রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

ঝিনাইগাতীতে শসার বাম্পার ফলন : উৎপাদন খরচ না উঠার আশঙ্কায় কৃষকের মাথায় হাত

প্রকাশের সময় : ২১ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এস.কে সাত্তার, ঝিনাইগাতী (শেরপুর) থেকে

উপজেলার সবজি গ্রাম হিসেবে পরিচিত এলাকাগুলোতে এবার শসার ভালো ফলন হলেও উপযুক্ত দাম না পেয়ে কৃষকের এখন মাথায় হাত পড়েছে। তাদের উৎপাদিত শসা বিক্রি করতে হচ্ছে পানির দরে। মানিককুড়া, ভারুয়া, হলদিগ্রাম, গারোকুনা, সন্ধ্যাকুড়া, প্রতাবনগর, সারিকালিনগর, দড়িকালিনগর, বালুরচর, লঙ্কেশ্বর ইত্যাদি গ্রামসমূহে শত শত একর জমিতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শসা, চিচিঙ্গা এবং কুমড়ার চাষ করেছেন ৫ শতাধিক কৃষক। তারা সবাই প্রান্তিক চাষী। চাষিদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, এবার শসার আবাদে তাদের চরম লোকসান গুনতে হচ্ছে। রমজানের প্রথমদিকে শসার ভালো দাম পেলেও বর্তমানে দাম একেবারেই পড়ে গেছে। বাজারে প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০ টাকায়। এতে তাদের উৎপাদন খরচও উঠছে না বলে আক্ষেপ করে জানান, অনেকেই চড়া সুদে ঋণ নিয়ে আবাদ করেছেন। এখন তারা কীভাবে ঋণের টাকা পরিশোধ করবেন ভেবে কোনো কুলকিনারা পাচ্ছেন না। এদিকে, আবহাওয়ার পরিবর্তনে সবজি ক্ষেত আক্রান্ত হচ্ছে নতুন নতুন রোগ-বালাইয়ে। কৃষক জিয়াউল, সিদ্দিক, মিস্টার, আইয়ুব আলী, ছানা মিয়া, ইব্রাহিম আমেজ উদ্দিন তারা সবাই প্রান্তিক চাষী। তারা জানান, মাত্র ১০ থেকে ৪০ শতক জমিতে শসা এবং চিচিঙ্গার চাষ করেছেন। জমি তৈরি, মাচা তৈরি, বীজ বপন, মাচা বা জাংলা তৈরি, নিড়ানি, সেচ, রাসায়নিক সার প্রয়োগ, কীটনাশক এবং ছত্রাকনাশক কেনার পর এখন বলতে গেলে তারা নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন এনজিও হতে অতিরিক্ত সুদে ঋণ নিয়েও খরচ চালাতে না পেরে বাধ্য হয়ে চড়া সুদে আবারো ঋণ নিতে দ্বারস্থ হচ্ছেন গ্রাম্য মহাজনদের কাছে। প্রসঙ্গত, এসব এলাকার জমি নিচু হওয়ায় বছরের ৬ মাস পানি জমে থাকায় আমন ফসল মোটেও হয় না। তাই ইরি-বোরোর অর্থাৎ এক ফসলি জমি এগুলো। গত ক’বছর ধানের দাম না পাওয়ায় ইরি-বোরো আবাদে আগ্রহ কমে গেছে কৃষকের। ফলে অনেকেই সামান্য জমিতে ধান আবাদ করে, বাদ-বাকি জমিতে শীতকালীন সবজী চাষ করেছেন বলে জানান কৃষকরা। গত ক’বছরে সবজি চাষে অনুকূল আবহাওয়ার জন্য অনেকেই লাভের মুখও দেখেছেন। আর সে আশায়ই এবারও চাষাবাদ করেছেন শসা, চিচিঙ্গা ও কুমড়া। কিন্তু বিধিবাম! বৈরী আবহাওয়ায় এবার দেখা দিয়েছে নতুন নতুন যত রোগ-বালাই আর নানাবিধ সমস্যা। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (প্রাক্তন বিএস) এলাকায় আসেন কিনা তা জানতে চাইলে কৃষক জিয়াউল, সিদ্দিক, ওসমান, মিস্টার, আইয়ুব আলী জানান, কৃষি বিভাগের লোকজন এলাকায় আসেন ঠিকই, কিন্তু গরিবের দিকে নজরটা একটু কমই বুঝলেন না। তাই বেশিরভাগ কৃষক ক্ষেতে সমস্যা হলে তাদের ডাক্তার-কীটনাশক ব্যবসায়ীদেরই পরামর্শ নিয়ে থাকেন এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের পরামর্শের ওপরই নির্ভরশীল এখানকার কৃষকসমাজ, এমন দাবি করেছেন কেউ কেউ। ঘটনার সত্যতা জানতে উপজেলা কৃষি অফিসার কোরবান আলীর মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি জানান, জরুরি মিটিংয়ে আছি। তবে অভিযোগগুলো সঠিক নয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন