পাকিস্তান ও চীনের মধ্যে সব ক্ষেত্রেই পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বৃদ্ধির প্রয়োজন বলে মনে করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এই উদ্দেশ্যে সোমবার তিনি চীনা উদ্দ্যেক্তাদেরকে পাকিস্তানে তাদের ব্যবসার শাখা অফিস খোলার জন্য আহ্বান জানান।
সোমবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জ্বালানি, যোগাযোগ, কৃষি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, আর্থিক খাতসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে ব্যবসায়িক উদ্যোগ গ্রহণকারী ১০ শীর্ষস্থানীয় চীনা সংস্থার একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠকের সভাপতিত্বে ইমরান খান বলেন, ‘চীনা ব্যবসায়ী সংস্থাগুলোকে পাকিস্তানে তাদের আঞ্চলিক অফিস প্রতিষ্ঠা করা উচিত।’ পাকিস্তান চীনের সাথে সম্পর্ক জোরদার করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দুই দেশের মানুষের ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদার করা আমাদের সর্বাধিক অগ্রাধিকার।’ তিনি চীনা বিনিয়োগকারীদের আশ্বাস দিয়ে জানান যে, তার সরকার চীনা বিনিয়োগকারীদের প্রতিটি সম্ভাব্য সুবিধা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করবে।
বৈঠকে চীনের পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন (পাওয়ার চায়না), চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ কর্পোরেশন (সিআরবিসি), চায়না গেজুবা (গ্রুপ) পাকিস্তান, চায়না থ্রি গর্জেস সাউথ এশিয়া ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড, চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড, চীনের শিল্প ও বাণিজ্যিক ব্যাংক, চীন মেশিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন এবং চায়না মোবাইল পাকিস্তান লিমিটেডের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের সাথে আরও ছিলেন, পাকিস্তানে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও জিং এবং হাইয়ার সিইও জাভেদ আফ্রিদি।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বৈঠকে ছিলেন, যোগাযোগমন্ত্রী মুরাদ সাইদ, শিল্পমন্ত্রী হামাদ আজহার, পরিকল্পনামন্ত্রী আসাদ উমর, অর্থ উপদেষ্টা ডক্টর আবদুল হাফিজ শেখ, বাণিজ্য উপদেষ্টা আবদুল রাজাক দাউদ, বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান আতিফ আর বোখারী, সিপিইসি অথরিটির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত লেঃ জেনারেল অসীম সলিম বাজওয়া প্রমুখ।
চীনা প্রতিনিধিরা পাকিস্তানের চীনা বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সুবিধার্থে ব্যক্তিগত আগ্রহের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। অংশগ্রহণকারীরা বর্তমান সরকারের বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক নীতিগুলি সম্পর্কে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন, বিশেষ করে ব্যবসা করার সুবিধায় উন্নতি করার ক্ষেত্রে। তারা তাদের বিনিয়োগ আরও প্রসারিত এবং অর্থনীতির বিভিন্ন সেক্টরে আরও ব্যবসায়ের সুযোগ অন্বেষণে প্রতিশ্রুতি পুনর্বিবেচনা করেছে।
এ প্রসঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘নীতিমালা ও বাস্তবায়ন স্তরে প্রবর্তিত বিভিন্ন সংস্কার চীনা ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের আস্থা বৃদ্ধি করেছে এবং পাকিস্তানকে কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিবেশ উন্নয়নের প্রধান অংশীদার হিসাবে দেখছে চীন।’ পরে, বৃক্ষরোপণ অভিযানের সময় তিনি জানান, পাকিস্তানকে একটি ‘বাণিজ্যিক কেন্দ্র’ হিসাবে গড়ে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, চীন পাকিস্তানকে বাণিজ্যের উদীয়মান কেন্দ্র হিসাবে দেখছে। চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছিলেন যে, সিপিসিই দুই ভ্রাতৃত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করবে।’ গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানে পর্যটন বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দিয়েছিলেন এবং সোয়াত উপত্যকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথাও বলেছেন। সূত্র: ডন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন