দেশের কওমী মাদরাসাগুলোর ডিগ্রি ও মাস্টার্স পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে মাদরাসাগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম এখনই চালু হচ্ছে না। এদিকে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) এবং অন্যান্য পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে দুই মন্ত্রণালয় জোরালো চিন্তা-ভাবনা করলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার মতো সময় আসেনি বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ তথ্য জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়াল মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী এবং সচিবালয় থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আজকে একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে,সেটা হলো কওমী মাদরাসা আপিল করেছিল, তারা ওপরের লেভেলের পরীক্ষাগুলো নিয়ে নিতে চায়। সরকার এতে সায় দিয়েছে। ওদের পরীক্ষাগুলো ডিগ্রি ও মাস্টার্স লেভেলের। জেনারেল কওমী মাদরাসা খুলবে না। ওই কিতাব বিভাগ খোলা বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সরকার কিছু শর্ত দিয়েছে, অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নিতে হবে। কবে থেকে পরীক্ষা নিতে পারবে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা তো তাদের বিষয়। তাদের সুবিধা মতো সময়ে নেবে।
দেশে করোনা ভাইরাস শনাক্তের পর থেকে দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কওমী মাদরাসাগুলোর শিক্ষা কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সময় আসেনি, পরীক্ষার সিদ্ধান্ত দ্রুতই।
স্থগিত থাকা এইচএসসি পরীক্ষা এবং আসন্ন জেএসসি- জেডিসি এবং প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এইচএসসি ও অন্যান্য পরীক্ষা সেটা শিক্ষা মন্ত্রণালয় তারা আলোচনা করছে। তারা দেখবে দেখে দ্রুত (কুইকলি) একটা সিদ্ধান্ত নেবে। রোববারও প্রেসে কথা বলেছেন। তবে স্কুল, কলেজ এখনও খোলার মতো সময় আসছে বলে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে না। কিন্তু পরীক্ষার বিষয়ে ওনারা খুব স্ট্রংলি চিন্তা-ভাবনা করতেছেন, কীভাবে কী করা যায়।
গত এপ্রিলে এইচএসসি এবং আগামী নভেম্বরে অষ্টম ও পঞ্চমের সমাপনী পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। তবে করোনার কারণে এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অষ্টম ও পঞ্চমের আসন্ন সমাপনী পরীক্ষা নিয়ে বিকল্প কিছু ভাবছে সরকার। স্কুলে স্কুলে প্রাথমিক সমাপনী নেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি সার-সংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে, সেই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, না, এটা আমার নলেজের বাইরে।
কয়েক দিন আগে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিও বলেছিলেন, এখনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার মতো পরিস্থিতি আসেনি। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন গত রোববার বলেন, এখনও সেপ্টেম্বরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার মতো পরিস্থিতি হয়নি।
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। কয়েক দফা বাড়িয়ে আগামী ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পাঠদানের ধারাবাহিকতা রাখতে সংসদ টিভি এবং বেতারে ক্লাস পরিচালনা ছাড়াও অনলাইনে পাঠদানের কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন