শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ভারতের সঙ্গে জোট বেঁধে করোনা ভ্যাকসিন তৈরি করতে চাইছে রাশিয়া

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ আগস্ট, ২০২০, ৩:৩৫ পিএম

বিশ্বের প্রথম করোনা ভ্যাকসিন ‘স্পুটনিক ভি’ উৎপাদন শুরু করেছে রাশিয়া। ‘প্রোডাকশন পার্টনার’ হিসাবে ভারতেও এই ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে চাইছে তারা। বৃহস্পতিবার একটি অনলাইন সাংবাদিক সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন রাশিয়ার ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের (আরডিআইএফ) সিইও কিরিল দিমিত্রিয়েভ।

দিমিত্রিয়েভ বলেন, ‘তারা রাশিয়ার তৈরি স্পুটনিক-ফাইভ করোনা ভ্যাকসিনের উৎপাদন ভারতেও শুরু করতে চান।’ তিনি বলেন, ‘তাদের তৈরি ভ্যাকসিনটির উৎপাদনে আগ্রহ দেখিয়েছে বিশ্বের একাধিক দেশ। লাতিন আমেরিকা, এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশের কাছ থেকে তারা প্রস্তাব পেয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভ্যাকসিনের উৎপাদন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বর্তমানে আমরা ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগের চেষ্টা চালাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি যে তারা গামালেই ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে সক্ষম।’ দিমিত্রিয়েভ জানান, ভারতের সঙ্গে এই অংশীদারিত্ব গড়ে ওঠা খুবই দরকারি। কারণ, ভারতের ওষুধ উৎপাদনকারী সংস্থা থেকে শুরু করে বিজ্ঞানী, সকলের সঙ্গে আমাদের দারুন সম্পর্ক। ওরা আমাদের প্রযুক্তিটা বোঝে। আমাদের সামনে যে বিপুল পরিমাণ চাহিদা রয়েছে, তা পূরণ করতে এই যৌথ উদ্যোগ অবশ্যাম্ভাবী।’

ভ্যাকসিনটি তৈরির প্রথম পর্যায় থেকেই রাশিয়া আন্তর্জাতিক সহযোগিতামূলক নেটওয়ার্ক বজায় রেখে চলতে চাইছে বলে দাবি করেছেন দিমিত্রিয়েভ। তিনি বলেন, ‘আমরা এই ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুধুমাত্র রাশিয়া সীমাবদ্ধ রাখিনি। রাশিয়ার বাইরেও সংযুক্ত আরব আমিরাত, সউদী আরব এবং যতটা সম্ভব ব্রাজিল ও ভারতেও চালিয়ে যেতে আগ্রহী।’ তিনি বলেন, ‘আমরা কমপক্ষে পাঁচটি দেশে ভ্যাকসিনের উৎপাদন করতে চাই। সে ক্ষেত্রে এশিয়া, লাতিন আমেরিকা-সহ ইতালির মতো দেশগুলিতে ভ্যাকসিনের যে বিপুল পরিমাণ চাহিদা রয়েছে, তা পূরণের লক্ষ্য নিয়ে আমরা এগোচ্ছি।’

প্রসঙ্গত, ‘স্পুটনিক ভি’ ভ্যাকসিনটি যৌথ ভাবে তৈরি করছে গামালেই ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার ফর এপিডিমিওলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজিও এবং রাশিয়ান প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয়। রাশিয়ার সেনাবাহিনী এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করেছিল আগেই। গত ১১ আগস্ট সেই ভ্যাকসিনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পুতিন জানান, ‘করোনার প্রথম ভ্যাকসিন তারাই আবিষ্কার করেছেন। এই ভ্যাকসিন করোনার বিরুদ্ধে মানব শরীরের দীর্ঘস্থায়ী প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সক্ষম এবং নিরাপদ।’ তবে রাশিয়ার এই দাবি নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক তৈরি হয়েছে গোটা বিশ্ব জুড়েই।

এ বিষয়ে গামালেই ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার ফর এপিডিমিওলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজির পরিচালক আলেকজান্ডার গিন্সবুর্গ জানান, ২০ হাজারেরও বেশি লোক এই ভ্যাকসিনের ক্লিনিকাল ট্রায়ালগুলিতে অংশ নিয়েছে। তিনি আও জানান, স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন দুটি শট নিয়ে গঠিত যা অ্যাডিনোভাইরাসগুলোর বিভিন্ন সংস্করণ ব্যবহার করে। বিজ্ঞানীরা এর জিনকে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য পরিবর্তন করেছেন। গেমালিয়া ইনস্টিটিউটের ভ্যাকসিনে দুটি মানব অ্যাডিনোভাইরাস সেরোটাইপ ব্যবহার করা হয়েছে। একটি হচ্ছে নাম্বার ৫ নম্বরে (এডি৫) এবং অন্যটি নাম্বার ২৬ (এডি ২৬)। এর ফলে এটি অন্যান্য সম্ভাব্য ভ্যাকিসিন থেকে এগিয়ে রয়েছে। সূত্র: টিওআই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন