মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

রাসুল (সা.)এর জ্ঞানের সামান্য অংশই পৃথিবীর সকল জ্ঞান জুমার খুৎবার বয়ানে পেশ ইমাম

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ অক্টোবর, ২০২০, ৩:১১ পিএম

আল্লাহ তা’আলা রাসুল (সা.)কে তার জন্মের পূর্ব থেকে জান্নাত পর্যন্ত সর্বোচ্চ মর্যাদা দিয়েছেন। আল্লাহ তা’আলা কুরআনে ইরশাদ করেছেন, আমি আপনার আলোচনাকে সুউচ্চ করেছি। পৃথিবীর সকল জ্ঞান রাসুল (সা.) এর জ্ঞানের সামান্য অংশ মাত্র। আজ রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদে জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমামরা এসব কথা বলেন। বৈরি আবহাওয়ার মাঝেও বিভিন্ন মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রচুর মুসল্লির সমাগম ঘটে। নগরীর মহাখালীস্থ গাউছুল আজম কমপ্লেক্স মসজিদেও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রচুর মুসল্লির সমাগম ঘটে।

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মুহিউদ্দীন কাসেম জুমার বয়ানে বলেন, আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে কারীমে ইরশাদ করেছেন “সম্পদ ও সন্তান দুনিয়ার জীবনের সৌন্দর্য।” তবে এই সন্তান যাতে করে সু-সন্তান হয় সে বিষয়ে সকলকে সচেষ্ট হতে হবে। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবারবর্গকে রক্ষা কর সেই আগুন থেকে, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর। (সূরা তাহরীম (৬৬) : ৬)
সুতরাং সন্তানদেরকে সু-সন্তান হিসেবে গড়ে তুলে তাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাচানো পিতা মাতার দায়িত্ব। কারণ সন্তান যদি কু-সন্তান হয় তাহলে এর বোঝা দুনিয়া এবং আখেরাতে পিতা মাতাকেই বহন করতে হবে। সন্তানদের সর্ব প্রথম তাওহীদের শিক্ষা কুরআন ও সুন্নাহের শিক্ষা দিতে হবে ৷ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন , তোমরা তোমাদের শিশুদের সাত বছর বয়সে সালাতের তালীম দাও। আর যখন দশ বছর হয়, তখন তোমরা তাদের সালাত আদায় না করার কারণে প্রহার কর। আর তোমরা তাদের বিছানা আলাদা করে দাও।” আল্লাহ আমাদের সন্তানদের ব্যাপারে যতœবান হওয়ার তৌফিক দান করুন।

ঢাকার ডেমরার দারুননাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসা মসজিদে আজ জুমার বয়ানে পেশ ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ ফরিদ বলেন, আল্লাহ তা’আলা রাসুল (সা.) কে জন্মের পূর্ব থেকে জান্নাত পর্যন্ত সর্বোচ্চ মর্যাদা দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ এরশাদ করেছেন, আমি আপনার আলোচনাকে সুউচ্চ করেছি। নিশ্চয়ই আপনি মহান চরিত্রের ওপর অধিষ্ঠিত। আযান, একামত, নামাজসহ প্রায় সকল ক্ষেত্রেই আল্লাহর নামের সাথে নবীজীর নামের স্মরণ রয়েছে। আর রাসুল (সা.) আচরণে পৃথিবীবাসী প্রভাবিত হয়েছে। এটাই নবীজীর চারিত্রিক মাধুর্য্য। আল্লাহ তা’আলা প্রতিটি জীবের জন্য নবীজীকে রহমাত হিসেবে প্রেরণ করেছেন। হাউজে কাওসারের মহান নেয়ামত তাঁকেই দান করেছেন। সাফাতে কোবরার একমাত্র অধিকারী তাঁকেই বানিয়েছেন। কুরআনের কোথাও অন্য নবীদের মতো নাম ধরে না ডেকে আল্লাহ তাঁকে লকব দিয়ে ডেকেছেন। পেশ ইমাম বলেন, পৃথিবীর সকল জ্ঞান রাসুলের (সা.) জ্ঞানেরই সামান্য অংশ মাত্র। কেননা শুরু এবং শেষের জ্ঞান আল্লাহ তাঁকেই দান করেছেন। আল্লাহ নবীজীকে প্রথমেই সৃষ্টি করেছেন এবং গায়েবের খবর সব চেয়ে বেশি তাঁকেই জানিয়েছেন।

রাজধানীর ইসলামবাগ বড় মসজিদের খতীব শাইখুল হাদীস মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী জুমার বয়ানে বলছেন, 'সালাম' রাসূলুল্লাহ (সা.) এর একটি শ্বাসত সুন্নত। এটিকে জঙ্গিবাদের উপসর্গ বলা কিংবা অবজ্ঞা-অবহেলা করা নিরেট মূর্খতা ছাড়া আর কিছুই নয়। ইসলামপূর্ব যুগে আরবরা পরস্পরের সাক্ষাতের সময় একে অপরকে 'হাইয়াকাল্লাহ' (আল্লাহ তোমাকে জীবিত রাখুন) এ জাতিয় সম্ভাষণে সালাম করতো। ইসলাম এ পদ্ধতি পরিবর্তন করে তদস্থলে "আসসালামু আলাইকুম" বলার রীতি চালু করেছে। যার অর্থ-তুমি সর্বপ্রকার বিপদাপদ থেকে নিরাপদ থাকো। ইবনে-আরাবী 'আহকামুল কুরআন'গ্রন্থে বলেন, সালাম শব্দটি আল্লাহর গুণবাচক নামসমূহের অন্যতম। তাই 'আসসালামু আলাইকুম'এর অর্থ হচ্ছে আল্লাহ তোমাদের সংরক্ষক। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন "তোমাদের জন্য যখন কেউ দোয়া করে তোমারাও তখন তার জন্য দোয়া করো তার চেয়েও উত্তম দোয়া,অথবা তারই মত হুবহু দোয়া" (সূরা নিসা,আয়াত-৮৬) জান্নাতবাসীদেরকেও জান্নাতে আল্লাহ ও ফেরেশতাদের পক্ষ থেকে সালাম দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হবে মর্মে কুরআনে ঘোষণা এসেছে।
রাজধানীর গুলিস্তান পীর ইয়ামেনী জামে মসজিদের খতিব মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, হযরত মানসুর বিন মুতামির রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, "সর্বদা সত্য অনুসন্ধানে মগ্ন থাকবে, যদিও তোমরা এতে বাহ্যত ক্ষতি দেখতে পাও। বস্তুত এতে মুক্তি নিহিত।"( আত তারগীব ওয়াত তারহীব)।

তিনি আরো বলেন, অভিজ্ঞতার আলোকে একথা প্রমাণিত যে, মিথ্যুককে মানুষ ভালো চোখে দেখে না এবং তার ওপর ভরসা করে না। এ কারণে সাহাবায়ে কেরাম বলেন, রাসুলের নিকট মিথ্যার চেয়ে অধিক অপছন্দের আর কিছু ছিল না। (আত তারগিব ওয়াত তারহীব)। আল্লাহ তা’আলা আমাদের সবাইকে মিথ্যা পরিহার করার এবং সত্য কথা বলার তৌফিক দান করেন। আমীন !

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন