কক্সবাজারে উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীরা এখন থেকে ইন্টারনেট সুবিধাসহ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবে বলে জানা গেছে । এমনকি এক পরিবারে মোবাইল ফোনের দুটি সিমও রেজিস্ট্রেশন করা যাবে।
তবে রোহিঙ্গা কার্ড দেখিয়ে এ সিম ক্রয় করতে হবে। এতদিন রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও গুরুত্ব বিবেচনায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বৈধ উপায়ে মোবাইল ফোনের সুবিধা পাচ্ছিল না। এখন ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে সরকার।
ক্যাম্পগুলোতে বৈধভাবে মোবাইল ফোন ব্যবহার বন্ধ থাকলেও নানা উপায়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে চলমান বিভিন্ন অপারেটরের সিম অবৈধভাবে ব্যবহার করে আসছিল। এতে করে সরকার একদিকে রাজস্ব হারাচ্ছিল। অন্যদিকে রোহিঙ্গারা ওই সিম ব্যবহার করে নানা অপকর্ম করলেও নিয়ন্ত্রণ কারা যাচ্ছিলনা।
এমনকি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মিয়ানমারের মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে মিয়ানমারে থাকা স্বজনদের সঙ্গে এই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে তারা যোগাযোগ করে আসছিল। এসব অবৈধ উপায়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে মাদক চোরাচালানসহ নানা অপকর্মও হচ্ছিল।
সিমগুলো রেজিস্ট্রেশন না থাকায় মোবাইল ব্যবহার করে অপকর্মকারী রোহিঙ্গাদের আইনের আওতায়ও নেওয়া যাচ্ছিল না। এসব বিবেচনায় মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক কার্যক্রমকে বৈধতা দেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে বলে সংশ্নিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে রোহিঙ্গাদের মোবাইল সিম ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে সভায় জননিরাপত্তা সচিব, পুলিশের আইজি, পররাষ্ট্র সচিব, বিজিবি, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
মিয়ানমার থেকে আসা মোবাইল নেটওয়ার্কের সিগনাল সীমান্ত এলাকার বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ প্রায় ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে এই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে রোহিঙ্গারা নানা ধরনের অপকর্ম করলেও বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের নাগালে পায়না।
এতদিন ধরে বাংলাদেশের নেটওয়ার্ক বা বাংলাদেশের সিম বেচাবিক্রি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিষিদ্ধ থাকলেও রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে নেটওয়ার্ক এবং সিম ব্যবহার করে নানা ধরনের অপকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এসব বিবেচনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাংলাদেশের মোবাইল অপারেটর কোম্পানি গুলোর সিম বেচা-বিক্রি এবং নেটওয়ার্ক চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। সূত্র মতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এসব সিম ক্রতাদের রোহিঙ্গা হিসেবে নিবন্ধিত হবে। এতে করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের নিয়ন্ত্রণে সহজ হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন