সামরিক শক্তি, প্রযুক্তি ও এই খাতে ব্যয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ধারে কাছেও কোন দেশ নেই। সামরিক ক্ষেত্রে ‘অসম্ভব শক্তিশালী’ যুক্তরাষ্ট্রকেও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলা যায় এটা আগে ধারণাও করা যায় নি। অথচ, মার্কিন ঘাঁটিতে ঘোষণা দিয়ে হামলা চালিয়ে সেই কাজটিই করেছে ইরান।
মধ্যপ্রাচ্যের গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান মিডেল ইস্ট মনিটরের এক নিবন্ধে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র সব সময় মনে করে এসেছে তাদের ঘাঁটিতে হামলা চালানোর সাহস বা সক্ষমতা কারও নেই। এমন দম্ভ থেকে অনেক কিছুই করেছে মার্কিন প্রশাসন। কিন্তু তাদের সেই দম্ভ ভেঙে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের অপেক্ষাকৃত ‘কম শক্তিশালী’ দেশ ইরান।
কাসেম সোলাইমানি হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ৮ জানুয়ারি সবাইকে বিস্মিত করে সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে ইরাকে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায় ইরান। যুক্তরাষ্ট্রও হয়তো ভাবেনি, এমন ভয়াবহ হামলা চালাবে তেহরান। মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আমাদের কোনো সেনা হতাহত হয়নি। এমনকি ঘাঁটিরও খুব বেশি ক্ষতি হয়নি। ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কোনো মার্কিন সেনা হতাহত না হওয়ায় ইরানের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে জানায় ট্রাম্প প্রশাসন। একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জানায়, ইরানের হামলায় কোনো মার্কিন সেনা হতাহত হলে তেহরানকে এর কঠোর জবাব দেওয়া হবে।
ইরানের হামলায় ট্রাম্পসহ অন্যরা তখন ক্ষতির বিষয়টি অস্বীকার করলেও ধীরে ধীরে সব সত্য বেরিয়ে আসছে। হামলার পরের সপ্তাহে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর (পেন্টাগন) স্বীকার করে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১১ সেনা আহত হয়েছে। তাদের মস্তিষ্কে ক্ষত সৃষ্টি হওয়ায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এরপর চলতি সপ্তাহে নতুন করে আরও ৩৪ জন আহতের কথা স্বীকার করে তারা।
এছাড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, ইরাকে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তারপরও যুক্তরাষ্ট্র পুরো ঘটনাটি চেপে গিয়ে থেকেছে নীরব। এতেই স্পষ্ট যে, ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা আরও বাড়িতে জটিল কোনো পরিস্থিতিতে পড়তে চায়নি মার্কিন কর্তৃপক্ষ। ফলে পুরো বিষয়টিই কৌশলে এড়িয়ে গেছে তারা। হামলার অনেক কিছু গোপন করলেও মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের দম্ভ যে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়েছে তা কোনোভাবেই গোপন করতে পারেনি মার্কিন প্রশাসন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন