শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

দুঃসহ তাপ প্রবাহের মধ্যে লঘুচাপের প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে প্রবল বর্ষণ

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১:১১ পিএম

আশ্বিনে শরতে তাপ প্রবাহের মধ্যে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘু চাপের প্রভাবে শেষরাতের প্রবল বর্ষণে দক্ষিণাঞ্চলে কিছুটা স্বস্তি এলেও অব্যাহত বজ্রপাতে জনজীবনে আতংকও ছিল ব্যাপক। তবে তাপমাত্রার পারদ খুব একটা নামেনি। রবিবার সকাল ৪.১০টা থেকে সাড়ে ৫টার মধ্যে বরিশালে ৭২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড গড়লেও টানা দেড় ঘন্টার বিকট শব্দের বজ্রপাতে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ ছিল যথেষ্ঠ আতংকে। যদিও গত ২৪ ঘন্টায় সারা দেশের সর্বাচ্চে এ বৃষ্টিপাত ছিল কাংখিত। এসময়ে পটুয়াখালীতে ৫২ ও কুয়াকাটা সংলগ্ন কলাপাড়াতেও ৪০ মিলি বৃষ্টি হয়েছে। সৃষ্ট লঘুচাপটি পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ঘণিভ’ত হতে পারে বলে আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে।
আবহাওয়া বিভাগের মতে, মৌসুমী বায়ুর অক্ষ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। যার একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগরে বিস্তৃত। মৌসুমী বায়ু দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
আবহাওয়া বিভাগের দীর্ঘ মেয়াদী বুলেটিনে চলতি মাসে বরিশাল অঞ্চলে ২৮৫ থেকে সাড়ে ৩শ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের কথা বলা হলেও রবিবার শেষরাতের প্রবল বর্ষন মিলিয়ে মাসের প্রথম কুড়ি দিনে ১শ মিলিমিটারের বেশ বৃষ্টি হয়নি। এরমধ্যে মাসের প্রথম সপ্তাহে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সর্বমোট ২.৬ মিলিমিটার। তবে আবহাওয়া বিভাগ থেকে আগামী তিনদিন বরিশাল সহ উপক’লভাগে মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষনের কথা জানান হয়েছে।
রবিবার শেষ রাতের প্রবল বর্ষনে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন যথেষ্ঠ বিপর্যস্ত হয়ে পরে। বরিশাল মহানগরীর রাস্তঘাটে পুনরায় পানি জমে গেছে। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও অনেক রাস্তায় পানি আটকে যাওয়ায় স্বাভাবিক যান চলাচল যথেষ্ঠ ব্যহত হয়। টানা তাপ প্রবাহের মধ্যে এ বৃষ্টি রোপা আমন সহ আগাম শীতকালীন শাক-সবজির জন্য যথেষ্ঠ ইতিবাচক ফল দেবে বলে আশা করছেন কৃষিবীদগন।
তবে গত সপ্তাহখাকের অব্যাহত তাপ প্রবাহে জনজীবন ছিল বিপন্ন। শণিবার ভোলায় তাপমাত্রার পারদ ৩৬.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াসে উঠে যায়। বরিশালে তাপমাত্রা ছিল ৩৬.১ ডিগ্রী। রবিবার শেষরাতের প্রবল বর্ষনের পরেও সকাল ৬ টায় তাপমাত্রা ছিল ২৬ ডিগ্রীর ওপরে। যা আগেরদিন একই সময়ে ছিল ২৯ ডিগ্রী সেলসিয়য়াস।
এবার ভরা বর্ষা মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলে স্বাভাবিক বৃষ্টির অভাব ছিল। আবহাওয়া বিভাগের হিসেবনুযায়ী জুলাই মাসে সারা দেশে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমান স্বাভাবিকের চেয়ে ১১.৩% বেশী হলেও বরিশাল অঞ্চলে তা ছিল ১৫.৬% কম। জুন মাসেও সারা দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ২% বেশী বৃষ্টি হলেও বরিশাল অঞ্চলে তা ছিল ০.৬% কম। তবে গত মাসে ভাদ্রের বড় অমাবশ্যায় ভর করে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারনে বরিশাল অঞ্চলে আগষ্ট মাসে স্বাভাবিক ৪৩৩ মিলিমিটারের স্থলে ৫১২ মিলি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। যা ছিল স্বাভাবিকের ১৮% বেশী।
এমনকি এবার আমনের বীজতলা তৈরীর মুল সময়টিতেই স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাতের কারনে কৃষকদের যথেষ্ঠ বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। বৃষ্টির অভাবে আউশের উৎপাদন পর্যন্ত ব্যাহত হয়। সারা দেশে আউশের আবাদ ও উৎপাদনের ২০-২৫%-ই দক্ষিণাঞ্চলে হয়ে থাকে। কিন্তু সে আউশ যখন কৃষকের ঘরে তোলার কথা এবং রোপা আমনের মূল সময়টিতে ভাদ্রের প্রবল বর্ষনের সাথে ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ারের প্লাবনে এসব ফসল প্লাবিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন