কঠিন সঙ্কটে ডুবে থাকা নেপালের ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সাথে আলোচনার অংশ হিসেবে চীনা রাষ্ট্রদূত হৌ ইয়াঙ্কি গতকাল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান পুষ্প কমল দাহালের সাথে বৈঠক করেছেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দাহালের একজন সহযোগী খুমল্টারের নিজ বাসভবনে তার সাথে চীনা রাষ্ট্রদূতের বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, তবে বিশদ বিবরণ দেননি।
সূত্রমতে, হৌ গতকাল সকাল ৯টার দিকে খুমল্টারের দাহালের বাসায় পৌঁছেন এবং প্রায় ৫০ মিনিটের জন্য ‘একান্তে’ আলোচনা করেন। বিগত দিনগুলিতে হৌ প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারী, প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি, ক্ষমতাসীন দলের দুই প্রবীণ নেতা এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাধব কুমার নেপাল ঝালানাথ খানাল এবং সরকারের ক’জন মন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেছেন।
বৈঠকগুলো এমন এক সময়ে হল যখন ক্ষমতাসীন দল পড়েছে গভীর সঙ্কটে, দাহাল এবং নেপালের নেতৃত্বে একটি দল ওলিকে পার্টির চেয়ারম্যান এবং প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করার জন্য চাপ দিচ্ছে। গত সপ্তাহ অবধি এ সঙ্কট এমন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, অলি এমনকি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, পদত্যাগের জন্য চাপ অব্যাহত থাকলে তিনি দল বিভক্ত করতে পারবেন।
নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি যখন গভীর সমস্যায় পড়েছিল তখন মে মাসেও হৌ ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের আবাসগুলোতে একই রকম ভাবে ঘোরাফেরা করেছিলেন। অলি, দাহাল, নেপাল এবং দলীয় অন্যান্য প্রবীণ নেতাদের সাথে বৈঠক করে হৌ তখন দলীয় ঐক্যের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
কাঠমান্ডুতে চীনা দ‚তাবাস দৃঢ়ভাবে জানিয়েছেন যে, দূতাবাস এবং রাষ্ট্রদূত সরকার, রাজনৈতিক দল, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক এবং নেপালের সর্বস্তরের মানুষের সাথে সুসম্পর্ক রাখে এবং সুবিধাজনক সময়ে তারা সর্বদা সাধারণ উদ্বেগের বিষয়ে মতবিনিময় করে।
গতকাল সকালে চীনা রাষ্ট্রদূত দাহালের বাসভবনে পৌঁছলে কৃষিমন্ত্রী ঘনশ্যাম ভুশাল এবং পর্যটন ও নাগরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী যোগেশ ভট্টরাইও খুমল্টারে ছিলেন। দুই মন্ত্রীর চলে যাওয়ার পরে হৌ ও দাহাল পরস্পর আলোচনা করেছেন। সূত্র মতে, বৈঠকে ক্ষমতাসীন দলের বিরোধ নিয়ে আলোচনা হয়।
দাহাল গ্রæপের পরে ৪৪ জন স্থায়ী কমিটির সদস্যের মধ্যে ৩০ জন ওলির বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন এবং তাদের দাবি ছিল যেন তিনি দলের চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী পদ উভয় থেকেই সরে যান। অলি ২ জুলাই হাউস অধিবেশন মুলতবি করে ইঙ্গিত দেন যে, তিনি বিভক্ত হয়ে যেতে পারেন। হাউসের অধিবেশন মুলতবি দীর্ঘায়িত করে অলি নিশ্চিত করেন যে, তাকে অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হতে হবে না।
দু’দিন পর অলি তার মন্ত্রীদের জানিয়েছিলেন যে, প্রতিদ্ব›দ্বী দলটি কেবল তাকে নয়, প্রেসিডেন্টকেও বহিষ্কারের চক্রান্ত করছে। গত এক সপ্তাহ ধরে অলি ও দাহাল ছয়টি সভা করেছেন। তারা অবশ্য কোনও চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে। সূত্র : দ্য কাঠমাÐু পোস্ট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন