রাত ১১টা। ওসমানদের বাড়িতে পিঠাপুলি বানাচ্ছেন বাড়ির নারীরা। এদিকে পাশের খাল পাড় থেকে ভেসে আসছে নবজাতকের কান্নার শব্দ। তখনও কেউ বুঝে ওঠেননি কি ঘটতে চলেছে। নবজাতকের কান্নার শব্দ পেলেই থমকে যাচ্ছিলেন পিঠা তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকা ওসমানের মা, স্ত্রীসহ অন্য নারীরা। কান্নার শব্দ থেমে গেলে আবারও কাজে ফিরছিলেন তারা। এভাবেই চলে রাত ১টা পর্যন্ত।
কিন্তু কৌতুহল কাটেনি ওসমানের মা মনোয়ারা বেগমের। কোনো রকম রাত কাটিয়ে ভোরে ফজরের নামাজের পর পর মনোয়ারা বেগম খাল পাড়ে ছুটে আসেন। কিছুটা হাঁটার পর দেখেন শুকনো খালের এক পাশে কাঁদা মাখা অবস্থায় পড়ে আছে ফুটফুটে এক ছেলে নবজাতক। প্রথম মৃত ভাবলেও কাছে গিয়ে দেখেন বুক নড়ছে। পরে খাল থেকে ওই নবজাতকে নিয়ে আসেন বাড়িতে।
খবর পেয়ে ওই ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার নবজাতককে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা শেষে নিয়ে যান নিজ ঘরে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সকালে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বাড়েরা গ্রামে। বাড়েরা দক্ষিণ বাজারের ব্রিজ সংলগ্ন খাল থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধার করা হয়।
বাড়েরা ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার শাহিন আলম জানান, সকালে ঘটনাটি শোনার পর ওসমানদের বাড়িতে যাই। গিয়ে বাচ্চাটির আশঙ্কাজনক অবস্থা দেখে দ্রæত চান্দিনার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখানে শিশু ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসা সেবা দেই। পরে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবগত করে আমার বাড়িতে নিয়ে যাই। বর্তমানে আমার স্ত্রী ফাতেমা বেগম ওই নবজাতককে মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছেন। বাড়েরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. খোরশেদ আলম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, এলাকায় কোন পরিবারে এমন ঘটনা ঘটেছে তা আমরা খুঁজে দেখার চেষ্টা করছি।
চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল ফয়সল জানান, তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থাগ্রহণ করবো। চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নেহাশীষ দাশ জানান, ঘটনা জেনেছি। খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণ করবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন