শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

অভিনব পন্থায় মাদক পাচার

কলারোয়া (সাতক্ষীরা) উপজেলা সংবাদদাতা: | প্রকাশের সময় : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

অভিনব পন্থায় কলারোয়া ও সংলগ্ন সীমান্ত পথে ইয়াবা ফেনসিডিলসহ কোটি কোটি টাকার মাদক দ্রব্য পাচার হচ্ছে। এই মাদকের কবলে পড়ে দেশের যুব সমাজ বিপথগামী হয়ে পড়ায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির গুরুতর অবনতিসহ পারিবারিককলহ আশঙ্কাজনক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জানা গেছে, কলারোয়ার প্রায় ১৭ কিলোমিটার সীমান্ত পথে এসব পাচার হয়ে আসছে। কলারোয়া সীমান্তে এবং ওপারে ভারতের পশ্চিম বঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার স্বরুপনগর থানার বিস্তীর্ণ সীমান্ত জনবসতিপূর্ণ। এরমধ্যে কলারোয়া উপজেলার কেড়াগাছির বিপরীতে ভারতের আমুদিয়া, নিত্যানন্দকাটি ও তারালি গ্রাম, দক্ষিণ ভাদয়ালীর বিপরীতে ভারতের হাকিমপুর গ্রাম, উত্তর ভাদিয়ালীর বিপরীতে ভারতের দরকান্দা গ্রাম, রাজপুরের বিপরীতে ভারতের পদ্মবিল গ্রাম, কলারোয়ার চান্দা ও বড়ালীর বিপরীতে ভারতের আশশিকড়ী গ্রাম অবস্থিত। এ গ্রাম গুলো ঘন জনবসতি ও ঝোপ জঙ্গলে ভরা গ্রামগুলোর নো-ম্যানস ল্যান্ড এলাকা।
এরমধ্যে কলারোয়ার চারাবাড়ি ও ভারতের আমুদিয়ার এমন অবস্থান যে কোন বাড়ি বাংলাদেশের আর কোন বাড়ি ভারতের তা বহিরাগত মানুষের পক্ষে বোঝা একেবারে অসম্ভব। আর কে চোরাচালানী কে সাধারণ নিরীহ মানুষ তা আচ করা আরো কঠিন। ঝোপ, জঙ্গল আর ঘরবাড়ির এই অবস্থানে মাদক চোরাচালানী, পণ্য লুকিয়ে রাখা খুবই সহজ। আবার কলারোয়া সীমান্তের ওপারে ভারতীয় গ্রামগুলোতে গড়ে উঠেছে নকল ফেনসিডিল তৈরির কারখানা। এসব কারখানার মালিকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা পেয়ে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ফেনসিডিল পাচারে ব্যপক সহায়তা দিয়ে থাকে বলে সীমান্ত সূত্র জানায়।
এই সুযোগে সব ধরণের মাদক পাচারের অবাধ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দক্ষিণপশ্চিম সীমান্তে কলারোয়া মাদক পাচারের ট্রানজিট পয়েণ্টে পরিণত হয়েছে। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে রাতের আঁধারে এবং বর্ষার ভিতরে ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ মাদক পাচারে ধুম পড়ে যায়। সীমান্ত পথে পাচার করে আনা মাদক রাতে সংশ্লিষ্ট গ্রামগুলোতে অবস্থানরত মোটর সাইকেল, ইজিবাইক, থ্রি-হইলারের বডিতে লুকিয়ে রাখা হয়।
আবার বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধির পোষাকধারী কতিপয় ব্যাক্তি ব্যাগে বা গাড়ীর বডিতে ইয়াবা নিয়ে দেশের অভ্যান্তরে প্রবেশ করছে। আর ইয়াবা জাতীয় মাদক গুলো হাট বাজার করা প্যাকেটে, কেউবা বডিতে লুকিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আবার সীমান্তে বিভিন্ন কোম্পানীর ওষুধ ও পণ্য সরবরাহে আগত ডেলীভারী ভ্যানে মাদক দ্রব্য বহন করে নিয়ে যাচ্ছে। আবার সীমান্ত থেকে দিনের বেলা ভদ্রবেশীরা আত্মীয় বাড়ি ফেরার নামে মাইক্রো/প্রাইভেটে ফেনসিডিলসহ মাদক দ্রব্য বহন করে নিয়ে যাচ্ছে। মাদকবাহী যান সীমান্ত এলাকা অতিক্রমের সময় রাস্তার মোড়ে মোড়ে পাহারা বসানো হয়। পাহারাদারের সঙ্কেত মোতাবেক মাদকবাহী যান গুলো চলাচল করে এবং প্রয়োজনে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। মোবাইলের মাধ্যমে সবুজ সংকেত পাওয়ার পরে মাদকবাহি গাড়িগুলো সংশ্লিষ্ট ফাড়ি বা থানা এলাকায় প্রবেশ বা এলাকা অতিক্রম করে বলে সূত্র জানায়।
সীমান্ত পথে বেপরোয়া ভাবে প্রবেশে দেশে মাদক দ্রব্য সহজলভ্য হয়ে উঠেছে। সহজলভ্য মাদকে দেশের তরুণ ও যুবসমাজ নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়ছে। নেশার পয়সা যোগাতে তরুণ ও যুবকরা নানা প্রকার অপরাধে জড়িয়ে পড়ায় আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন