নাটোরের সিংড়ায় পানির গতিরোধ বন্ধ করে অবৈধ সৌঁতিজালের কৃত্রিম বন্যায় আত্রাই ও বারনই নদীর দু’ধার সহ সিংড়া পৌর এলাকার অধিকাংশ ওয়ার্ডের ঘর-বাড়ি সহ প্রায় তিন হাজার হেক্টর রোপা আমন এবং ৩২’শ হেক্টর জমির সবজি ক্ষেত সহ মাছের ঘের ও ছোট-বড় প্রায় দেড় হাজার পুকুর কৃতিম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন লক্ষাধিক পরিবার। অবৈধ সৌঁতিজালের কৃত্রিম বন্যায় পৌর এলাকার শোলাকুড়া ও তাপুর ইউপির রাখালগাছা সড়ক ভেঙ্গে গেছে। সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতি প্রায় এক’শ কোটি টাকা। অভিযোগের তীর স্থানীয় আ’লীগ নেতাদের দিকে।
উপজেলা কৃষি ও মৎস্য অফিস জানিয়েছে কৃতিম বন্যায় তিন হাজার হেক্টর রোপা আমন সহ মাসকালাই ২ হেক্টর ও ৩০ হেক্টর জমির সবজি ক্ষতিগ্রস্ত। এছাড়াও বন্যায় ভেসে প্রায় দেড় হাজার পুকুর। সিংড়া পৌরসভার মেয়র প্রার্থী গোলাম মহিউদ্দিন টিপু জানান,অকাল বন্যায় পৌরবাসীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। সরকারের পাশাপাশি যার যার সামর্থ অনুযায়ী এগিয়ে আসতে হবে। পৌর মেয়র মো: জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, বন্যার কারণে পৌর এলাকার মানুষ পানিবন্দি। আমরা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। সেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন। বিভিন্ন স্থানে নিজ অর্থায়নে বালির বস্তা সরবরাহ করা হচ্ছে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, উপকূলীয় এলাকার মত চলনবিলের মানুষেরাও বন্যা কবলিত। প্রতি বছর এলাকার মানুষদের অনেক দূর্ভোগ পোহাতে হয়। দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় উপজেলার সকল সৌঁতি উচ্ছেদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশাসন কাজ করছে। সাংবাদিক এসএম রাজু আহমেদ জানান, রাস্তা-ঘাট সহ সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতি একশ’ কোটি টাকা। সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান, নতুন করে বন্যায় প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ও মাসকালাই সহ ৩২ হেক্টর সবজি পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ ওয়ালিউল্লাহ জানান, দ্বিতীয় দফা বন্যায় কমপক্ষে ১ হাজার ৩০০ টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। বন্যা কবলিত মানুষের অভিযোগ স্থানীয় আ’লীগ নেতারা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে অবৈধ সৌঁতিজালের মৌখিক অনুমতি দিয়েছেন। সিংড়া উপজেলা নির্বাহি অফিসার ( ইউএনও ) নাসরিন বানু জানান, বন্যা পরিস্থিতি সার্বিক খোঁজ-খবর নিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে। পানিবন্দি মানুষগুলো যাতে কষ্ট না পায় সেজন্য ২৫টি আশ্রয় কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৮৮০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। নাটোরের জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন সদা প্রস্তুত রয়েছেন। সার্বক্ষণিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মনিটরিং করা হচ্ছে। ইউএনও সহ সরকারি কর্মকর্তাদের বন্যা পরিস্থিতির খোঁজ-খবর রাখতে বলা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন