বাবরি মসজিদ ছিল, চিরকাল থাকবে। মসজিদের ভেতরে মূর্তি স্থাপণ করে পূজা করলে কিংবা নামাজ বন্ধ করে দেয়া হলেও সেটা মসজিদই থাকে। মঙ্গলবার টুইটে দেয়া এক বিবৃতিতে মুসলিম শরিয়া আইনের বরাতে এই তথ্য জানায় অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনেল ল’ বোর্ড (এআইএমপিএলবি)।
অযোধ্যায় ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের জায়গায় বিতর্কিত রামমন্দির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন হয়েছে গতকাল। তার আগের দিন বিরোধিতা জানিয়ে মুসলিম পার্সোনেল ল’ বোর্ডের পক্ষ থেকে এই বিবৃতি দেয়া হয়। সেখানে বলা হয়, ‘বাবরি মসজিদ ছিল ও সর্বদা মসজিদই থাকবে। অন্যতম উদাহরণ হল তুরস্কের হাইয়া সোফিয়া। ভেঙে পড়ার মতো কিছু হয়নি। পরিস্থিতি সর্বদা এক রকম থাকে না। সংখ্যাগরিষ্ঠদের তুষ্ট করার জন্য লজ্জাজনক একটি বিচার কখনও এর মূল অবস্থানকে পরিবর্তন করতে পারে না।’
মঙ্গলবার সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোহাম্মদ ওয়াল রাহমানির জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কোনও মন্দির বা হিন্দু উপাসনালয় ভেঙে বাবরি মসজিদ কখনই নির্মিত হয়নি। সুপ্রিম কোর্টও তার ২০১৯ সালের নভেম্বরের রায়ে আমাদের অবস্থান নিশ্চিত করেছে।’ তিনি মন্দির নির্মাণে হতাশ না হওয়ার জন্য ভারতীয় মুসলমানদের কাছেও আবেদন করেছিলেন। এদিকে, অযোধ্যা আদালতের মামলার অন্যতম বাদী হাজী মাহবুব প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে বলেছেন যে, ‘মন্দির নির্মাণের পাশাপাশি সংসদে ১৯৯৩ সালের জানুয়ারিতে যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল তাও পূরণ করা উচিত।’
প্রসঙ্গত, গত বছর ৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যা মামলার রায়ে জানায়, ‘২ দশমিক ৭৭ একর বিতর্কিত জমিটি পুরোটাই রামলালাকে হস্তান্তর করা উচিত।’ ৫ বিচারপতির ডিভিশন কেন্দ্রকে নির্দেশ দেয়, ‘সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে অযোধ্যাতে ৫ একর জমি দিতে হবে মসজিদ নির্মাণের জন্য।’ অযোধ্যা রায়ের পরে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড ওই রায়ের পুনর্বিবেচনার আর্জিও জানায়নি। যদিও মুসলিম পার্সোনেল ল’ বোর্ড জানিয়ে দেয়, তারা রায়ের পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাবে সুপ্রিম কোর্টে।
এদিকে, এআইএমপিএলবি’র নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি টুইটে লেখেন, ‘বাবরি মসজিদ ওখানেই ছিল এবং থাকবে।’ এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের রায়কেও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন হায়দারাবাদের সাংসদ ওয়াইসি। এদিন তিনি বলেন, ‘আমি জানি রামমন্দিরের এই রায় শীর্ষ আদালত থেকে এসেছে। তবে আমি যতদিন বেঁচে থআকব, ততদিন বাবরি মসজিদের অধ্যায় আমি শেষ হতে দেব না। আমি এই বিষয়ে প্রতিবাদ জানাবো। আইনত এই মামলা শেষ হতে পারে, তবে ঐতিহাসিক ভাবে এই মামলা এখনও চলবে।’ সূত্র : টিওআই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন