যৌতুক হিসেবে বাবার বাড়ি শ্বশুরের নামে লিখে না দেয়ায় নার্গিস খাতুন (৩০) নামে এক গৃহবধূকে শারীরিক নির্যাতনের পর বটি দা দিয়ে মাথার চুল কেটে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত অবস্থায় ওই গৃহবধূকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত সোমবার দুপুরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নার্গিস খাতুন শ্বশুর ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন। এ সময় তার পাশে স্বামী শফিকুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন। নার্গিস খাতুন উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়া ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের ইব্রাহিমের মেয়ে ও একই গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী। এ দম্পতি অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ১১ বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন তার স্বামী। স্বামী শফিকুলের ইচ্ছা না থাকলেও শ্বশুর হাবিবুর রহমান, ভাসুর জামাল ও শাহাদত যৌতুকের জন্য গৃহবধূ ও তার পরিবারকে চাপ প্রয়োগ করে। যৌতুক দিতে অস্বীকার করায় প্রায়ই তাকে নির্যাতন সইতে হতো। গত রোববার রাতে যৌতুক হিসাবে বাবার বাড়িটি লিখে দেবার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন শ্বশুরসহ অন্য স্বজনরা।
গৃহবধু নার্গিস অস্বীকার করায় শ্বশুর হবিবর রহমান ও দুই জাসহ বাড়ির অন্যান্যরা তাকে মারপিট করে। একপর্যায়ে বঁটি দা দিয়ে নার্গিসের চুল কেটে দেয়া হয়। নারগিসের স্বামী শফিকুল ইসলাম বলেন, ভালোবেসে নিজের পছন্দে বিয়ে করার কারণেই তার বাবা ক্ষুব্ধ। এ কারণে আমার স্ত্রীর উপর প্রায়ই নির্যাতন চালায় বাবাসহ পরিবারের অন্যান্যরা।
এ বিষয়ে উধুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, নার্গিসের শ্বশুরবাড়ির পাশে বাবা ইব্রাহিমের একটি বাড়ি রয়েছে। যৌতুক হিসেবে সেটি লিখে দেয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই চাপ প্রয়োগ করছে শ্বশুর হাবিবুর রহমান। বাড়িটি লিখে না দেয়ায় মাঝে মধ্যেই নার্গিস ও তার স্বামী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এমনকি নিজের ছেলের বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলাও দায়ের করেছিলেন পিতা হাবিবুর রহমান। এসব বিষয় নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু হাবিবুর কোনো বিচার মানেন না। এ বিষয়ে উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক কুমার দাস বলেন, আমরা গৃহবধূ নির্যাতনের বিষয়টি জানতে পেরেছি। তবে এখন পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। ওই গৃহবধূ হাসপাতালে রয়েছেন বলে জেনেছি। তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে এসে অভিযোগ করলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত মামলার প্রস্তুতি চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন