ফটিকছড়ি’র সীমান্তবর্তী বাগান বাজারে এক ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম এবং প্রতিবাদে ইউপি কার্যালয়ে হামলা-ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিবদমান দু’গ্রুপের উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে এলাকায় বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আ’লীগের সদস্য ইউপি চেয়ারম্যান রুস্তম আলী বনাম ফটিকছড়ি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাজুর দু’টি বিবদমান গ্রুপ রয়েছে। গত সোমবার (১১ মে) রাত সাড়ে ১২টায় ভূজপুর থেকে বাড়ী ফেরার পথে ফেনী-রামগড় সড়কের স্থানীয় বাগানবাজার বড়বিল নার্সারী মসজিদের সামনে পৌঁছলে সাজু গ্রুপ সমর্থিত ছাত্রলীগ নেতা জয় চন্দ্র দে (২৫) প্রতিপক্ষ গ্রুপের হামলার শিকার হয়। প্রতিপক্ষরা সিএনজি গতিরোধ করে তাকে চাইনিজ দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় সে দৌঁড়ে পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পায়। বর্তমানে সে রামগড় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছে। তার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১২ মে) সকাল ১০টায় জয় দে’র অনুসারী লোকজন বাগান বাজার ইউপি কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে। এ নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান রুস্তম আলী বলেন, আমি ত্রাণ বিতরণ কাজ শেষে বাসায় পৌঁছার পরপরই হঠাৎ করে এক দল দুর্বৃত্ত হামলা চালিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের ইলেকট্রিক বোর্ড, আমার ও সচিবের অফিস কক্ষ, ৪টি মোটর সাইকেল, তথ্য কেন্দ্রের কম্পিউটার, কি-বোর্ড ভাঙচুর করে, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি নিচে ফেলে দেয় এবং তথ্য কেন্দ্রের একটি ল্যাপটপ, ত্রাণের চাউল লুট নিয়ে গেছে। এতে বাধা দেয়ায় দফাদার মোহাম্মদ নূরু এবং চৌকিদার মোঃ আক্তার মিয়া আহত হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে রামগড় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। খবর পেয়ে ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সায়েদুল আরেফিন, ভূজপুর থানার ওসি শেখ আব্দুল্লাহ, দাঁতমারা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ সোহরাওয়ার্দী সরোয়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
অপর দিকে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ছাত্রলীগ নেতা জয় চন্দ্র দে মোবাইলে জানায়, গত ৫ মে মঙ্গলবার রাতে রামগড় চা বাগান মোড়ে ফেন্সিডিল ও অবৈধ কাপড় ভর্তি ৪টি টমটম এবং ৩টি সিএনজি দেখে আমরা গতিরোধ করে জানতে চাই- গাড়ীর ভেতর কি? তারা জানায়- এ গুলো চেয়ারম্যানের ভাই ও ছেলের মালামাল। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই পাচারকারীরা আমাদের ধাওয়া দিয়ে মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়। পরদিন তাদের লোকজন আমার খালত ভাই আপন কর্মকারকে মেরে তাদের ঘরে গিয়ে ভাংচুর চালায় এবং আমার খালুকেও হাত ভেঙ্গে দেয়। আমি তাদের রামগড় হাসাপতালে নিয়ে ৫দিন চিকিৎসা দেই এবং ওই ঘটনায় গত সোমবার (১১ মে) সন্ধ্যায় মামলা রজ্জু করতে ভূজপুর থানায় যাই। সেখান থেকে ফেরার পথে সিএনজির গতিরোধ করে চেয়ারম্যান রুস্তুম আলীর ভাই আকতার-আলমগীর ও যুবলীগের সবুজ-রুবেলের নেতৃতে দা-কিরিচ নিয়ে আমার উপর আক্রমণ করে।
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় উদ্ভূত পরিস্থিতির আশংকায় আতংক বিরাজ করছে। অন্যদিকে চেয়ারম্যান রুস্তুম আলীর অফিস ভাংচুরের প্রতিবাদে উপজেলা ছাত্রলীগ তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ সভা করেছে উপজেলা সদরে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন