পায়রা সমুদ্রবন্দরের জন্য এক হাজার ৩৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক প্রথম টার্মিনাল নির্মাণে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে চীনের ‘সিএসআইসি ইন্টার ন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ারিং কম্পানি লিমিটেড’-এর সঙ্গে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চুক্তিটি সম্পন্ন হয়।
টার্মিনালটি নির্মিত হবে বঙ্গোপসাগরের রাবনাবাদ নদের মোহনা ঘেঁষা কলাপাড়ার লালুয়া ইউনিয়নের চান্দুপাড়া গ্রামের মূল বন্দর এলাকায়।
পায়রা বন্দরের সভাকক্ষে চীনের ‘সিএসআইসি ইন্টার ন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ারিং কম্পানি লিমিটেড’-এর বাংলাদেশের প্রতিনিধি মি. রিচার্ড চেং এবং পায়রা বন্দর চেয়ারম্যান কমডোর হুমায়ুন কল্লোল, (এল) এনইউপি, এনডিইউ, পিএসসি, বিএন চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
এ সময় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চীনের ‘সিএসআইসি ইন্টারন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ারিং কম্পানি লিমিটেড’- এর চেয়ারম্যান মি. চেন জিচুং, ভাইস প্রেসিডেন্ট মি. ঝাও বাওহুয়াসহ অন্যান্যরা সরাসরি সংযুক্ত ছিলেন।
বন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন ) কমডোর এম জাকিরুল ইসলাম, এনডিসি, পিএসসি, বিএন। চুক্তিবদ্ধ প্রকল্প পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন। ডিআইএসএফ প্রকল্প পরিচালক ক্যাপটেন মো. মনিরুজ্জামান প্রমুখ।
‘পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষাঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ’ শীর্ষক এই প্রকল্পটির ডিপিপি ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। ডিপিপি অনুযায়ী প্রকল্পটির মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে তিন হাজার নয়শত কোটি ৮২ লাখ ১০ হাজার টাকা। প্রকল্পটি সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে ১ জানুয়ারি ২০১৯ হতে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাস্তবায়িত হবে।
কন্টেইনার ইয়ার্ড নির্মিত হলে পায়রা বন্দর থেকে বছরে প্রায় ৮ লাখ ৫০ হাজার টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডেল করা যাবে বলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে। কন্টেইনার ইয়ার্ড নির্মাণের কাজটি চলতি বছরের ১৮ জুন সিসিজিপি কর্তৃক অনুমোদিত হয়। ৩০ মাসের মধ্যে পায়রা বন্দরের এই উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করবে প্রতিষ্ঠানটি। চুক্তিভিত্তিক প্রথম টার্মিনাল নির্মাণের এই প্রকল্পের আওতায় তিন লাখ ২৫ হাজার বর্গমিটার ব্যাকআপ ইয়ার্ড নির্মাণ, প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, বৈদ্যুতিক সাব স্টেশন নির্মাণ, ওয়ার্কশপ নির্মাণ, ফায়ার স্টেশন নির্মাণ, সিএফএস শেড নির্মাণ, হাই মাস্ট পুল নির্মাণ, গেট হাউজ নির্মাণ, ফুয়েল স্টেশন নির্মাণ, আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াটার রির্জাভার নির্মাণ, পাম্প হাউজ নির্মাণ, ইন্টারনাল ড্রেন ইউটিলিটি সার্ভিস ইত্যাদি নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের বিভিন্ন কম্পোনেন্টের প্ল্যানিং, ডিজাইন, ড্রইং, প্রাক্কলন ও প্রকল্প চলাকালীন প্রকল্পের কাজের সুপারভিশনের জন্য কোরিয়ান পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কুনহোয়া-ডীইয়ং-হীরিম (জেভি)-কে নিয়োগ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন ), এনডিসি, পিএসসি, বিএন- কমডোর এম জাকিরুল ইসলাম বলেন, আগামী তিন বছরের মধ্যে পায়রা বন্দরের এই টার্মিনালের মাধ্যমে কন্টেইনারসহ সকল পণ্য খালাসে মাধ্যমে পায়রা বন্দর একটি ব্যস্ত বন্দরে পরিণত হবে। পদ্মা সেতু, লেবুখালী ব্রিজ চালু হলে দেশ-বিদেশের সকল বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হবে পায়রা বন্দরকে কেন্দ্র করে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন