ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য ৫জি ইকোসিস্টেমে আসিয়ান অঞ্চলে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ বা সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার আহবান জানিয়েছেন আসিয়ান ইকোনমিক কমিউনিটি (এইসি) এর ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল ড. আলাদিন ডি. রিল্লো। বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে অবস্থিত ‘হুয়াওয়ে সাইবার সিকিউরিটি ট্রান্সপারেন্সি সেন্টার’ পরিদর্শনকালে তিনি এই আহবান জানান। “হুয়াওয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ যেন নিশ্চিত হয়, সে বিষয়ে সচেষ্ট আছি আমরা। যুৎসই অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে একটি কার্যকর ৫জি ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার সক্ষমতা বিবেচনা করলে হুয়াওয়ের মতো বেসরকারিখাতের প্রতিষ্ঠানগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
তিনি আরো বলেন, “গোটা বিশ্ব দারুণভাবে আন্তঃসংযুক্ত এবং একীভূত। আমাদের সবার লক্ষ্যই এক, কাজেই সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে আমাদেরকে একসাথে কাজ করতে হবে। এর ব্যত্যয় কারো জন্যই ভালো ফল বয়ে আনবে না।“
‘ডিজিটাল ইন্টেলিজেন্ট ওয়াল্ড’, যেটি ২০৩০ সালের মধ্যে আত্মপ্রকাশ করবে বলে ভবিষ্যৎবাণী করা হয়েছে, সেটি বিনির্মাণে অংশীদার প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ তৈরি করার মাধ্যমে বিভিন্ন শিল্পখাতের ডিজিটাল রূপান্তর ত্বরান্বিত করতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে উৎসাহ যোগানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আসিয়ান ইকোনমিক কমিউনিটি।
“আসিয়ানে আমরা ডিজিটালাইজেশনের ওপর খুব জোর দিচ্ছি। আর সেটি করার জন্য আমাদের দরকার উপযুক্ত অবকাঠামো”-বলেন ড. রিল্লো। তিনি আরো বলেন, “ভিয়েতনামের নেতৃত্বে এবছর আমরা ৫জি চালু করার চেষ্টা করছি, যেটা ডিজিটাল রূপান্তর এবং বাজার একীভূতকরণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি ভিত্তি।”
“২০১৯ সালে আসিয়ানের ডিজিটাল অর্থনীতি প্রথমবারের মতো ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছে, ২০২৫ সাল নাগাদ এটি ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। কাজেই সরকার, ব্যবসা এবং সমাজের কাছে ডিজিটাল রূপান্তরটা কেবল একটি বিকল্প হিসেবে সীমাবদ্ধ নয়, বরং অর্থনীতি এবং ব্যবসায়িক ক্ষমতায়নের প্রশ্নে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি বিষয়।”
আসিয়ান অঞ্চলে এখন ইন্টারনেট, ডিজিটাল, সামাজিক মাধ্যম এবং মোবাইলের কার্যক্রম দ্রুত গতিতে বাড়ছে। এখানে ইন্টারনেট ব্যবহারের হার প্রায় ৬৫%; ব্যবহারকারীর সংখ্যা বিবেচনায় যা ৪০০ মিলিয়নেরও বেশি। এ অঞ্চলের বেশির ভাগ দেশ এবং ক্ষেত্রে যেহেতু ‘ডাবল ডিজিট’ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, সে কারণে ডিজিটাল খাতটি এখন বেশ আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। এই সময় এখানে সাইবার সুরক্ষা বাস্তবায়ন করা খুবই জরুরি, কারণ এ অঞ্চলে নতুন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন সবচেয়ে বেশি এবং সামনে এটি আরো বাড়াতে থাকবে।
“এ জন্যই আমরা আসিয়ানভূক্ত রাষ্ট্রগুলোকে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতি উৎসাহ যোগাচ্ছি। বেসরকারি ওই সব প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতাও আমাদের দরকার, যারা হুয়াওয়ের মতো নির্ভরযোগ্য এবং শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। বিশেষত: উদ্ভাবন-বান্ধব ইকোসিস্টেম তৈরি ছাড়াও বিগ ডেটা, ডেটা প্রাইভেসি এবং সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কিত প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলির জবাব দিতে যারা সক্ষম।“ বলেন ড. রিল্লো।
তার মতে, ডিজিটাল রূপান্তরের ক্ষেত্রে এ অঞ্চলে সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বিশেষত: ৫জি, এআই এবং আইওটি ভিত্তিক ডিজিটাল অর্থনীতির সম্প্রসারণে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
“সাইবার সুরক্ষায় হুয়াওয়ে যেভাবে কাজ করছে, তাতে আমরা রীতিমত মুগ্ধ। হুয়াওয়ে সাইবার সিকিউরিটি ট্রান্সপারেন্সি সেন্টার ঘুরে দেখার সময় প্রতিটি বিষয় তারা দারুণভাবে আমাদেরকে ব্যাখ্যা করে বুঝিয়েছে। আসিয়ান অঞ্চলের ‘শিল্প বিপ্লব ৪.০’র যুগে সাইবার সুরক্ষা নিশ্চিত করা কেন এতোটা জরুরি, তা আমরা এখন ভালোমতো বুঝতে পারছি।“ বলেন ড. রিল্লো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন