের ভেতর সব ধরনের ভিটামিন, প্রোটিন ও ধাতব লবণ বিদ্যমান থাকায় একে আদর্শ খাদ্য বলা হয়। এটা যেমন পুষ্টিকর, তেমনি সুস্বাদু ও সুপাচ্য বটে। দুধ শারীরিক গঠনকে ঠিক রাখে। দুধে ক্যালসিয়াম, রাইবোফ্লাবিন, ফসফরাস, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, স্নেহ পদার্থ, শ্বেতসার (ল্যাকটোজ) ও প্রোটিনসহ সব ধরনের ভিটামিন আছে বলে এর ক্যান্সারবিরোধী ভূমিকা অত্যন্ত জোরালো। অতএব সব বয়সের মানুষের জন্য প্রতিদিন পরিমিত দুধ পান অপরিহার্য।
গমের আটা : আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকার মধ্যে গমের আটার রুটি থাকা অত্যাবশ্যক। এর দ্বারা শরীর ভালো থাকবে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধও হবে। আমেরিকান হেলথ ফাউন্ডেশনের এক রিপোর্ট থেকে জানা যায়, গমের আটা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী হরমোন ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ অনেক কমিয়ে দিয়ে ক্যান্সারবিরোধী ভূমিকা পালন করে।
ফলমূল, শাকসবজি ও তরিতরকারি : পালংশাক, পুঁইশাক, কচুশাক, লালশাক, ডাঁটাশাকসহ সব ধরনের শাকসবজি, টমেটো, গাজর, মিষ্টি আলু, কুমড়া, শিম, শালগম, বরবটি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা প্রভৃতি তরিতরকারি; আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস, কলা, পেয়ারা, পেঁপেসহ নানা রকমের ফল এবং জাম্বুরা, কমলালেবু, কদবেল, বাতাবি-কাগুজি লেবু, কামরাঙ্গা, জলপাই, আমড়া, কুলসহ সব ধরনের টক জাতীয় খাদ্যে রয়েছে প্রচুর ক্যান্সারবিরোধী উপাদান।


ক্যান্সার চিকিৎসক
সরদার হোমিও হল, ৬১/সি আসাদ এভিনিউ,
মোহাম্মদপুর, ঢাকা, সেল ০১৭৩৭৩৭৯৫৩৪ , ০১৭৪৭৫০৫৯৫৫।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন