বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা মেয়াদোত্তীর্ণ কসমেটিকস স্বল্পদামে কিনে তারিখ বদলে আবারো বিপণন করে আসছিল এসপিএস করপোরেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান। আর মেয়াদোত্তীর্ণ এসব কসমেটিকস বিক্রি হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অভিজাত মার্কেটে। গতকাল দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ রেজাউল হায়দার।
মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, সম্প্রতি রাজধানীর ভাটারা এলাকার একটি ভবনে অভিযান চালিয়ে ইয়ার্ডলি ব্র্যান্ডের লোশন, সাবান, পাউডার, বডি স্প্রেসহ প্রায় ১০ কোটি টাকার মেয়াদোত্তীর্ণ কসমেটিস জব্দ করা হয়। এসময় প্রসাধনীর গায়ে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ পরিবর্তনে ব্যবহৃত কেমিক্যাল, কালি ও একটি মেশিন জব্দসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে রয়েছেন- চক্রের প্রধান শংকর মন্ডল (৩৪), হারুন অর রশিদ (৪৫) ও কর্মচারী সবুজ আহমেদ (৩০), মনিরুজ্জামান (২৩), বীরেশ্বর মন্ডল (৩৬)।
সিআইডির ওই কর্মকর্তা বলেন, বৈধ আমদানি লাইসেন্সের মাধ্যমে দুবাইসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা বিশ্বের নামি-দামি ব্র্যান্ডের প্রসাধনী বাংলাদেশে আমদানি করে খোলা বাজারে বিক্রি করে আসছে একাধিক প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে সুধীর মন্ডল ও তার সহযোগীরা এসপিএস করপোরেশনের নামে কোম্পানি খুলে উইপ্রো এন্টারপ্রাইজ ও হ্যানকেল কোম্পানির পণ্য আমদানি করে অভিজাত বিপণিবিতানে সরবরাহ করে আসছেন। আমদানি করা প্রায় সব পণ্যের গায়ে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ লেখা থাকে। সচেতন ক্রেতা তারিখ যাচাই করেই বাড়তি দামে এসব নামি-দামি ব্র্যান্ডের পণ্য কেনেন।
তিনি আরো বলেন, আমদানি করা এসব পণ্যের একটি বড় অংশ বিভিন্ন দোকানে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও অবিক্রিত থেকে যায়। এসব অবিক্রিত মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যগুলো নামমাত্র মূল্যে কিনে নেয় এসপিএস করপোরেশন। এরপর পণ্যগুলোর মেয়াদোত্তীর্ণের সিল বিশেষ প্রক্রিয়ায় মুছে পুনরায় ইচ্ছেমতো বসানো হতো নতুন তারিখ। আর এতে নতুন তারিখসহ মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যগুলোর পুনরায় ঠাঁই হতো বিভিন্ন অভিজাত মার্কেটে। অথচ বিএসটিআইর বিধিমালা ও বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুসারে এসব মেয়াদোত্তীর্ণ কসমেটিকসগুলো বিক্রেতা সরবরাহকারীর কাছে ফেরত পাঠানোর মাধ্যমে স্ব-উদ্যোগে ধ্বংস করে ফেলার কথা। কেননা মেয়াদোত্তীর্ণ বডি লোশন, সাবান, পাউডার কসমেটিকস পণ্য ব্যবহারে ত্বক ও স্বাস্থ্যের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি জানান, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় আদালতের মাধ্যমে তাদের তিনদিনের রিমান্ডে নিয়েছে সিআইডি। এছাড়াও এসপিএস করপোরেশনে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন