মাঝ-জ্যৈষ্ঠ প্রায়। তবুও নেই আপাতত ভরা গ্রীষ্মের ‘স্বাভাবিক’ তাপদাহ। আজ বুধবার সাত সকাল থেকে চট্টগ্রামের আকাশে জমেছে মেঘ। শুরুতে মেঘ-বৃষ্টি-রোদের খেলা। অল্পক্ষণে ঘনকালো মেঘে ছেয়ে গিয়ে আকাশতলে বন্দরনগরীতে রাতের আঁধার নেমে আসে। সকাল ৯ টা থেকে হিমেল দমকা ও ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বর্ষণ। হেড লাইট জ্বালিয়ে সড়কে চলছে গাড়ি। সাড়ে ১০টায় বৃষ্টিপাতের মাত্রা বেড়ে চলে। বর্ষণে নগরীর অনেকটাই খাঁ খাঁ সড়ক রাস্তাঘাট হচ্ছিল প্লাবিত।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর সংলগ্ন এলাকায় বিস্তৃত রয়েছে।
এই দুই প্রভাব মিলিয়ে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আজ দমকা ও ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত, কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। আজ তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টির প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে।
করোনাকালে আবহাওয়া-প্রকৃতির ‘সদয়’ আচরণ! বছরের উষ্ণ মাসেই এবার শীতল সিক্ত শহর-জনপদ। পরিবেশ-প্রকৃতি রাজ্যে জাগরণের মেলা। আদিগন্ত ডানা মেলেছে গাছপালা, লতা-গুল্ম, সবুজ-সজীবতা, ফুল-পাখি-প্রজাপতিরা।
গত এপ্রিল থেকে চলতি মে (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ) মাসে গরমের বদলে সুশীতল আবহাওয়া। শুধু কয়েকটা দিন ঘাম ঝরানো তাপদাহ ছিল ঘূর্ণিঝড় আমফান আঘাত হানার দিন ২২ মে পর্যন্ত। করোনায় ভীত-বিহ্বল অশান্ত মানুষের জীবনযাত্রা। ঠিক এ সময় স্বস্তির বৃষ্টির পরশ ‘এখন জ্যৈষ্ঠ মাস’- তাও যেন ভুলিয়ে দিচ্ছে।
পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি ঘিরেও নগরীর চেহারায় জীবনযাত্রায় নেই কোন নয়া পরিবর্তন। সেই একই দৃশ্য ফাঁকা নগরী। মানুষের প্রায় কোলাহলহীন রাতের ভুতূরে শহর। ঘরবন্দী মানুষ।
বঙ্গোপসাগর উত্তাল-
বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপে তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। এতে করে সমুদ্র আবারও উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখানো হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় আমফান দুর্বল স্থল লঘুচাপ আকারে ভারতের দিকে কেটে গেলেই সমুদ্র বন্দরসমূহে সতর্ক সঙ্কেত প্রত্যাহার করা হয়। তবে হঠাৎ বৈরী আবহাওয়ায় বন্দরসমূহকে ফের সতর্ক সঙ্কেত দেখানো হচ্ছে।
সতর্কবার্তায় আবহাওয়া বিভাগ জানায়, উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
সমুদ্রে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য এবং সেই সঙ্গে অমাবস্যার সক্রিয় প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট উঁচু মৃদু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন