বঙ্গোপসাগরে ইলিশ আহরণে ৬৫দিনের অবরোধ শেষ হলো। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর থেকেই শুরু হবে সমুদ্রযাত্রা। সাগরে রওনা হবে শরণখোলাসহ উপকূলের হাজার হাজার জেলে। এজন্য চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি। উৎসবমূখর হয়ে উঠেছে ঝিমিয়ে পড়া মৎস্যপল্লী।
বুধবার শরণখোলার রাজৈর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ঘাটে নোঙর করা ট্রলারগুলো প্রস্তুত হয়ে আছে সাগরে যাওয়ার জন্য। ট্রলারে জাল, জ্বালানী তেল, নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলতে ব্যস্ত জেলেরা। মৎস্য আড়তগুলোতে মহাজনরা হিসাব-নিকাশ কসছেন জেলেদের নিয়ে।
এসময় আড়তদার মো. মুজিবর তালুকদার, মো. কবির হাওলাদার ও মো. জামাল হাওলাদার জানান, অবরোধের দুই মাসে মহাজনরা অনেক লোকসানে পড়েছে। অবরোধ চলাকালীন জেলেদের খোরাকি হিসেবে অগ্রিম দেওয়া এবং জালা-ট্রলার মেরামত করতে গিয়ে তিন লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রতি মহাজনের। অথচ, সরকারের আইন অমান্য করে বিভিন্ন এলাকার জেলেরা সাগরে অবাধে ইলিশ আহরণ করে লাভবান হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন।
বাগেরহাট জেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি ও জাতীয় মৎস্য সমিতির শরণখোলা উপজেলা শাখার সভাপতি মো. আবুল হোসেন জানান, জেলায় গভীর সাগরে ইলিশ আহরণে নিয়োজিত দেড় সহস্রাধিক ফিশিং ট্রলার রয়েছে। এর মধ্যে শরণখোলাতে রয়েছে ৬০০ ট্রলার। এসব ট্রলার সকল প্রস্তুতি নিয়ে সাগরে যাওয়ার অপেক্ষা করছে।
বাংলাদেশ ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সহসভাপতি ও শরণখোলা বিশিষ্ট মৎস্য ব্যবসায়ী এম সাইফুল ইসলাম খোকন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও দেশের আমিষের চাহিদা পুরণে সরকারের বিজ্ঞানসম্মত সিদ্ধান্তকে অমান্য করে উপকূলের বহু অসাধু জেলে সাগরে ইলিশ শিকার করেছে। অবরোধকালীন সরকারের সুবিধা ভোগ করেও তারা মৎস্য সম্পদের ক্ষতি করেছে। সমুদ্র রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আইন প্রয়োগে শিথিলতার কারণে এমনটা হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
তিনি বলেন, অবরোধের কারণে গত বছর ইলিশ মাছ বৃদ্ধি পেয়েছে। অবরোধ পালনে সরকার আরো কঠোর হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে পর্যাপ্ত ইলিশ বাইরে রপ্তানি করা সম্ভব।
এব্যাপারে শরণখোলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় বলেন, গতবছর শরণখোলার জেলেরা সমুদ্র থেকে ৭৬০ মেট্রিকটন ইলিশ আহরণ করেছে। এবার ৮০০মেট্রিকটন লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। অবরোধের কারণে দিন দিন ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। অবরোধের এই দুই মাসে উপজেলার ছয় হাজার ৭৪৪ জন সমুদ্রগামী জেলেকে ৪০কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন