শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সোনালি আসর

কবি আল মাহমুদের সঙ্গে কিছু কথা

প্রকাশের সময় : ১ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সাক্ষাৎকার : আমির সোহেল
ৎ কবি আল মাহমুদ। বাঙলা সাহিত্যের খুব বড় এক কবি। শিশুদের জন্য তিনি অনেক মজার ছড়া কবিতা লিখেছেন। ইচ্ছে ছিল তার কবি হওয়ার, তাই হয়েছেন। মাত্র ষোল বছর বয়সে রাষ্ট্রভাষা বাংলার জন্য রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের লিফলেটে লেখার কারণে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারী হওয়ায় ঘর ছেড়েছিলেন, সেই অর্থে তারপর আর ঘরে ফেরা হয়নি তার। ঘুরেছেন নানা পথে প্রান্তরে। শিখেছেন ও জেনেছেন অনেক কিছু। পত্রিকায় লেখালেখির সূত্র ধরে ১৯৫৪ সালে তিনি ঢাকায় আসেন। তার প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘লোক লোকান্তর’ (১৯৬৩) প্রকাশের মাধ্যমে তিনি স্বনামধন্য কবিদের সারিতে মর্যাদার সাথে অবস্থান করে নেন। কবিতা ছাড়াও তিনি কথাসাহিত্যে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। কাব্য ছাড়াও গল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধে এবং শিশুসাহিত্যে তার মেধার প্রমাণ দিয়েছেন। গ্রামীণ জীবন, নদী ও নারী তার লেখনির মাঝে সুনিপুণভাবে উঠে এসেছে। আল মাহমুদ ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার মোড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিতাস নদীর আবহাওয়ায় বেড়ে উঠেছেন তিনি। বার্ধক্যে এসে উপনীত হলেও তার চেতনায় ও মননে তারুণ্যে ঝিলমিল। এই জুলাই এর এগার তারিখ পাখির কবি ফুলের কবির ৮১তম জন্মদিন পালিত হল। কবির দীর্ঘায়ু কামনা করছি। তার আরো যেন অনেক লেখার স্বাদ আস্বাদন করতে পারি। যেন তিনি সুস্থ থাকেন, ভাল ভাল লেখা যেন আরো লিখতে পারেন। তার ৭৮তম জন্মদিনে মগবাজারের বাসায় একান্তে কুড়ি মিনিট কথা বলি। সেই কথার মূল অংশ তুলে ধরলাম তোমাদের কাছে।
কবিকে কেমন আছেন জিজ্ঞাসা করতেই বলেন, আল্লাহর রহমতে ভাল আছি। বললাম, আপনি কবি হতে চেয়েছেন কবি হয়েছেন, আপনি কি পরিতৃপ্ত? তিনি বলেন, আমি সংগ্রাম করেছি। ঢাকায় এসে নিজের অবস্থান তৈরি করেছি। কবিতা লিখেছি। কবি হিসেবে সবার হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছি। এর চেয়ে কবি হিসেবে আর কি চাইতে পারি। বললাম, শুনলাম আপনি মহাকাব্য লিখছেন, এখন কোন অবস্থায় আছে তা... বললেন, কিছুদূর এগিয়েছে লেখা। আমি এখন অন্ধ মানুষ। কিছু দেখি না। চাইলে আগের মত সব পারি না। তবে আশাবাদী, ভাল কিছু হবে। বললাম, সৈয়দ নাদিরা মাহমুদ, যিনি ৫৫ বছরের সঙ্গি থেকে না ফেরার দেশে চলে গেলেন; কেমন অনুভব করেন তাকে? প্রশ্নটা শুনে তিনি আবেগ তাড়িত হয়ে পড়লেন, বললেন- তাকে তো ভুলতে পারি না। সে সব সময় ছায়ার মত থেকে মায়া দিয়েছে। অনেক করেছে... তার মনের অবস্থা বুঝতে পেরে দ্রুত অন্য প্রসঙ্গ অবতারণা করলাম। বললাম, লেখক বা কবিকে লেখার জন্য পড়তে হয়, তো এই সময়ে আপনি কি পড়ছেন? বললেন, সুন্দর বলছ। লিখতে হলে পড়তে হবে, আমি এখন এডলফ হিটলারের একটি বই পড়ছি। বললাম, আচ্ছা আপনার দৃষ্টিতে বর্তমানে কেমন কবি সাহিত্যিক উঠে আসছে, যাদের মহাকাল স্মরণ করবে? বললেন, উঠে আসছে অনেকে। অনেক তরুণ লেখকের লেখা পড়ি। আমি আশাবাদী। তবে বাকিটা মহাকালই বলে দিবে। বললাম, যারা লেখালেখিতে আসছে, সেই তরুণ লেখকদের জন্য আপনার পরামর্শ কি? বললেন, তরুণরা উঠে আসুক। বাঙলা সাহিত্য আরো সমৃদ্ধ হোক এটাই চাই। তাই তরুণ যারা লেখালেখিতে আসছে তাদের প্রচুর পড়তে হবে। পড়ার বিকল্প নেই। সামনে যা পাবে তাই পড়তে হবে। দেশ-বিদেশের সকল বই বেশি বেশি পড়তে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন