শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বিগত বছরগুলির মধ্যে সবচেয়ে খারাপ সম্পর্ক

ভারত-প্রতিবেশী বিবাদ ও সুযোগে চীন- প্রথম পর্ব

ফরেন পলিসি | প্রকাশের সময় : ২৪ জুন, ২০২০, ৯:২৪ পিএম | আপডেট : ৯:২৫ পিএম, ২৪ জুন, ২০২০

২০১৯ সালের ৯ আগস্ট এক প্রতিবাদকারী পাকিস্তানের কোয়েটায় ভারতবিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি এবং একটি ভারতীয় পতাকার ওপর দাঁড়িয়ে -সংগৃহীত


ভারত প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সম্পর্কের গুরুত্ব অবহেলা করে একের পর এক তাদের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়ছে। শ্রীলঙ্কা, নেপাল এবং বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশিগুলোকে অবজ্ঞা করায় অঞ্চলটিতে রাজনৈতিক সমর্থন হারাচ্ছে দেশটি এবং সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে চীন। ফরেন পলিসির এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি ২ পর্বে প্রকাশ করা হল :

ভারত ১৯৭৫ সালের পর গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো চীনের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী সীমান্ত সংঘর্ষে কোনোমতে ক্ষতি সামলে নিয়েছে। ইতিহাসে একটু পেছনে তাকালেই ভারতের বর্তমান পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা সহজ হবে এবং তা করলে নয়াদিল্লি বুঝতে পারবে যে, তার সমস্যাগুলো কোনোভাবেই আর বেইজিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; প্রতিবেশীদের প্রত্যেকের সাথে ভারতের সম্পর্ক বর্তমানে হতাশাজনক।
বিষয়গুলো অতি সহজেই অন্যরকম হতে পারত। ২০১৪ সালের মে’তে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই নরেন্দ্র মোদি তার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে সাউথ এশিয়ান এসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কোঅপারেশন-সার্ক সদস্য প্রতিবেশী আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা থেকে রাষ্ট্র প্রধানদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এটি একটি দক্ষ ক‚টনৈতিক চাল ছিল। কারণ ভারতের কোনও পূর্ববর্তী প্রধানমন্ত্রী এত বড় পদক্ষেপ নেননি। এটি ভারতীয় জনতা পার্টির ইশতেহারের অংশ ছিল, যা প্রতিবেশীদের সাথে ভারতের সম্পর্ক উন্নত করার প্রতিশ্রæতি দিয়েছিল।
মোদি তার ‘প্রতিবেশী প্রথমে’ উদ্যোগটি সার্কের সদস্য দেশগুলির সাথে সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেয়ার ক্ষেত্রে একটি নতুন পদক্ষেপ হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। ইতিবাচক আঞ্চলিক সম্পর্কের জন্য প্রতিশ্রæতিবদ্ধ হওয়া সত্তে¡ও নয়াদিল্লি সম্পূর্ণ অঞ্চলেই সম্পর্কের অবনতি ঘটিয়েছে।
২০১৯ সালে পাকিস্তানের সাথে ভারত প্রায় যুদ্ধে নেমে গিয়েছিল এবং দু’দেশের মধ্যে ঘন ঘন ও উচ্চ-মাত্রার সীমান্ত সঙ্ঘাত লেগেই রয়েছে। এক সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সহায়তা করলেও ভারতের বর্তমান আচরণে হতাশ বাংলাদেশও। নেপালের সংসদ সবেমাত্র একটি নতুন মানচিত্র অনুমোদন করেছে যার মধ্যে তারা ভারতের দাবিকরা জমি অন্তর্ভুক্ত করেছে, যা দু’দেশের সম্পর্ককে বিগত বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে নিয়ে ফেলেছে। পাশাপাশি, ঐতিহাসিকভাবে ভারতের সাথে জোটবদ্ধ শ্রীলঙ্কা এবং মালদ্বীপ, খুব দ্রæত চীনের প্রভাবের কক্ষপথে জোরদার অবস্থান নিয়েছে।
এদিকে আফগানিস্তান গণতন্ত্র সঙ্কটে পড়েছে, তালেবানরা শক্তি ও প্রভাব বৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে, যা বিগত কয়েক দশকের ভারতীয় বিনিয়োগ এবং ক‚টনীতির ওপর পানি ঢেলে দিয়েছে। ভারতের সাথে এখনও যুক্তিসঙ্গতভাবে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে এমন একমাত্র দেশ ভুটান। তবে এই বন্ধুত্বও ক্ষুদ্র হিমালয়ান দেশটির চীনের সাথে সীমান্ত বিরোধে ভারতের সমর্থন পাওয়ার জন্য।
২০১৫ সালের ভ‚মিকম্পের পর সে বছর এপ্রিলে নেপাল একটি নতুন সংবিধান গ্রহণের সময় বেশিরভাগ ঘরোয়া বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছিল, বিশেষত মাধেসিস নামে পরিচিত একটি আদিবাসি, যারা নেপাল-ভারত সীমান্তে বসবাস করে। তাদের বিশ্বাস ছিল যে, নতুন সংবিধানে তাদের স্বার্থের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব করা হয়নি। যেহেতু কিছু মাধেসিস উত্তর ভারতেও বসবাস করে, সেই সুযোগ নিয়ে মোদি সরকার নেপালে তাদের ভোটের ব্যবস্থা করতে দেশটির ওপর একটি অনানুষ্ঠানিক অবরোধ আরোপ করে।
অবরোধের পরিণতিতে নেপালীদের বড় ধরনের অর্থনৈতিক বিপর্যয়ক ঘটে। উদাহরণস্বরূপ, চালের দাম দ্বিগুণ হয়ে যায় এবং সরবরাহের তীব্র সঙ্কটের কারণে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার কমপক্ষে পাঁচগুণ ব্যয়বহুল হয়ে ওঠে। (চলবে)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
মোঃ নূরুল আমিন চৌধুরী ২৪ জুন, ২০২০, ১০:০১ পিএম says : 1
ভারত আমাদের বড় প্রতিবেশী, এটাই যথেষ্ট।
Total Reply(0)
Arshadul Hoque ২৪ জুন, ২০২০, ১০:০৪ পিএম says : 1
এটা মূলত অাল্লাহর গজব কেননা ভারত হিন্দুত্ববাদ কায়েম করতেই n r c...মাধ্যমে সংখ্যালুগু মুসলিমদের যে, নির্যাতন করেছে তাতে অাল্লাহর অারশ কেপে গেছে।
Total Reply(0)
Akash Ahmed ২৪ জুন, ২০২০, ১০:০৪ পিএম says : 1
চীনের ও নেপালের কাছে বাংলাদেশের জনগণের অনুরোধ আমাদের আসাম,এিপুরা, কলকাতা, এগুলো বাংলাদেশের সম্পদ, ভারতের কাছ থেকে যেন এই সম্পদ গুলো আমাদেরকে ফিরিয়ে দেয়। এই সম্পদ গুলো ফিরে পেলই বাংলাদেশের মানচিত্র পূর্ণতা লাভ করবে। প্রয়োজনে বাংলাদেশের জনগণ চীনের সাথে আছে আর দেশের সম্পদ রক্ষা করার জন্য একসাথে কাজ করবে।
Total Reply(1)
২৫ জুন, ২০২০, ১০:১৯ এএম says : 0
Mukter Jewel ২৪ জুন, ২০২০, ১০:০৫ পিএম says : 0
বাংলাদেশ ছাড়া সবাই ইন্ডিয়ার ... দিয়া রাখছে, আর এই ইন্ডিয়ান বাহিনী সীমান্তে কোনো কারণ ছাড়াই বাংলাদেশি হত্যা করে!!!! এবার বোঝ কে আসল বন্ধু????? বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়া প্রচুর ব্যবসা ও পায়, এইটা বিশেষ করে কলকাতা ও বেলোর এর ব্যবসায়ীরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। যে নেপাল আগে ভারতের অঙ্গরাজ্য মনে হতো সেই নেপালই এখন চোখ রাঙিয়ে কথা বলছে!!!!
Total Reply(0)
Ojana Path ২৪ জুন, ২০২০, ১০:০৬ পিএম says : 0
উগ্রবাদী রাজনীতি ভাল কিছু বয়ে আনতে পারে না।এটা কবে বুঝবে ভারতের রাজনীতিবিদ!!!!!!যদি এশিয়ার রাজনীতিতে রাজত্ব করতে হয়,তাহলে উদারনীতি অবলম্বন করতে হবে।কিন্তু ভারতের রাজনীতি শুধুই ভারতকেন্দ্রিক,তারা নিজেরাই বাচঁবে বাকীরা মরে যাক।এই সুযোগটাই চীন নিয়েছে।সাধারণ একটা ব্যাপার।বাংলাদেশও এই ব্যাপারে মৌন সম্মতি জ্ঞাপন করবে!!!
Total Reply(0)
Hossain M. Deloar ২৪ জুন, ২০২০, ১০:০৬ পিএম says : 0
সর্বোপুরি যা ভাবলাম, ভারতের তুলনায় সামরিক শক্তিতে চীন অনেক এগিয়ে। তবে যুদ্ধ থেমে যাবে কুটনৈতিক তৎপরতা চলছে, চিন্তার কোন কারন নাই। কিন্ত কষ্ট লাগে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের জন্য, যাদের এতগুলো সৈন্য মারা গেছে। আমরাও গভিরভাবে শোকাহত। তবে মনে পড়ে কিভাবে সীমান্তে ফেলানীসহ আরো অনেকের নিশংস্ব হত্যার করেছিল ভারতে BSF. হায়রে ভারত কোথায় গেলো আপনাদের শক্তি, এবার ম্যাচ বাংলাদেশ নয় চীন বনাম ভারত। T- twenty Match।।। Viewer- all.....?
Total Reply(0)
Sakhawat Hossain ২৪ জুন, ২০২০, ১০:০৭ পিএম says : 0
নরেন্দ্র মোদী ভারতীয়দের এই দুর্দশার কারণ। কারণ তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করেছেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক নষ্ট করেছেন।
Total Reply(0)
Al Rakib ২৪ জুন, ২০২০, ১০:০৭ পিএম says : 0
ভারতের প্রতি আর কারো আস্থা নেই। সবাই চীনের দিকে ঝুকছে। পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপাল,ভুটান, মিয়ানমার এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ও বলেছেন ভারত চীন দ্বন্দ্বে বাংলাদেশ কারো পক্ষে না। তারমানে বাংলাদেশও ভারতের পক্ষে নাই।
Total Reply(0)
aziz ২৫ জুন, ২০২০, ৬:৫১ এএম says : 0
Nepal china go ahead we are with you insaallah.we will never forget my sister felani those days are not to far we will see you soon insaallah
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন