বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সোনালি আসর

কবি রবীন্দ্রনাথ এবং শিশুদের নিয়ে লেখা

প্রকাশের সময় : ৮ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আলম শামস
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে সর্বপ্রথম সাহিত্যে নোবেল পুুরস্কার লাভ করেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৯১৩ সালে ইংরেজিতে লেখা গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থর জন্য তিনি এ পুরস্কার লাভ করেন। সে সময়ে তাঁর এ পুরস্কার পাওয়া একটা অবাক করা ঘটনা।
রবীন্দ্রনাথকে বলা হয় কবিদের কবি। তিনি আমাদের জাতীয় সঙ্গীতেরও রচয়িতা। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্যের সকল শাখায়ই কাজ করেছেন সফলভাবে।
রবীন্দ্রনাথ শিশুদের জন্যে প্রচুর লিখেছেন। আমরা তার শিশুকাব্য ছড়া ও কবিতা নিয়ে আলোচনা করব। শিশু, শিশু ভোলানাথ, খাপছড়া, ছড়া ও ছবি, গল্প সল্প কল্পনা, সহজ পাঠ ইত্যাদি অসংখ্য ছড়া ও কবিতা গ্রন্থ তিনি শিশুদের জন্যে রচনা করেছেন।
ছড়াগুলোকে রবীন্দ্রনাথ মেঘের সাথে তুলনা করেছেন। যখন ছোটদের জন্যে লিখেছেন তখন তিনি যেন শিশুর চোখ নিয়েই দেখেছেন। কবি যখন ছোট নদীর কথা তুলে ধরেন তখন তা পাঠ করে শিশুরা নিজ চোখে দেখা নদীটাকেই মনে মনে ধরে নেয়।
পড়তে তা চমৎকার :
‘আমাদের ছোট নদী চলে একে বেকে
বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে।
..............................
কিচিমিচি করে সেথা শালিকের ঝাঁক,
রাতে ওঠে থেকে থেকে শেয়ালের হাঁক। (আমাদের ছোট নদী, সহজ পাঠ)।
প্রকৃতি দরদী কবি প্রকৃতির নানান বিষয়কে তুলে এনেছেন শিশুদের ছড়া কবিতায়। আষাঢ় মাসের মেঘ দেখে লিখেছেন-
নীল নবঘনে আষাঢ় গগনে
তিল ঠাঁই আর নাহিরে
ওগো, আজ তোরা যাসনে ঘরের বাহিরে। (আষাঢ়, ক্ষণিকা)
কড়ি ও কোমল গ্রন্থে বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর সোনার তরী, দুই পাখি শিশুদের জন্যে অসাধারণ সৃষ্টি। বৃষ্টি, নদী, চাঁদ, ফুল, পাখি এসব কিছুই শিশুদের দারুণ প্রিয়। আর এগুলো নিয়ে যখন ছড়া ও কবিতা হয় তখন তা আরো উপভোগ্য। কবিতায়ঃ
দিনের আলো নিভে এল
সূর্যি ডোবে ডোবে।
আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে
চাঁদের লোভে লোভে।
.................
..................
কোন ছেলেরে ঘুম পাড়াতে
কে গাহিল গান,
বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর
নদেয় এল বান। (বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর)
রবীন্দ্রনাথ ছিলেন একজন সচেতন খেয়ালি মনের মানুষ। বিচিত্র্য রকম সাধ, ইচ্ছে ছিলো তার মনের মধ্যে। ছোটদের মতো তার মনটাও যখন যা দেখেছেন তাই করতে চেয়েছেন, হতে চেয়েছেন।
কবির ভাষায়:
যখন যেমন মনে করি
তাই হতে পাই যদি,
আমি তবে এক্খনি হই
ইচ্ছামতী নদী।
অথবা
মা যদি হও রাজি
বড়ো হলে আমি হব
খেয়াঘাটের মাঝি (মাঝি, শিশু)

শিশুদের কাছে মা অতি প্রিয় একটি শব্দ। সবকিছু যদি তাকে দাও, তারপরও সে মাকে তালাশ করবে। মা যেন তার থাকতেই হবে। তাই মাকে নিয়েও রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন অনেক ছড়া, কবিতা।
মেঘের মধ্যে মা গো যারা থাকে
তারা আমায় ডাকে, আমায় ডাকে।
..................
আমি বলি, মা যে আমার ঘরে
..................
তারে ছেড়ে থাকব কেমন করে।
রবীন্দ্রনাথ যখন ছোটদের জন্যে লিখেছেন, তখন তিনি মনে প্রাণে নিজেই ছোট্ট শিশু বনে গেছেন। শিশুদের চাওয়া পাওয়া, আধো আধো কথা বলা তাই তার কবিতায় সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে।
তিনি ১৮৬১ সালের ৭ মে বাংলা ২৫ বৈশাখ, ১২৬৮ বঙ্গাব্দ কলকাতার বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। এবং প্রায় ৮০ বছর বয়সে ১৯৪১ সালের ৭ অগাস্ট মৃত্যুবরণ করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন