বরগুনার রিফাত শরিফ হত্যার বিচারের মধ্যে দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে প্রথম কোন ‘কিশোর গ্যাং’এর বিচার প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ সম্পন্ন হল বুধবার। বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ মোঃ আছাদুজ্জমান বুধবার দুপুরে রিফাত হত্যা মামরার রায়ে স্ত্রী মিন্নি সহ ৬ আসামীকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসি সহ ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন।
দেশ কাঁপানো এ লোমহর্ষক ও চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের রায় নিয়ে ইতোমধ্যে বরগুনা সহ দক্ষিণাঞ্চলে কিছু বিতর্ক সৃষ্টি হলেও তা হয়ত চুড়ান্ত নিস্পত্তি হবে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে। কিন্তু এ রায়ের মাধ্যমে সারা দেশের মত দক্ষিণাঞ্চলেও অপ্রতিরোধ্য কিশোর গ্যাংদের প্রথমবারের মত বিচারের আওতায় আনায় তাদের কর্মকান্ডে স্থবিরতা আসতে পারে বলে আশা করছেন ওয়াকিবাহল মহল। তবে আইনÑশৃংখলা বাহিনী যদি অবিলেম্ব কিশোর গ্যাংগুলোর ব্যপারে কঠোর মনোভাব পোষন না করে তবে, ভবিষ্যতে তাদের লাগাম কতটা ধরে রাখা যাবে তা নিয়েও সংশয় রয়েছে ওয়াকিবাহাল মহলে।
গত কয়েকবছর ধরে রাজনৈতিক পরিচয়বিহীন কিশোর গ্যাং সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আইন-শৃংখলা বাহিনী এতদিন এদের কর্মকান্ড খুব একটা আমলে না নিলেও ইতোমধ্যে এসব কিশোর গ্যাং সমাজের জন্য বিষবৃক্ষ হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন সমাজ বিজ্ঞানীগন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধীক শিক্ষক,সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সহ বুদ্ধিজীবীগন জানিয়েছেন, ‘দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইতোপূর্বে ছেচকে মাস্তানি দিয়ে এসব কিশোর গ্যাংদের উৎপত্তি শুরু হলেও ইতোমধ্যে তারা খুন, রাহাজানি ও ধর্ষনের মত জঘণ্য অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। ফলে ইতোমধ্যে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে কিশোর গ্যাং সমাজের জন্য দুষ্ট ক্ষতে পরিনত হয়েছে। অবিলম্বে এদের কঠোরভাবে দমন করতে না পারলে রিফাত শরিফের মত আরো অনেককেই একই ভাগ্যবরন করতে হতে পারে বলেও শংকা প্রকাশ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওয়াকিবাহল মহল
বুধবার বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ মোঃ আছাদুজ্জামান রিফাত শরিফ হত্যা মামলার রায়ে আসামী কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আঁকন(২১), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত(১৯), রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিটক হৃদয়(২২) এবং মোঃ হাসান ছাড়াও নিহত রিফাত শরিফের স্ত্রী মিন্নীকেও মৃত্যুদন্ড প্রদান করেছে। মিন্নি সহ অন্যসব আসামীদের আইনজীবীগন রায়ে সংক্ষুব্ধ বলে জানিয়েছেন। মিন্নির বাবা রায়ে বিষ্ময়ে হতবাক বলে যতদ্রæত সম্ভব আপীল করার কথাও জানিয়েছেন। গতবছর ১৯ জুলাই বরগুনা শহরে প্রকাশ্য দিবালকে স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার পুত্রের আশির্বাদপুষ্ট ‘নয়ন বন্ড’র নেতৃত্বে কিশোর গ্যাং গ্রæপ স্থানীয় কলেজ ছাত্র রিফাত শরিফকে কুপিয়ে হত্যা করে। ঐ হত্যা মামলায় রিফাতের পিতার দায়ের করা মামলায় স্ত্রী মিন্নি ১ নম্বর স্বাক্ষী থাকলেও পরে তাকে পুলিশ ৭ নম্বর আসামী করে চার্জশীট দাখিল করে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন