করোনা আতঙ্কে বিদেশফেরত প্রবাসীরা কোয়ারেন্টাইনে না যেতে চাওয়ায় তাদেরকে ‘নবাবজাদা’ বলে মন্তব্য করে তোপের মুখে পড়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। রেমিটেন্সযোদ্ধাদের নিয়ে তার এই বিতর্কিত মন্তব্য ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয় সামাজিক মাধ্যমে। নিন্দার ঝড় তুলেছেন সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ।
রোববার রাজধানীতে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে (বিআইআইএসএস) এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীরা দেশে আসলে নবাবজাদা হয়ে যান। তারা কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ার বিষয়ে খুব অসন্তুষ্ট হন। ফাইভ স্টার হোটেল না হলে তারা অপছন্দ করেন।
মন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্যের সমালোচনা করে ফেইসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল লিখেছেন, ‘‘নবাবজাদা, নাকি হারামজাদা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। তিনি বলেছেন, বিদেশ থেকে ফিরে প্রবাসীরা নবাবজাদা হয়ে যায়।আমার মতে, এটাই হওয়া উচিত। আমাদেরও উচিত তাদের নবাবজাদার মতো ট্রিট করা। কারণ এদেশটা টিকে আছে প্রবাসীদেরই ঘামে-পরিশ্রমে, রেমিটেন্সে। বিদেশ থেকে ফিরে নবাবজাদা হলে তাই সমস্যা নেই। সমস্যা হচ্ছে বিদেশ থেকে ফিরে কেউ হারামজাদা হয়ে ওঠলে। হারামজাদা হওয়ার চেয়ে নবাবজাদা হওয়া ভালো।’’
সাংবাদিক তাজুল ইসলামি তপন লিখেছেন, ‘‘তারা তো আপনাদের মতো ভোট চুরি, টেন্ডারবাজি, দূর্নীতি কিংবা কালো টাকার পাহাড় গড়ে তুলেনা। তারাতো জনগণের টাকায় পোদ্দারি দেখায় না। হে গর্দভ মন্ত্রী জানেন কি, তাদের ঘামে সচল থাকে দেশের অর্থনীতির চাকা। তারা নবাব হবেনা তো রাতের বেলায় ভোট চোরেরা নবাব হবে! অপদার্থদের হাতে মন্ত্রীত্ব গেলে যা হয় আরকি!’’
শামিসুজ জামান নায়েম লিখেছেন, ‘‘আসুন দেখে নেই কে নবাবজাদা আর কে হারামজাদা। নবাবজাদা- বিদেশের টাকা আয় করে দেশে আনে হারামজাদা- দেশের টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করে।’’
মোস্তফা ফিরোজ লিখেছেন, ‘‘নবাবজাদাদের নবাবজাদা বলার কি আছে? আমরাইতো এই প্রজাতন্ত্রের মালিক। শুধু প্রবাসী কেন দেশের সাধারণ মানুষ সবাই নবাবজাদা। আর যারা এই নবাবজাদাদের সেবা করতে চাকরি করেন তারা হচ্ছেন সেবক। সেবকদের কাজই হচ্ছে নবাবজাদাদের সেবা করে যাওয়া।’’
সাইদুর রহমান লিখেছেন, ‘‘কি বলবো যে শ্রেণীর লোকদের কারনে আজ দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নতির দিকে তারা আজ অবহেলিত।আর যারা দিব্যি এসি গাড়ি বাড়িতে আলীসান ভাবে জীবন যাপন করছে তাদের মুখে নেই কৃতজ্ঞতা। কি করে যে এরা মন্ত্রীত্ব পায়।’’
আবু ইশা লিখেছেন, ‘‘সমস্যা হলো শিক্ষা দ্বিক্ষা এতো করেছে এই বিষয়টি তার মধ্যে হারিয়ে গেছে। সব কর্মচারীরা ভাবা শুরু করছে তারা দেশের মালিক, আমজনতা চাকর বাকর। তারা লক্ষ করছে তারা লাঠি তুললে আমজনতা লেজ গুটিয়ে পালায়। এটার মজা তারা নিবে না?’’
ইয়েসমিন বারি লিখেছেন, ‘‘এরা জীবনে সাধারণ জনগণের সাথে মিশতে পেরেছে কিনা সন্দেহ আছে। উড়ে এসে জুড়ে বসা মন্ত্রী হয়ে জনগণের ট্যাক্সের টাকা শ্রাদ্ধ করে চামারের মতো কথা এরাই বলতে পারে! এক ভাই জনগণের চারশো কোটি টাকা চুরি কে কিছুই না আর রাবিশ, ভোগাস বলে হুংকার ছাড়ে আর এই অসভ্য.. প্রবাসীদের বলে নবাবজাদা!!! কতো বড় সাহস!!।’’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন