মহামারি করোনাকালে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার মানুষের মাঝেও অর্থের অভাব দেখা দিয়েছে। করোনার এই বর্তমান সময়ে এখানকার নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আশীর্বাদ হয়েছে শাপলা ফুল। করোনাকালে শাপলা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে সিরাজদিখান উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শত শত পরিবার। বর্ষার মৌসুমে কৃষি জমি পানির নিচে থাকায় কৃষকের তেমন কোনো কাজ নেই তার উপর করোনার ভয়াল থাবা তো আছেই। এ পেশায় কোনো পুঁজির প্রয়োজন না হওয়ায় বিভিন্ন বয়সের লোক এ পেশা বেছে নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে।
জানা যায়, শাপলা তরকারি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এটি দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি তরকারি হিসেবে খেতেও সুস্বাধু। কেউ খায় সখ করে, আবার কেউ খায় অভাবে পড়ে। অভাবগ্রস্ত বা নিতান্ত গরীব লোকজন এ বর্ষা মৌসুমে জমি থেকে শাপলা তুলে তা দিয়ে ভাজি বা ভর্তা তৈরি করে আহার করে থাকেন। আর শহরে লোকজন সখের বসে ২-৪ দিন শাপলা তরকারি খেয়ে থাকেন। এ বর্ষায় সিরাজদিখান উপজেলার ডুবে যাওয়া আলু, ধানসহ বিভিন্ন শাক-সবজির জমিতে এখন শাপলা ফুলের সৌন্দর্য আর নয়নাভিরাম দৃশ্য এখন চখে পড়ছে। ফুটন্ত শাপলা ভোর সকালেই দেখা যায়। শাপলা ফুল সাধারণত জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে শুরু করে কার্তিক মাস পর্যন্ত পাওয়া যায়। এলাকার শাপলা সংগ্রহকারী কৃষকরা ভোর থেকে নৌকা নিয়ে চরনিমতলা, রামানন্দ, চরকমলাপুর, দানিয়াপাড়া, লতব্দী, বাহেরঘাটাসহ অন্যান্য এলাকার ডুবে যাওয়া জমি বা বিল থেকে ঘুরে ঘুরে শাপলা সংগ্রহ করে থাকে।
লতব্দী ইউনিয়নের চর নিমতলার বিল থেকে শাপলা সংগ্রহকারী মো. নুরু মিয়া জানান, এ সময়ে একেক জনে কমপক্ষে ৩০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০ মোঠা (৬০ পিছ শাপলায় ১ মোঠা ধরা হয়) সংগ্রহ করতে পারে।
উপজেলার দানিয়াপাড়া গ্রামের পাইকার জানান, শাপলা সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার থেকে দুই হাজার মোঠা শাপলা ক্রয় করে থাকি। সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে এক মোঠা শাপলা ১০ টাকা দরে ক্রয় করি। তারপর গাড়ি ভাড়া গড়ে ৩ টাকা, লেবার ১ টাকা, আড়ৎ দাড়ি খরচ ২ টাকাসহ মোট ১৭ থেকে ১৮ টাকা খরচ পড়ে । যাত্রাবাড়ি আড়তে শাপলা বিক্রি করি ২৫ থেকে ২৭ টাকা করে মোঠা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন