গরিবের জন্য ত্রাণ চাওয়ায় কুমিল্লার দেবিদ্বারে আশেকে এলাহী নামের এক যুবককে তুলে নিয়ে পিটিয়েছেন এক ইউপি চেয়ারম্যান। এসময় ওই যুবককে ৪ ঘণ্টা আটকে রেখে কয়েক দফা নির্যাতনও চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আব্দুল হাকিম খাঁন উপজেলার ১০ নম্বর দক্ষিণ ঘুনাইঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। এদিকে এই ঘটনার একটি ভিডিও গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। তবে ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার ওই ইউপি ভবনের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে। নির্যাতিত যুবক আশেকে এলাহী ঘুনাইঘর এলাকার বাসিন্দা।
আশেকে এলাহী জানান, করোনার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষদের মধ্যে তিনি ব্যক্তিগতভাবে স্থানীয় ১১০ জনকে ত্রাণসামগ্রী দিয়েছেন। এরপর স্থানীয় আরও অনেকে তার আছে এলে তিনি তাদের ত্রাণ সামগ্রী দিতে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম খাঁনকে অনুরোধ জানান। এজন্য কর্মহীন হয়ে পড়া ৫৯ জনের একটি তালিকা নিয়ে চেয়ারম্যানের কাছে গেলে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এরপর চেয়ারম্যান ত্রাণ দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি তালিকা নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাছেও যান। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লেখালেখি করার অভিযোগ এনে চারজন চৌকিদার দিয়ে আশেকে এলাহীকে বাড়ি থেকে তুলে আনতে পাঠান ওই চেয়ারম্যান।
তার অভিযোগ, বাড়ি থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বন্দি করা হয়। এরপর তাকে দফায় দফায় তিনবার মারধর করা হয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় এবং ফেসবুকে চেয়ারম্যানের পক্ষে ভিডিও বার্তা দেয়ার পর বিকাল ৪টায় তাকে সেখান থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। একই সঙ্গে পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে কোনো সক্রিয়তা দেখালে তার বিরুদ্ধে পঞ্চাশটির বেশি মামলার হুমকি দেন চেয়ারম্যান। এছাড়া বাড়াবাড়ি করলে তাকে জামায়াত-শিবির বানিয়ে মামলায় জড়ানো হবে বলেও হুমকি দেন তিনি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম বলেন, আমি তাকে মারধর করিনি। আমি তাকে কেন মারব, সে আমার ভাতিজা। আর আমি তার বিরুদ্ধে কেন পঞ্চাশটা মামলা করব?
এ প্রসঙ্গে দেবিদ্বার থানার ওসি মো. জহিরুল আনোয়ার বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে আমি বিষয়টি জানতে পেরেছি। তবে এ ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করেনি এখনো। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন