আগামী ২৪ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো জোরদার করার উদ্দেশ্যে ভারত সফর করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ সফরকে কেন্দ্র করে উভয় দেশের বাণিজ্যিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যুসহ মানবাধিকার পরিস্থিতি গুরুত্ব পাবে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। এরই মধ্যে গত ছয় মাস ধরে কাশ্মীরকে অবরুদ্ধের ঘটনায় পদক্ষেপ নিতে ট্রাম্পকে চিঠি দিয়েছেন মার্কিন সিনেটররা।
চিঠিতে কাশ্মীর সমস্যা এবং পাক-ভারত বিরোধ সমাধানে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে মধ্যস্থতার আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চারজন সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন, টড ইয়াং, বেন কার্ডিন ও লিন্ডসে গ্রাহাম স্বাক্ষরিত একটি চিঠি বৃহস্পতিবার ট্রাম্পকে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে জম্মু-কাশ্মীরে মানবাধিকার পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ৫ আগস্টের আগে ও পরে আটক করা হয়েছে বহু মানুষ। ট্রাম্পকে তার প্রভাব ব্যবহার করে এসব মানুষকে মুক্তির ব্যবস্থা করতে আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন এমপিরা। খবর ডনের।
ওই চিঠিতে ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে তারা লিখেছেন, আপনার প্রতি আমাদের অনুরোধ, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি আপনি আহ্বান জানান কাশ্মীরে টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবা পুরোপুরি চালু করতে, অচলাবস্থা ও কারফিউ তুলে নিতে এবং আটক কাশ্মীরিদের মুক্তি দিতে।
চিঠিতে সিনেটররা লিখেন, ‘কাশ্মীরের অধিকাংশ জায়গায় ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ। কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এত দিন পর্যন্ত ইন্টারনেট সেবা বন্ধের ঘটনা নজিরবিহীন। ইন্টারনেট সেবা বন্ধের কারণে সেখানকার ৭০ লাখ মানুষের স্বাভাবিক জীবন বিঘিœত হচ্ছে।’
‘‘নিরাপত্তার অজুহাতে কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রীসহ হাজার হাজার নাগরিককে আটক করে রাখা হয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলাফল মারাত্মক হতে পারে।’
চিঠিতে কাশ্মীরে মোট কতজনকে বন্দি করে রাখা হয়েছে, যোগাযোগের মাধ্যমগুলি কতটা সক্রিয়, কূটনীতিক এবং বিদেশি সাংবাদিকরা আদৌ কাশ্মীরের সর্বত্র যাতায়াত করতে পারছেন কিনা, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তার প্রতিবেদন প্রকাশের জন্যও ট্রাম্পের নিকট আবেদন জানিয়েছেন সিনেটররা।
এছাড়া সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ইস্যু নিয়েও চিঠিতে সিনেটররা মতামত প্রকাশ করেছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘ভারত সরকার আরও এমন কিছু পদক্ষেপ করেছে, যার কারণে একটি বিশেষ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার খর্ব হতে পারে। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের চরিত্রও নষ্ট হতে পারে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন সেই পদক্ষেপগুলির মধ্যে অন্যতম।’
এছাড়া সিএএ কার্যকর হলে ভারতে কত শতাংশ নাগরিক রাষ্ট্রহীন হতে পারেন এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) কার্যকর হলে কত শতাংশ মানুষ প্রভাবিত হতে পারে, এসব বিষয়েও প্রতিবেদন প্রকাশের আবেদন জানিয়েছেন সিনেটররা।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর কাছে একটি চিঠি লিখেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন কংগ্রেসওম্যান প্রমিলা জয়াপাল। কাশ্মীরে সব রকম যোগাযোগ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ভারতীয় অবরোধ তুলে নিতে, আটক ব্যক্তিদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে ভারতের প্রতি চাপ সৃষ্টির জন্য তিনি আহ্বান জানিয়েছেন পম্পেওর প্রতি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন