মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

তিউনিশিয়ায় চাকরীর দাবিতে বিক্ষোভ, তুমুল সংঘর্ষ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০২০, ১১:৫৯ এএম

তিউনিশিয়ায় চাকরির দাবিতে ডাকা বিক্ষোভ সমাবেশে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের তুমুল সংঘর্ষ হয়। এতে নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের সঙ্গে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়েছে বিক্ষোভকারীদের। তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহামেদ জেকর বলেছেন, রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানের বাইরে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
২০১৭ সালে সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দেশের তেল ও গ্যাসক্ষেত্রে বেকার হাজার হাজার মানুষকে চাকরির ব্যবস্থা করবে সরকার। সেই দাবিতে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে আসেন। কয়েক সপ্তাহ ধরে তারা প্রত্যন্ত আল কামোর পাম্পিং স্টেশনের চারদিকের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন, যাতে কোনো তেলবাহী ট্যাংকার সেখানে প্রবেশ করতে না পারে।
তাদের এ বিক্ষোভ ছিল শান্তিপূর্ণ। রোববার তারা তাতাউনি শহরে বিক্ষোভ করে। এদিন সেখানে টায়ারে আগুন দেয়। নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। তাদের দাবি, প্রতিশ্রুত চাকরি দিতে হবে এবং অধিকারকর্মী তারেক হাদ্দাদকে মুক্তি দিতে হবে। উল্লেখ্য, তারেক হাদ্দাদকে আগের দিন কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপের পর নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা গ্রেপ্তার করে। এই আন্দোলনে তিনি মূল হোতাদের একজন।
তাতাউনির গভর্নর আদেল ওয়েরঘি বলেছেন, কর্তৃপক্ষের ‘ওয়ান্টেড’ তালিকায় ছিল হাদ্দেদ। এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু বলেন নি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, রোববার পুলিশ স্টেশনে হাতবোমা নিক্ষোপ করে একদল বিক্ষোভকারী। এরপরই পুলিশ সেখান থেকে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে সরকারের এমন পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে তিউনিসিয়ান ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশন ইউজিটিটি। তাতাউনিতে একটি সাধারণ ধর্মঘটে কর্তৃপক্ষের অতিমাত্রায় ও অন্যায় শক্তি প্রয়োগের নিন্দা জানিয়েছে তারা।
সোমবার দোকানপাট খোলা ছিল। তবে ধর্মঘটকে সামনে রেখে সরকারি সেবাখাত ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ছিল বন্ধ। এদিনও তাতাউনিতে আল কামোর পাম্পিং স্টেশন ছিল অবরুদ্ধে। বিক্ষোভকারীরা চাকরির দাবিতে তিন মাস ধরে এই তেলক্ষেত্রটি অবরুদ্ধ করে রাখে ২০১৭ সালে। বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তিতে তখন স্বাক্ষর করেন কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রী। এতে তাতাউনিতে ৮ কোটি দিনার বিনিয়োগ করে নতুন কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। ফলে বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে। কিন্তু তাতাউনিতে ইউজিটিটির শাখা থেকে বলা হয়েছে, সরকারের সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয় নি। ফলে মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে পথে নেমেছে।
বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, বর্তমানে তিউনিসিয়ায় বেকারত্বের হার প্রায় ১৫.৩%। ২০১১ সালে আরব বসন্তের পর এ হার ছিল ১৬.৭%। কিন্তু বিপ্লব পূর্ববর্তী সময়ে তিউনিসিয়ার বেকারত্বের হার ছিল মাত্র ১৩%।
আরব বসন্তের ফলে তিউনিসিয়ার রাষ্ট্রীয় নেতৃত্বে পরিবর্তন আসলেও জনসাধারণের ভাগ্যের খুব একটা পরিবর্তন ঘটেনি। বহুবিধ সমস্যায় জর্জরিত তিউনিসিয়ার জনগণ আবারো নিজেদের অধিকার আদায়ে সহিংস হয়ে উঠেছে। আবারো বিক্ষোভে উত্তাল আফ্রিকার দেশটি। সূত্র: আলজাজিরা

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন