কক্সবাজারের চকরিয়ায় মা ও তরুণী মেয়েকে ‘গরু চোর’ আখ্যা দিয়ে রশিতে বেঁধে নির্মমভাবে পিটানোর দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এই ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে ফেসবুকে।
কোমরে রশি বেঁধে ওই দুই নারীকে প্রকাশ্য সড়কে হেটে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে। সেখানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও হারবাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম নিজেই তাদের মারপিট করে বলে অভিযোগ।
শুক্রবার দুপুরে হারবাং পহরচাঁদা এলাকায় মা-মেয়েকে নির্মমভাবে নির্যাতনের এই দৃশ্য ভাইরাল হলে প্রতিবাদের ঝড় শুরু হয়। দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নেটিজেনরা।
জানা যায়, মারপিটের একপর্যায়ে তাদের শারীরিক অবস্থার গুরুতর অবনতি ঘটলে পুলিশ এসে মা ও মেয়েকে উদ্ধার করে চকরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করে। তারা এখনও আশঙ্কামুক্ত নয়। অভিযোগ উঠেছে, বিয়েতে রাজী না হওয়ায় গরু চোরের অপবাদ দিয়ে তাদের উপর নির্যাতন চালান চেয়ারম্যান।
ফেসবুকে মো: সাগর সরদার লিখেছেন, ‘‘এটা খুবই দুঃখজনক কথা। ঘটনা যাই হোক এভাবে প্রহার করা কোনোভাবেই কাম্য নয় আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। অবিলম্বে ঐ মানুষ রুপি জানোয়ারের চেয়ারম্যান পদ থেকে বহিষ্কারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’
হৃদয় মাহামুদ লিখেছেন, ‘‘অসহায় মহিলার মেয়েকে চেয়ারম্যান বিয়ে করতে না পেরে, গরু চুরির অপবাদ দিয়ে মা মেয়েকে জনসম্মুখে পেটানোর পর কোমরে রশি দিয়ে বেঁধে এলাকা ঘুরিয়ে কক্সবাজারের চকোরিয়া উপজেলার হারবাং ইউপি কার্যালয়ে এনে পুনরায় নির্মমভাবে পিটায় মা ও মেয়েকে চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম।এ ঘটনার তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি এই পশুটির।’’
সাকাত লিখেছেন, ‘‘আজ সাধারণ মানুষের মত অসহায় আর এই পৃথিবীতে নেই। সবথেকে বেশি আমাদের বাংলাদেশ সাধারণ মানুষের অনেক নির্যাতিত হচ্ছে আর যদি সঠিক বিচার হতো তাহলে এমন মায়েদের অপমান হতে হতো না আমরাই চেয়ারম্যান প্রতীক দূরত্ব দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’’
আবদুল মোরশেদ লিখেছেন, ‘‘সাধারণ মানুষগুলো কত না অসহায় আজ, ক্ষমতাধরদের কাছে। অপরাধ কী তারা করলো...! না কি চেয়ারম্যান করলো..? চেয়ারম্যান হইলে নবাব হয়ে যায়, ক্ষমতা দেখালো এটাই..! কিন্তু, এই ক্ষমতা চিরদিন থাকবেনা চেয়্যারমেন সাহেব। সত্যি কি ন্যায় বিচার হয় এখন আমাদের এই দেশে...?’’
মোহাম্মাদ আলী লিখেছেন, ‘‘অপরাধ করুক আর না করুক সেটা ভিন্ন বিষয়,, এভাবে মা মেয়েকে লাঞ্চিত করতে পারে না এই অধিকার তার নাই, সেই কথিত চেয়ারম্যান এর শাস্তির আওতায় আনা হোউক এই দাবি জানাচ্ছি।’’
গাসিব আহমেদ লিখেছেন, ‘‘আমরা ভুলে যাচ্ছি যে, একজন নারী হচ্ছেন- একজন মা, একজন কন্যা, একজন বোন ও একজন স্ত্রী। নারীরা আমাদের সমাজ উন্নয়নে রাত দিন সমানতালে কাঁধে কাধ রেখে অংশ নিয়েছে। কাজেই তাদের সম্মান রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। নারীদের সম্ভ্রম রক্ষায় আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। এটিই আমাদের দায়িত্ব, এটিই আমাদের ইতিহাস।’’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন